শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

টিউবওয়েলের পানি পানে করোনাসহ রোগ মুক্তির গুজব

আপডেট : ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০০:৪৬

মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার ভবানিপুর গ্রামে একটি টিউবওয়েলে হাতলে চাপ বা কোন ইলেকট্রিক সংযোগ ছাড়াই নিরবচ্ছিন্ন পানি বের হয়ে চলেছে। বিষয়টি অলৌকিক ভেবে টিউবওয়েল থেকে নির্গত পানিতে মানুষের রোগ মুক্তি হচ্ছে বলে ওই এলাকায় গুজব ছড়িয়ে পড়েছে। বর্তমানে করোনা মহামারিসহ নানা রকম জটিল রোগ মুক্তির খবর ছড়িয়ে পড়ায় মানুষ ওই টিউবওয়েলের পানি নিতে দলে দলে ছুটে যাচ্ছে। 

তবে স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে এক পানিতেই সকল রোগের মুক্তি মিলবে এর কোন বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা নেই। এদিকে ঘটনাস্থলে বসেছে মেলার দোকান। এখানে খেলাধুলাসহ মেয়েদের প্রসাধনী ও চুড়ি ও কানের দুল বিক্রয় করছে ফেরিওয়ালা। 

টিউবওয়েলের পানি পানে রোগ মুক্তির গুজব ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকসহ মানুষের মুখে মুখে। টিউবওয়েলটির পাশে গিয়ে মানুষ পানি পান করাসহ ভরে নিয়ে যাচ্ছে বোতলে করে। যারা যেতে পারছেন না তারা নিকট আত্মীয়সহ কাছের মানুষের মাধ্যমে পানি বোতলে করে বাড়িয়ে আনিয়ে নিচ্ছেন। তবে ওই পানি পান করে কারো রোগ মুক্তি হয়েছে এমন কোন খবর পাওয়া যায়নি। তার পরেও নারী-পুরুষ, শিশুসহ বিভিন্ন বয়সী ও শ্রেণি পেশার মানুষ পানি নিয়ে যাচ্ছেন। বিষয়টি এলাকায় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। এ নিয়ে এলাকার মানুষ নানা রকম মন্তব্য করেছেন।

আরও পড়ুন: রাজশাহীতে দেড়শ কোটি টাকা ব্যয়ে বঙ্গবন্ধু টাওয়ার নির্মাণ কাজের উদ্বোধন 

এলাকাবাসীর দাবি,অলৌকিকভাবে টিউবওয়েলে পানি উঠায় রোগ মুক্তি হবে বলে আমরা পানি নিয়ে পান করছি। পানির উছিলায় করোনা মহামারিসহ অন্যান্য রোগ থেকে আল্লাহ হেফাজত করবে সেই প্রত্যাশায় পানি নিয়ে যাচ্ছে। 

টিউবওয়েলের মালিক আনারুল ফকির জানান, অটো পানি বের হওয়ার বিষয়টি ছেলেরা মোবাইলে ভিডিও করে ফেসবুকে দেওয়ায় এখন লোকজন পানি নিতে আসছে। একটি ছেলে এই পানি খেয়ে নাকি সুস্থ হয়েছে। তার মাধ্যমে রোগ মুক্তির বিষয়টিও ছড়িয়ে পড়েছে। এখন মানুষ দলে দলে পানি নিতে আসছে। 

গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এম রিয়াজুল আলম বলেন,টিউবওয়েলের পানি স্বাস্থ্যসম্মত কি না পরীক্ষার পর বলা যাবে। এ পানিতে রোগ নিরাময় হবে এ ধরনের কোন বৈজ্ঞানিক কোন ভিত্তি নেই। রবং এ পানিতে আর্সেনিক থাকতে পারে। পানি পান করার পর ডায়রিয়া হতে পারে। রোটা ভাইরাস ইনফেকশন হয় তাহলে জনগণের জন্য দুর্ভোগ বয়ে আনবে।’ 

উপ-সহকারী প্রকৌশলী আবু সালেহ মো. মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘অতিবৃষ্টির কারণে পানির লেয়ার উপরে উঠে যায়। এ কারণে কখনও কখনও অনর্গল পানি বের হয়। এটা স্বাভাবিক ঘটনা। আবার গ্যাস থাকার কারণে চাপ বাড়লে পানি বের হতে পারে। এটা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।’

ইত্তেফাক/এএএম