শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

বরিশালগামী লঞ্চে দু’সন্তানের জননী হত্যাকারী গ্রেফতার

আপডেট : ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১৩:৫০

সিসি ক্যামেরার ফুটেজ ও তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে পারাবত-১১ লঞ্চের কেবিনের যাত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস লাবনীর হত্যাকারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিকেশন (পিবিআই)।

গ্রেফতার মনিরুজ্জামান চৌধুরী (৩৪) গাজীপুরের কাপাসিয়া এলাকার আব্দুস শহীদের ছেলে, তবে সে ঢাকার মিরপুর-১ এর দারুস সালাম প্রিন্সিপাল আবুল কালাম রোডের সরকারি কোয়াটার এলাকায় বসবাস করতেন। তাকে সেখান থেকেই বরিশাল জেলা পিবিআই এর সদস্যরা ঢাকা মেট্রো (উত্তর) পিবিআই সদস্যদের সহায়তায় মঙ্গলবার দিবাগত রাতে গ্রেফতার করে।

বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় বরিশাল নগরীর রুপাতলীস্থ উকিলবাড়ি সড়কের পিবিআই কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি নিশ্চিত করে পিবিআই বরিশাল পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবির।

তিনি জানান, সিসি টিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে সনাক্ত করা ঐ নারীর সাথে লঞ্চে আগমন করা ব্যক্তির সন্ধানে নামে পিবিআই। এক পর্যায়ে সনাক্ত হওয়া ব্যক্তিকে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ঢাকার মিরপুর থেকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তির সাথে লঞ্চের সিসি ক্যামেরার ফুটেজের ছবি মিলিয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে। অপরদিকে গ্রেফতারের সময় তার কাছ থেকে লাবনীর ব্যবহৃত ওড়না, মোবাইলসহ বিভিন্ন আলামত উদ্ধার করা হয়। পাশাপাশি মনিরুজ্জামানকে লঞ্চে যে শার্টটি পরিহিতা অবস্থায় দেখা গেছে সেটিও উদ্ধার করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামী জানায়, তারা সম্পর্কে স্বামী-স্ত্রী। লঞ্চ যোগে রাতে বরিশাল যাবার পথে কেবিনে তাদের ঝগড়া হয়। ঝগড়ার এক পর্যায়ে ওড়না দিয়ে পেঁচিয়ে লাবনীকে হত্যা করে সে।লঞ্চটি বরিশালে পৌছলে মনিরুজ্জামান কৌশলে পালিয়ে বাসযোগে ঢাকা চলে আসে। পুলিশ সূত্র জানায়, গ্রেফতারকৃত মনিরুজ্জামান রাইড শেয়ারের চালক ছিলো।

বরিশাল সদর নৌ-থানার ওসি আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, এ ঘটনায় নৌ-পুলিশ বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। গ্রেফতার মনিরুজ্জামানকে তাদের হেফাজতে নেয়া হচ্ছে। তদন্তের স্বার্থে রিমান্ডের আবেদনও করা হতে পারে বলে জানান তিনি।

প্রসঙ্গত: গত ১৪ সেপ্টেম্বর সকালে ঢাকা থেকে বরিশাল নদী বন্দরে আসা পারাবত-১১ লঞ্চের ৩৯১ নম্বর সিঙ্গেল কেবিন থেকে অজ্ঞাত নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। লঞ্চের কেবিন বয় পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা কাজে ঐ কেবিনে গিয়ে দরজা খোলা অবস্থায় অজ্ঞাত নারীর মৃতদেহ খাটের ওপর পরে থাকতে দেখতে পায়। তাৎক্ষণিক নৌ পুলিশকে বিষয়টি অবহিত করা হয়। তারা মরদেহ উদ্ধার করে সুরতহাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়। সুরতহাল ও অন্যান্য আলামতের ভিত্তিতে বিষয়টি হত্যাকাণ্ড বলে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হওয়ার পরে তদন্তে নামে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিট। পিবিআই তদন্তের প্রথমভাগেই অজ্ঞাত ঐ নারীর পরিচয় জানতে পারে। জান্নাতুল ফেরদৌস লাবনী নামে ঐ নারীর গ্রামের বাড়ি ভাঙ্গা থানার আদমপুর এলাকায়। তার বাবার নাম আব্দুল লতিফ মিয়া। দুই শিশু ছেলের জননী লাবনীর স্বামী একজন ইলেক্ট্রিশিয়ান। বাবা আব্দুল লতিফ মিয়া ও মা মমতাজ চোধুরীর সাথে ঢাকার পল্লবী-২ নম্বর এলাকার বাসায় থাকতেন তিনি।

ইত্তেফাক/এমআরএম