শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

কুমিল্লায় প্রতিবন্ধী তরুণীকে ধর্ষণ, মীমাংসার নামে খালি স্ট্যাম্পে ভিকটিমের বাবার সই নিলেন সমাজপতিরা

আপডেট : ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০০:০২

কুমিল্লার বরুড়ায় বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের প্রতিবন্ধী এক তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনা ধামাচাপা দিয়ে ধর্ষককে বাঁচাতে সালিশের নামে অর্থের প্রলোভনে তরুণীর বৃদ্ধ বাবার কাছ থেকে খালি ¯ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেওয়ার অভিযোগ ওঠেছে স্থানীয় প্রভাবশালী কয়েকজন সমাজপতির বিরুদ্ধে। 

অবশেষে এ ঘটনায় ধর্ষক ইমাম হোসেনকে আসামি করে সোমবার (২৮ সেপ্টেম্বর) রাত ১১টার দিকে বরুড়া থানায় মামলা হলেও ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যায় সালিশের নামে খালি ¯ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেয়া প্রভাবশালীরা। এদিকে এ ঘটনা জানাজানি হলে মঙ্গলবার এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়। 

সরেজমিন এবং বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, জেলার বরুড়া উপজেলার শীলমুড়ি উত্তর ইউনিয়নের লগ্নসার গ্রামের আবদুল কাদেরের ছেলে ইমাম হোসেন তার এলাকার হতদরিদ্র মাতৃহারা প্রতিবন্ধী বৌদ্ধ তরুণীকে বিভিন্ন সময়ে একধিকবার ধর্ষণ করে। গত শনিবার রাতে ইমাম হোসেন বাড়িতে ঢুকে একই কাজে লিপ্ত হলে তরুণীর বৃদ্ধ বাবা বিষয়টি টের পেয়ে তাকে ধরার চেষ্টা করলে সে পালিয়ে যায়। 

ওই প্রতিবন্ধী তরুণীর বাবা সাংবাদিকদের জানান, গত রবিবার রাত ১১টার দিকে ওই এলাকার খলিলুর রহমান মুন্সি, লিটন বড়ুয়া, নয়ন, রতন ও আবু তাহেরসহ কয়েকজন আমার বাড়িতে এসে ঘটনাটি মীমাংসার জন্য সালিশে বসে। এসময় তারা আমাকে চল্লিশ হাজার টাকা দেবে বলে সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেয় এবং খলিলুর রহমান মুন্সি আমার কাছ থেকে খালি ¯ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়ে কোনো টাকা পয়সা দেয়নি। আমি এ ঘটনার বিচার চাই। 

মঙ্গলবার বিকালে বরুড়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) ইকবাল বাহার সাংবাদিকদের জানান, সোমবার রাতে ওই তরুণী ও তার বাবাকে থানায় আনার পর তরুণীর বাবার জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়েছে। ইমাম হোসেন নামে একজনকে আসামি করে ধর্ষিতা তরুণীর বাবা সোমবার রাতে থানায় মামলা করেছেন। এ ঘটনায় কয়েকজন ব্যক্তি সালিশের মাধ্যমে টাকা দিবে বলে খালি ¯ট্যাম্পে তরুণীর বাবার কাছ থেকে স্বাক্ষর আদায় করেছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে। তদন্তে এ ঘটনায় কারো সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে তাদের (সালিশদার) বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও তিনি জানান।

এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত পুলিশ কাউকে গ্রেফতার কিংবা ¯ট্যাম্পটি উদ্ধার করতে পারেনি। 

ইত্তেফাক/এসি