শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

পঞ্চগড়ে চায়ের তৃতীয় নিলামকেন্দ্র চালুর দাবি

আপডেট : ১৪ জুলাই ২০২০, ০৫:০২

কাঁচা চা-পাতার বর্তমান মূল্যে উত্পাদন খরচ উঠছে না পঞ্চগড়ের চা-চাষিদের। সে কারণে তারা পঞ্চগড়ে একটি নিলাম মার্কেট চালুর দাবি জানিয়েছেন। বর্তমানে দেশে চায়ের দুটি নিলাম মার্কেট রয়েছে। এর একটি চট্টগ্রামে অন্যটি সিলেটের শ্রীমঙ্গলে।

পঞ্চগড় জেলায় ২০০০ সালে প্রথম চা-গাছের চারা রোপণ করা হয়। ২০০২ সাল থেকে পঞ্চগড়ে চা আবাদের কার্যক্রম শুরু হয়। আর ২০০৫ সাল থেকে পঞ্চগড়ের চা-কারখানায় চা উত্পাদন শুরু হয়। উত্তরাঞ্চলের পাঁচ জেলায় চা-চাষের বিপুল সম্ভাবনা গড়ে উঠেছে। ঠাকুরগাঁও জেলা বাদে উত্তরাঞ্চলের নীলফামারী, লালমনিরহাট ও দিনাজপুর জেলায় চা-কারখানা না থাকায় সেখানকার কাঁচা চা-পাতা প্রক্রিয়াকরণের জন্য পঞ্চগড়ের কারখানায় আসে।

গত ১৭ বছরে পঞ্চগড়ে চা-চাষ ও কাঁচা চা-পাতার উত্পাদন দুটিই বেড়েছে। কর্মসংস্থানেও এর প্রভাব ব্যাপক। কিন্তু বর্তমানে শ্রমিকদের মজুরি, কীটনাশকসহ নানা কারণে উত্পাদন ব্যয় বেড়ে গেছে। কিন্তু সে অনুযায়ী দাম না পাওয়ায় চাষিরা হতাশ হয়ে পড়ছেন। কাঁচা চা-পাতার বর্তমান মূল্যে (প্রতি কেজি সাড়ে ১৪ টাকা)। এতে উত্পাদন খরচ উঠছে না বলে দাবি চা-চাষিদের। এ কারণে পঞ্চগড়সহ উত্তরাঞ্চলের পাঁচ জেলার চা-চাষিদের জন্য পঞ্চগড়ে নিলামকেন্দ্র চালু করার দাবি জানিয়েছেন তারা।

পঞ্চগড় চা বোর্ডের আঞ্চলিক কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালে পঞ্চগড়ের ১৭টি এবং ঠাকুরগাঁওয়ের একটি চা-কারখানায় ৪ কোটি ৬৯ লাখ ২১ হাজার ৬৫১ কেজি কাঁচা চা-পাতা প্রক্রিয়াকরণ করা হয়। এতে উত্পাদিত হয় প্রায় ৯৬ লাখ কেজি চা। এবারে উত্পাদন আরো বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। পঞ্চগড়ে উত্পাদিত চা বর্তমানে চট্টগ্রাম ও শ্রীমঙ্গল নিলাম বাজারে বিক্রি করেন।

পঞ্চগড় জেলার আটোয়ারী উপজেলার সোনাপাতিলা এলাকার চা-চাষি মতিয়ার রহমান জানান, শুরুর দিকে কাঁচা চা-পাতার দাম বেশি ছিল। এ কারণে এখানে সবাই চা-চাষে উত্সাহিত হয়। বর্তমানে কাঁচা চা-পাতার দাম কমেছে কিন্তু চা-চাষে খরচ বেড়েছে। এ কারণে লাভ হচ্ছে না। বাংলাদেশ স্মল টি-গার্ডেন ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের উপদেষ্টা, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক চা-চাষি আনোয়ার সাদাত সম্রাট পঞ্চগড়ের চা-শিল্পের সংকট নিরসন ও পঞ্চগড়ে চায়ের নিলাম মার্কেট চালু করতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

তার মতে, পঞ্চগড়ে নিলাম মার্কেট চালু করলে এই সংকট কেটে যাবে। বাংলাদেশ স্মল টি-গার্ডেন ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সিনিয়র সহসভাপতি অ্যাডভোকেট আবু বকর ছিদ্দিক জানান, পাশের দেশ ভারতের জলপাইগুঁড়িতে ক্ষুদ্র চা-চাষিরা প্রতি কেজি কাঁচা চা-পাতা কারখানায় ২২ টাকায় বিক্রি করছে। অথচ এখানে মূল্য প্রতি কেজি সাড়ে ১৪ টাকা। বাংলাদেশ স্মল টি-গার্ডেন ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন পঞ্চগড় জেলা শাখার সভাপতি মো. আমিরুল হক খোকন বলেন, বর্তমানে প্রতি কেজি কাঁচা চা-পাতার যে দাম নির্ধারণ করা হয়েছে তাতে চাষিরা আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন।

বাংলাদেশ চা বোর্ডের নর্দান বাংলাদেশ প্রকল্পের পরিচালক ড. মোহাম্মদ শামীম আল-মামুন জানান, সর্বশেষ সভায় প্রতি কেজি কাঁচা চা-পাতার মূল্য সাড়ে ১৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়। চা বোর্ড নিবন্ধিত চাষিদের স্বল্পমূল্যে চা চারা দিচ্ছে, চা-বাগান পরিদর্শন করে প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ দেওয়া হয়।

ইত্তেফাক/এসআই