বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

ধর্ষণের পর মীমকে হত্যা করে প্রেমিক মাহফুজ

আপডেট : ২১ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১৩:১৯

রংপুর মহানগরীতে বহুল আলোচিত দুই বোন হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ।

রংপুর মেট্রোপলিটন উপ-পুলিশ কমিশনার (অপরাধ) আবু মারুফ হোসেনের দাবি, প্রেমের সম্পর্কে মনোমালিন্য হওয়ার জের ধরে প্রেমিকা সুমাইয়া আক্তার মীমকে ধর্ষণের পর হত্যা করেছে তার প্রেমিক মাহফুজ রহমান রিফাত। এ ঘটনাটি আড়াল করার জন্য মীমের চাচাতো বোন জান্নাতুল মাওয়াকেও শ্বাসরোধ করে হত্যার পর আত্মহত্যার নাটক সাজানোর চেষ্টা করে আসামি।

রবিবার রাত সাড়ে ৮টায় আয়োজিত আরপিএমপি’র উপ-পুলিশ কমিশনারের (অপরাধ) সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলন থেকে এসব তথ্য জানানো হয়।নিহত মীমের বাড়ি রংপুরের গনেশপুরে এবং মাহফুজের বাড়ি রংপুর শহরের বাবুখাঁ এলাকায়।

সংবাদ সম্মেলনে উপ-পুলিশ কমিশনার (অপরাধ) আবু মারুফ হোসেন বলেন, মীম ও জান্নাতুল আত্মহত্যা করেনি, তাদের পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী গত বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে গনেশপুরে মীমের কাছে আসে প্রেমিক মাহফুজ। মীমের চাচা-চাচি বাড়িতে না থাকায় চাচাতো বোন জান্নাতুলকে ম্যানেজ করে এক কক্ষে থাকে তারা। এরপর অন্যদের সঙ্গেও এমন সম্পর্ক থাকায় বিষয়টি নিয়ে দুজনের মধ্যে মনোমালিন্যের সৃষ্টি হয়। এ সময় মীমকে ধর্ষণ করা হয়। পরে মীমকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে মাহফুজ। হত্যা ও ধর্ষণের ঘটনা অন্য খাতে প্রবাহিত করার জন্য ঘরের সিলিং ফ্যানে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যার নাটক সাজায়। মীমকে হত্যার পর ঘর থেকে বের হওয়ার সময় বাঁধা দেয়ায় জান্নাতুলকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে আয়নার ভাঙা কাঁচ দিয়ে গলায় আঘাত করে মেঝেতে ফেলে যায়।

পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, মীম ও মাহফুজ মাদ্রাসা পড়ার সময় থেকে প্রেমের সম্পর্ক জড়িয়ে পড়ে। সম্প্রতি মীম তার নানাবাড়ি গিয়ে অন্য ছেলের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ার বিষয়টি জানতে পারে প্রেমিক মাহফুজ। এটি নিয়েই তাদের মধ্যে মনোমালিন্যের সৃষ্টি হয়। তাদের দীর্ঘ দিনের সম্পর্কের প্রমাণ স্বরূপ অনেকগুলো চিঠি, গিফট, আসামির ব্যবহৃত কয়েকটি মোবাইল ফোন ও কয়েক ধরনের সিমকার্ড, মেমোরি কার্ড উদ্ধার করা হয়েছে।

মাহফুজকে রবিবার আদালতে সোপর্দ করে সুমাইয়া আক্তার মীমকে (১৭) ধর্ষণ ও হত্যা এবং তার চাচাতো বোন জান্নাতুল মাওয়াকে (১৪) হত্যা করার সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়ে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় বলেও সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (অপরাধ) শহিদুল্লাহ কাওছার, অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিবি অ্যান্ড মিডিয়া) উত্তম প্রসাদ পাঠক, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মজনু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, গত শুক্রবার দুপুরে রংপুর মহানগরীর গনেশপুর থেকে দুই বোনের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনার পর মীমের মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে মাহফুজের সন্ধান পায় পুলিশ। তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় নিশ্চিত হয়ে নগরীর মধ্য বাবুখাঁ থেকে মাহফুজকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

ইত্তেফাক/এমআরএম