শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

কোরবানির গরু বিক্রি নিয়ে চিন্তায় খামারিরা

আপডেট : ১৩ জুলাই ২০২০, ০৭:০১

করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে কোরবানির গরু বিক্রি নিয়ে চিন্তায় আছেন সিরাজগঞ্জের খামারিরা। শাহজাদপুরের রেশম বাড়ি গ্রামের খামারি আলতাফ হোসেন জানান, কোরবানির জন্য প্রায় ১০ লাখ টাকা খরচ করে আমার খামারে ছয়টি ষাঁড় প্রস্তুত করেছি। করোনার মধ্যে এসব গরু কোথায় বিক্রি করব বা ক্রেতা পাব কি না তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। প্রতি গরুর পেছনে প্রতিদিন প্রায় ৩০০-৪০০ টাকা খরচ হচ্ছে।

উল্লাপাড়ার পশ্চিমপাড়ার খামারি রিমন মন্ডল জানান, প্রতি বছর ঢাকা-চট্টগ্রামের পার্টিরা সরাসরি খামার থেকে গরু নিয়ে যায়। এ বছর ১০-১২টি গরু নেওয়ার কথা জানিয়েছেন তারা। করোনার কারণে শেষ পর্যন্ত তারা আসবেন কি না তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আখতারুজ্জামান ভুঁইয়া জানান, করোনা নিয়ে খামারি বা বিক্রেতাদের মধ্যে উদ্বেগের বিষয়টি যৌক্তিক। ক্রেতা ঠিকমতো না পেলে খামারিরা হতাশ হয়ে পড়বে। তার পরও স্বাস্থ্যবিধি মেনে জেলার বিভিন্ন স্থানে গরু-ছাগলের হাট পরিচালনার জন্য জেলা ও উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও প্রশাসনের মাধ্যমে সচেতন করা হচ্ছে।

খামারভর্তি গরু

সৈয়দপুর (নীলফামারী) সংবাদদাতা জানান, খামার গরু দিয়ে বোঝাই। কিন্তু করোনার কারণে বেচাকেনা নিয়ে কপালে চিন্তার ভাঁজ খামারিদের। করোনাকালে কেমন হবে গরুর বেচাবিক্রি, দাম কেমন পাওয়া যাবে—এসব চিন্তায় পড়েছেন নীলফামারীর খামারিরা। সৈয়দপুরের বাঁশবাড়ির ইউসুফ ডেইরি ফার্ম ও হূষ্টপুষ্ট খামারের মালিক রোটারিয়ান জামিল আশরাফ মিন্টু জানান, কয়েক মাস আগে ছোট্ট গরুগুলোকে স্থানীয় হাট থেকে কিনে প্রাকৃতিক উপায়ে খাইয়ে হূষ্টপুষ্ট করেছি। এখানে রয়েছে দেশি, শংকর, শাহিওয়াল ও ফ্রিজিয়ান জাতের ষাঁড়। কিন্তু এবার করোনাকালে গরু কেনাবেচার কি হবে তা নিয়ে চিন্তায় রয়েছেন তিনি।

গরু নিয়ে বিপাকে রাজারহাটের প্রান্তিক খামারিরা

রাজারহাট (কুড়িগ্রাম) সংবাদদাতা জানান, এবার গরু নিয়ে বিপাকে আছেন রাজারহাট উপজেলার প্রান্তিক গো-খামারিরা। গো-খাদ্যের চড়া দাম আর বিভিন্ন সংস্থা থেকে ঋণ নিয়ে গড়া এসব খামারের মালিকরা বলছেন, লোকসানের আশঙ্কা রয়েছে তাদের।

ঈদুল আজহাকে টার্গেট করে ১২টি গরু নিয়ে খামার গড়েছেন ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউনিয়নের নাকেন্দা গ্রামের কপিল উদ্দিন বকসী। তার ১ লাখ ৫০ হাজার মূল্যের একটি গরু মারা গেছে। বর্তমান ১১টি গরু খামারে আছে। ৯০/৯৫ হাজার টাকায় কেনা এসব গরু। বাড়তি লাভের আশায় প্রতিপালন করলেও করোনা পরিস্থিতির কারণে ন্যায্য মূল্য পাওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় দিন কাটছে কপিল উদ্দিন বকসীর। শুধু কপিল উদ্দিন নয়, বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের নুরুল আমিন, ইছাহাক আলী ও আলতাফ হোসেনের মতো প্রান্তিক গো-খামারিদের একই অবস্থা।

রাজারহাট এলাকার শাওন মিয়া, আ. জলিল, শফিকুলসহ বেশ কয়েক জন প্রান্তিক খামারি বলেন, গত বছর এ সময় অনেক ব্যাপারী এসে গরুর যে দাম বলছে তাতে কেনার চেয়ে ৫/১০ হাজার টাক কম। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে গরুর হাট চালু করাসহ ক্ষুদ্র প্রান্তিক এসব গো-খামারিদের রক্ষায় সরকারি সহযোগিতা প্রদানের আহ্বান জানিয়েছেন খামারিরা।