শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

রংপুরে চাঞ্চল্যকর স্কুলছাত্রী পূর্ণিমা হত্যার মূলরহস্য উদঘাটন

আপডেট : ০৯ আগস্ট ২০২০, ২১:৩১

রংপুরের চাঞ্চল্যকর স্কুলছাত্রী পূর্ণিমা রানী রায় ওরফে সুন্দরী আত্মহত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে রংপুর মেট্রোপলিটন হাজিরহাট থানার পুলিশ। ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে মামলার প্রধান আসামি সুরজিত ও তার সহযোগী শ্যামলকে গ্রেফতার করা হয়েছে। 

রবিবার দুপুরে রংপুরের উপ-পুলিশ কমিশনার (অপরাধ) কাজী মুত্তাকিন ইবনু মিনানের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানানো হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপ-পুলিশ কমিশনার (অপরাধ) মো.শহিল্লাহ কাওছার ।

সংবাদ সম্মেলনে উপপুলিশ কমিশনার (অপরাধ) কাজী মুত্তাকিন ইবনু মিনান জানান, মনোহর বাবুপাড়া গ্রামের ফটিক চন্দ্র রায়ের মেয়ে মনোহর উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী পূর্ণিমা রানী রায় ওরফে সুন্দরী সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে একই এলাকার সুরজিত চন্দ্র রায়। প্রেমের অবৈধ সম্পর্কের এক পর্যায়ে পূর্ণিমা অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। পূর্ণিমা বাবা ও মা ঢাকায় থাকার সুবাদে গত ২৫ জুলাই সুরজিত সকালে তার বাড়িতে আসলে পূর্ণিমা সুরজিতকে বিয়ের জন্য চাপ দেয়। এ সময় উভয়ের মাঝে ঝগড়ার এক পর্যায়ে সুরজিত বালিশ চাপা দিয়ে পূর্ণিমাকে হত্যা করে এবং ওড়না দিয়ে ঘরের তীরের সঙ্গে ঝুলিয়ে রেখে সেখান থেকে পালিয়ে যায়। পালিয়ে যাওয়ার সময় সুরজিত তার মোবাইলটি পূর্ণিমার ঘরে রেখে যায়। পরে সেখান থেকে কৌশলে মোবাইলটি নিয়ে তার আত্মীয় শ্যামলের কাছে রেখে যায়। 

পূর্ণিমার স্বজনেরা তার ঝুলন্ত লাশ দেখে পুলিশে খবর দিলে পুলিশ উদ্ধার করে সুরতহাল করার সময় তাকে ধর্ষণ ও অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার বিষয়টি জানতে পারে। 

এ ঘটনায় নিহতের পিতা ফটিক চন্দ্র রায় বাদী হয়ে সুরজিতকে আসামি করে রংপুর মেট্রোপলিটনের হাজিরহাট থানায় একটি মামলা দায়ের করে।  

পুলিশের অভিযানের এক পর্যায়ে সুরজিত আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। পরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক শাহ আলম আদালতে রিমান্ডের আবেদন করলে আদালত তাকে দুইদিনের রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করেন। ৮ আগস্ট শনিবার সুরজিত আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন। 

জবানবন্দিতে সুরজিত বলেন, ‘গত ৭ মাস ধরে পূর্ণিমার সাথে আমার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। শারীরিক মেলা-মেশার কারণে সে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। বিয়ের জন্য চাপ সৃষ্টি করায় তাকে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করেছি।’ 

উপ-পুলিশ কমিশনার (অপরাধ) কাজী মুত্তাকিন ইবনু মিনান আরো জানান, পরবর্তীতে মামলার প্রধান আসামি সুরজিত চন্দ্র রায়কে নিয়ে অভিযান পরিচালনা করা হয়। তার দেয়া তথ্য মতে মামলার গুরুত্বপূর্ণ আলামত শ্যামলের নিকট থেকে উদ্ধার করা হয়।

ইত্তেফাক/ইউবি