জয়পুরহাটে কোরবানির পশুর চামড়ার বাজারে ধস। জেলার বাজার গুলোতে গতবারের চেয়ে চার ভাগের এক ভাগ দামে চামড়া বিক্রি করতে হয়েছে মৌসুমি ব্যবসায়ীদের। অনেক জায়গায় কম দামেও চামড়া বিক্রি না হওয়ায় মৌসুমি ব্যবসায়ীরা দিশেহারা।
গত বছর প্রতিটি ছাগলের চামড়া বিক্রি হয়েছে ২০০-৩০০ টাকায়। এবার তার আকারভেদে দাম ২৫ থেকে ৩০ টাকা। প্রতিটি গরু চামড়া বিক্রি হয়েছিল এক হাজার থেকে দেড় হাজার টাকায়। এবার ছোট গরুর চামড়া ২৫০ -৩০০ টাকা এবং বড় গরুর চামড়া ৪০০ থেকে ৫০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
জয়পুরহাট সদর উপজেলার হেলকুন্ডা গ্রামের আনিছুর রহমান, কালাই উপজেলার হাতিয়র গ্রামের গোলাম রব্বানী, ক্ষেতলাল উপজেলার দাশড়া গ্রামের হানিফ হোসেনসহ জেলার বিভিন্ন এলাকার কোরবানিদাতারা জানান, গত ১০ বছরের চামড়ার এমন মন্দা বাজার দেখেননি তারা। চামড়ার বাজার ধসের কারণে লোকসানের শিকার জেলার সব মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ী।
জয়পুরহাট জেলা শহরের নতুনহাট এলাকার শহিদুল ইসলাম, জামালগঞ্জ বাজারের মতিউর রহমানসহ মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ীরা জানান, কোরবানির চামড়ার এই আকস্মিক দরপতনে দিশেহারা মধ্যস্বত্বভোগী চামড়া ব্যবসায়ীরা। তারা প্রতি বছর কোরবানির সময় দু-এক দিনের এ ব্যবসায় টাকা খাটিয়ে ভালো লাভ করেন। তবে এবারের দরপতনে লোকসান গুনতে হচ্ছে।
জয়পুরহাট শহরের চামড়া ব্যবসায়ী সাজু হোসেন, শাহিন আকতার বলেন, ট্যানারি মালিকদের কাছে বকেয়া পাওনা রয়েছে লাখ লাখ টাকা। হাতে টাকা না থাকায় তারা পর্যাপ্ত চামড়া কিনতে পারছেন না। ফলে বাজারে চাহিদা কম থাকায় চামড়া মূল্য স্বাভাবিক কারণে কমে গেছে।
অন্যদিকে চামড়া পাচার রোধে সীমান্তে বিজিবির টহল বাড়ানো হয়েছে। এতে করে স্থানীয় বাজারে আপাতত চামড়া কেনাবেচা করতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের।
আরো পড়ুন : স্ত্রীসহ মির্জাপুর সরকারি কলেজের প্রভাষক করোনায় আক্রান্ত
এদিকে জয়পুরহাট-২০ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল ফেরদৌস হাসান জানান, জয়পুরহাট-২০ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধীনে সীমান্তে এলাকা রয়েছে প্রায় সাড়ে ৪১ কিলোমিটার। এর মধ্যে ২২ কিলোমিটার এলাকা তারকাটার ঘেরা, বাকি ১৮ কিলোমিটার সীমান্তে তার কাঁটা নেই। চোরাকারবারিরা মূলত এই জায়গাটিকেই তাদের পাচারের পথ হিসেবে ব্যবহার করে থাকে। তাই এই জায়গাগুলো সব সময় নজরদারির মধ্যে রাখা হয়। চামড়া পাচার রোধে সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছেন তারা।
ইত্তেফাক/ইউবি