শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

তাড়াশে শামুক নিধনের মহোৎসব চলছে 

আপডেট : ১৬ অক্টোবর ২০২০, ১৭:২৬

চলনবিল অধ্যুষিত সিরাজগঞ্জের তাড়াশে বন্যার পানি কমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শামুক নিধনের মহোৎসব শুরু হয়েছে। বিস্তীর্ণ বিল এলাকা থেকে অবাধে শামুক ধরে তা স্থানীয় ব্যাপারীদের কাছে বিক্রি করা হচ্ছে। 

সরেজমিনে শুক্রবার (১৬ অক্টোবর) দেখা যায়, উপজেলার মাগুড়া বিনোদ ইউনিয়নের দিঘী বাজার ঘাট, মাগুড়া তালপুকুর ঘাট, নাদো সৈয়দপুর বাইর পাড়া ঘাট, বারুহাস ইউনিয়নের হেদার খাল ব্রিজ এলাকা ও হাটিকুমরুল-বনপাড়া মহাসড়কের আট নম্বর ব্রিজ এলাকায় শ্যালো মেশিনের নৌকা করে শামুক সংগ্রহকারীরা বিক্রির জন্য এসেছেন।

মাসুদ, মিজান, মেহেদী ও শাহিন নামে চারজন শামুক সংগ্রহকারী জানান, এ বছর দফায় দফায় বন্যা ও অতি বৃষ্টির কারণে ফসলাদি ডুবে নষ্ট হয়ে গেছে। কোথাও কোন কাজের সুযোগ নাই। বাধ্য হয়ে শামুক ধরে বিক্রি করছেন।

তারা আরও বলেন, চলনবিলের তাড়াশ অংশের বিভিন্ন এলাকায় মই জাল দিয়ে রাতভর শামুক ধরে সকালে বিক্রির জন্য ঘাটে নিয়ে আসেন। এভাবে প্রত্যেকের ৫০০-৭০০ টাকা উপার্জন হয়।

দিঘী সগুনা ঘাটের শামুকের ব্যাপারী আব্দুল কাদের রিন্টু ও নাদো সৈয়দপুর বাইর পাড়া ঘাটের ব্যাপারী রসুল আলী জানান, মূলত হাঁস ও মাছের খাদ্য হিসাবে শামুকের ব্যবহার করা হচ্ছে। স্থানীয় খামারিদের চাহিদা মিটিয়ে প্রতিদিন ১৫-২০ ট্রাক শামুক কুষ্টিয়া, নোয়াখালী, বরিশাল, বাগেরহাট ও যশোরসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে যাচ্ছে। 

আরও পড়ুন: বাগেরহাটে কবি রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহর ৬৪তম জন্মবার্ষিকী পালিত

সালাউদ্দিন মৃধা নামে বরিশালের এক হাঁসের খামারি জানান, ১০০-১১০ টাকায় এক বস্তা শামুক কিনতে পাওয়া যাচ্ছে। যেখানে এক বস্তা হাঁসের খাবার কিনতে ২ হাজার থেকে ২ হাজার ২০০ টাকা পর্যন্ত গুণতে হয়। তাছাড়া শামুক খাওয়ালে হাঁস বেশিদিন ডিম দেয় এবং মাংস বৃদ্ধি পায়।

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মসগুল আজাদ বলেন, প্রাকৃতিকভাবে শামুক ফিল্টার হিসাবে পানি পরিষ্কারের কাজ করে থাকে, যা মাছসহ অধিকাংশ জলজ প্রাণীর বেঁচে থাকার জন্য অপরিহার্য। বিল থেকে অতিরিক্ত মাত্রায় শামুক নিধন করা হলে খাদ্যাভাবে মাছ কমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। 

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লুৎফুননাহার লুনা বলেন, অতিরিক্ত মাত্রায় শামুক নিধন হলে মাটির ক্যালসিয়াম কমে যাবে। এতে ফসলহানির আশঙ্কা রয়েছে।  

এ প্রসঙ্গে ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেজবাউল করিম ।

ইত্তেফাক/এএএম