ছাহেরা বেগম। বাড়িলক্ষ্মীটারী ইউনিয়নের পূর্বইচলি গ্রামে। তিন দিন আগে হঠাৎ করে পানি উঠলে আশ্রয় নেয় মহিপুর-কাকিনা সড়কের পাশে দুলাল মেম্বারের উচু জমিতে। পরিবার পরিজন নিয়ে খোলা আকাশের নীচে পলিথিনের ছাউনিতে বসবাস। একই জায়গায় আছে রাশেদা বেগম। রাশেদার পরিবারে ৬ সদস্য। সেখানে পলিথিনের তলে রয়েছে রহিমা, নিলফু নাহার ও বাচ্চানির পরিবার। এদের অভিযোগ এখন কোন চেয়ারম্যান-মেম্বার ওদের দেখতে আসেনি। চাল কিংবা কোন শুকনো খাবার তাদের কপালে জোটেনি। এ সময় সপো বেগম বলেন, বাড়িততো ভাত রান্না করবার পাই নাই। তাই বাহিরের এক লোকের কাছ থেকে খাবার চায়া নিছি। তারে বাড়িত থালা-বাটি দিবার যাওছি। রহিমার বাড়িতেও রান্না হয়নি। সন্তান নিয়ে এক আত্মীয়ের বাড়িতে গেছে।
ছাবেরা, রহিমা কিংবা রাশেদার মত রংপুরের গঙ্গাচড়ায় বানভাসি এবং ভাঙ্গন কবলিত এলাকার মানুষের দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে। লোকজন খেয়ে না খেয়ে বর্তমানে বর্তমানে রাস্তার ধারে কিংবা উঁচু জায়গায় কোন রকমে বাস করছে। অনেকে এখনো ভাঙ্গা ঘর তুলতে পারেনি। ঘরগুলো শুধু উঁচু জায়গায় রাখা হয়েছে। এমন দৃশ্য সহজে চোখে পড়ে। স্থানীয় লোকজন জানান, গত মঙ্গলবার রাত থেকে হঠাৎ করে তিস্তার পানি বাড়তে থাকে। ফলে উপজেলার লক্ষ্মীটারী, কোলকোন্দ ইউনিয়নসহ আরো ৫টি ইউনিয়নে কয়েক হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পাড়ে। সেই সাথে লক্ষ্মীটারী, কোলকোন্দ ইউনিয়নে ব্যাপক ভাঙ্গন দেখা দেয়। শুধু দুই ইউনিয়নে প্রায় একশ পরিবার ভাঙ্গনের শিকার। তাছাড়া একদিকে বন্যা আর ভাঙ্গন আর অন্য দিকে অবিরাম বৃষ্টি যেন লোকজনের মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
উপজেলা ত্রাণ অফিস সূত্রে জানা যায়, সরকারিভাবে উপজেলার লক্ষ্মীটারী ও কোলকোন্দ ইউনিয়নে ৫ মে.টন করে চাল বরাদ্দ দেওয়া হলেও লক্ষ্মীটারী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সে চাল এখনো উত্তোলন করেনি।
ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল হাদী বলেন, পানি একটু কমলেও ভাঙ্গন অব্যাহত রয়েছে।তিনি বরাদ্দকৃত চাল না তোলার বিষয়টিও স্বীকার করেন।
ইত্তেফাক/আরকেজি