বরগুনার আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলার অন্যতম আসামি ‘মুছা বন্ড’কে ১৫ মাসেও গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। অন্য সব আসামিকে গ্রেফতার করে আদালতে হাজির করলেও মুছাকে আজও গ্রেফতার করতে পারেনি বরগুনার পুলিশ। তবে ‘মুছা বন্ড’-এর ফেসবুক আইডি থেকে মাঝেমধ্যেই ছবি পোস্ট করা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এদিকে তাকে পলাতক দেখিয়ে গত বুধবার প্রাপ্তবয়স্ক আসামিদের বিচারিক কার্যক্রম শেষ হয়। আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেছেন বরগুনার জেলা ও দায়রা জজ মো. আছাদুজ্জামান।
গত বছরের ২৬ জুন ঐ হত্যাকাণ্ডের পর পুলিশ দুই খণ্ডে ২৪ জনের বিরুদ্ধে ১ সেপ্টেম্বর যে অভিযোগপত্র দিয়েছে, তাদের মধ্যে মুছা বন্ডসহ প্রাপ্তবয়স্ক ১০ জনের বিচার চলে জেলা ও দায়রা জজ আদালতে। বাকি ১৪ জন অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় বরগুনার শিশু আদালতে আলাদাভাবে তাদের বিচার চলছে। প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির মধ্যে নিহত রিফাত শরীফের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিও রয়েছেন।
‘মুছা বন্ড’ মামলার এজাহারের প্রধান আসামি ‘নয়ন বন্ডের’ সহযোগী এবং বন্ড গ্রুপে ‘মুছা ভাই’ হিসেবে বরগুনায় পরিচিত ছিলেন। ‘নয়ন বন্ড’ ‘বন্দুকযুদ্ধে’ ২ জুলাই নিহত হন। তাই পুলিশের অভিযোগপত্রে তার নাম আসেনি। পুলিশের চার্জশিটে ‘মুছা বন্ড’কে ৫ নম্বর আসামি এবং সরাসরি হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ আনা হয়েছে।
নির্ভরযোগ্য কিছু সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, ‘মুছা বন্ডের’ বাড়ি বেতাগীর সরিষামুড়ির কালীকাবাড়ি এলাকায়। তার বাবা আবুল কালাম ১০-১২ বছর আগে বরগুনা শহরে এসে ভাড়া বাসায় পরিবার নিয়ে বসবাস শুরু করেন। ২০১৫ সালে কিশোর বয়সে মুছা প্রথম আলোচনায় আসেন ছাগল চুরি করে। একপর্যায়ে মুছার পরিচয় হয় বন্ড গ্রুপ ০০৭-এর প্রধান ‘নয়ন বন্ডের’ সঙ্গে। তখন থেকেই তার নামের শেষে যোগ হয় ‘বন্ড’ শব্দটি। তবে গ্রুপের সদস্যরা ও এলাকার ছেলেরা তাকে ‘মুছা ভাই’ বলে ডাকত।
রিফাত শরীফ হত্যার পর থেকে সপরিবারে নিরুদ্দেশ হয় মুছার পরিবার। বরগুনা শহরের ধানসিঁড়ি এলাকায় খোঁজ নেওয়া হলে কেউ তাদের সন্ধান দিতে পারেনি।
ফেসবুকে সক্রিয় ‘মুছা বন্ড’! এ বছরের ৪ সেপ্টেম্বর ‘মুছা বন্ড’ নামের একটি আইডি থেকে ছবি পোস্ট করা হয়। এতে ক্যাপশনে লেখা—‘অন্ধকার আমার ভালো লাগে’। এর আগে ২২ আগস্ট কয়েক জনের সঙ্গে তোলা ‘মুছা বন্ডের’ একটি ছবি পোস্ট করা হয়। এ ছাড়া ১৭ জুন পোস্ট করা একটি ছবিতে তাকে একটি ফুটওভার ব্রিজের ওপর দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। এতে ক্যাপশন লেখা রয়েছে, ‘এখন আর চিন্তা করি না, বিপদ যে দিয়েছে, সে বিপদ থেকে মুক্ত করে দেবে’। ‘মুছা বন্ড’ নামের এই আইডির বন্ধুর তালিকায় থাকা বেশ কয়েক জন আইডিটি ‘মুছা বন্ডের’ বলে নিশ্চিত করে বলেন, ঐ আইডিতে তাকে প্রায়ই সক্রিয় থাকতে দেখা যায়। পরিচয় গোপন রাখার শর্তে কয়েক জন জানান, ‘মুছা বন্ডের সঙ্গে মেসেঞ্জারে তাদের চ্যাটিংও হয়েছে।
ইত্তেফাক এসি