কুমিল্লার লালমাই এলাকার শিশু শাহপরান (১৩) হত্যা মামলার রহস্য উৎঘাটন করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে হত্যায় জড়িত প্রধান আসামি নুর উদ্দিনসহ চারজনকে। ওই শিশু স্থানীয় বেতাগাঁও গ্রামের আবদুল মালেকের ছেলে। পুলিশের দাবি, জেলার লাকসাম থেকে বাগমারা সড়কের ১৩টি সিসি ক্যামেরার প্রায় চারশ ঘণ্টার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে এ মামলার রহস্য বের করা হয়েছে। ব্যাটারি চালিত একটি অটোরিকশার জন্যই খুন হন ওই শিশু। বৃহস্পতিবার জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক প্রেসব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজিম উল আহসান।
তিনি জানান, গত ১১ সেপ্টেম্বর সকালে লালমাই থানার বড় চলুন্ডা ব্র্যাক স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র শাহপরান তার বড় ভাইয়ের ব্যটারি চালিত একটি অটোরিকশা মেরামত করতে বাগমারা বাজারে গিয়ে আর বাড়ি ফিরে যায়নি। তার খোঁজে এলাকায় মাইকিং করে পরিবার। সন্ধ্যার দিকে ডাকাতিয়া নদীর পাশে একটি ঝোঁপে হাত পা গলায় দড়ি দিয়ে বাঁধা অবস্থায় তার মরদেহ উদ্ধার লালমাই থানা পুলিশ। এ ঘটনায় অজ্ঞাতনামা আসামীর বিরুদ্ধে দস্যুতাসহ হত্যা মামলা করেন শাহপরানের পিতা আবদুল মালেক।
পুলিশ ওই সড়কের ১৩টি সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষন করে একটি অংশে ৫ সেকেন্ডের ফুটেজে মিশুকসহ শিশু শাহপরান এবং নূর উদ্দিনকে চিহ্নিত করেন। এর পরই পুলিশ ঘাতক নুর উদ্দিনকে গ্রেফতার করতে অভিযান শুরু করে। গতকাল বুধবার জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ঘাতক নুর উদ্দিনসহ অন্যান্যদের গ্রেফতারের পরই ঘটনার আদ্যপ্রান্ত বেড়িয়ে আসে। ভাড়ায় অটোরিকশায় উঠে শাহপরানকে খুন করে ঝোপের ভেতর মরদেহ রেখে ঘাতক মিশুকটি লাকসাম নিয়ে গোলাপ হোসেনের নিকট ১৫ হাজার টাকায় বিক্রি করেছিল।
গ্রেফতার ঘাতক নুর উদ্দিন নুরু (২২) লালমাই উপজেলার জয়নগর গ্রামের দুধু মিয়া ছেলে। গ্রেফতার অন্য হচ্ছেন, একই উপজেলার নাগরীপাড়া গ্রামের ছিদ্দিকুর রহমানের ছেলে শহীদ উল্লাহ (৩৫), ভুলুইন গ্রামের আবুল হাসমের ছেলে গোলাপ হোসেন (৩০) এবং জেলার লাকসাম উপজেলা সদরের শামসুল হকের ছেলে নাছির উদ্দিন (৩২)।
লালমাই থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আইয়ুব জানান, আমাদের হাতে ঘটনাটির বিষয়ে কোন ক্লু ছিল না, সিসিটিভির ফুটেজে ঘাতক নুর উদ্দিনকে সনাক্ত করার পরই গত বুধবার তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় তাকেসহ তিন আসামিকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের স্বীকারোক্তিমতে একটি অটোরিকশাসহ অন্য আলামত উদ্ধার করা হয়েছে।
প্রেস ব্রিফিংয়ে আরও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তানভীর সালেহীন ইমন,ডিআইও (ওয়ান) মাঈন উদ্দিনসহ অন্যরা।
ইত্তেফাক/এসি