বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

রংপুরে ১০০ বছরের ইতিহাসে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত

আপডেট : ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১৮:২৭

গত ১০০ বছরের ইতিহাসে রংপুর জেলায় সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাতে ডুবে গেছে শহরের অধিকাংশ পাড়া-মহল্লা। কোথাও হাটু, কোথাও কোমর পানিতে তলিয়ে গেছে সড়কসহ বাড়িঘর ও স্থাপনা। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে নগরীর মানুষ। রংপুর আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, শনিবার রাত ১০টা থেকে রবিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ৮ ঘণ্টায় ২৬৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

নগরীর বেশ কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বিভিন্ন স্কুল কলেজে আশ্রয় নিয়েছেন স্থানীয়রা। বাড়িঘর পানিতে ডুবে যাওয়ায় তাদের কোন যাওয়ার যায়গা নাই। কেউবা আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন। তারা জানিয়েছেন, হঠাৎ করে এভাবে জলাবদ্ধতায় অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে তাদের। বাড়ির আসবাবপত্র থেকে শুরু করে মূল্যবান কাগজপত্র নষ্ট হয়ে গেছে। এছাড়া ব্যবসায়ীক মালামাল, জিনিসপত্র ও ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতিও নষ্ট হওয়ার পথে।বিশেষ করে যারা একতলা বাড়িতে থাকেন তাদের বিছানাপত্রও নষ্ট হয়ে গেছে। নগরীর সমাজকল্যাণ উচ্চ বিদ্যালয়েও অনেকেই আশ্রয় নিয়েছেন। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কয়েকটি ভবন খুলে দিয়েছেন। এখানে আশ্রয় নেওয়া কয়েকজনের সাথে কথা হয়  তারা জানান, এত বড় একটি দুর্যোগে আগে থেকে সিটি কর্পোরেশন অথবা আবহাওয়া অফিস কেউই কোন সতর্কবাণী বা পূর্বাভাস দেয় নাই। ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন তারা। আশ্রয় নেওয়া মুলাটোল থানা মোড় এলাকার জাহাঙ্গীর, সম্রাট, গৃহিণী আছিয়া বেগম জানান, তার বাড়িতে বিছানার উপরে পানি উঠেছে। সব জিনিসপত্র নষ্ট হয়ে গেছে। এছাড়া কয়েক লাখ টাকার বই নষ্ট হয়েছে বলে জানান তারা।

এদিকে হঠাৎ এই জলাবদ্ধতায় নগরীর বেশিরভাগ এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে। শুকনা খাবার ও নিরাপদ পানির সংকট দেখা দিয়েছে। রান্নার ব্যবস্থা না থাকায় অনেকেই না খেয়ে আছেন। এতে এগিয়ে এসেছে স্থানীয় অনেক স্বেচ্ছাসেবী। নিজেদের উদ্যোগে খাবার রান্না করে সরবরাহ করছেন। 

নগরীর পানিবন্দীদের উদ্ধারে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের কয়েকটি টিম। তারা নৌকায় করে মানুষদেরকে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। 

রংপুর আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ মোস্তাফিজার রহমান জানান, গত ১০০ বছরের ইতিহাসে রংপুরে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাতের রেকর্ড এটি। ৮ ঘণ্টায় ২৬৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এই ধারা আরও দুইদিন অব্যাহত থাকতে পারে।


ইত্তেফাক/ইউবি