সিলেটের বন্দরবাজার ফাঁড়িতে পুলিশের নির্যাতনে মারা যাওয়া রায়হান আহমদের শরীরে ১১১টি আঘাতের চিহ্ন পেয়েছেন ময়না তদন্তকারী চিকিৎসকরা। এর মধ্যে ১১ টি গুরুতর আঘাত ছিলো বলে উল্লেখ করা হয় এবং মৃত্যুর ২-৪ ঘণ্টা আগে নির্যাতন চালানো হয় বলে রিপোর্টে বলা হয়।
রায়হানের ডান হাতের কনিষ্ঠ আঙুল আর বাম হাতের অনামিকার নখ উপড়ানো ছিল। অসংখ্য আঘাতের কারণে হাইপোভলিউমিক শক ও নিউরোজেনিক শকে মস্তিষ্ক, হৃৎপিণ্ড, ফুসফুস, কিডনিসহ গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলো কর্মক্ষমতা হারানোর কারণে তার মৃত্যু হয়। তবে মৃত্যুর পূর্ণাঙ্গ কারণ ভিসেরা প্রতিবেদন পাওয়ার পর বলা যাবে বলে প্রাথমিক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। তার শরীরে চামড়ার নিচ থেকে প্রায় ২ লিটার রক্ত পাওয়া গেছে।
সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগ রায়হান আহমদের মরদেহের দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত শেষে তদন্তের রিপোর্ট পিবিআই এর কাছে হস্তান্তর করা হয়। রায়হান হত্যার ঘটনায় তার স্ত্রীর দায়ের করা মামলার তদন্ত করছে পিবিআই।
সিসি ক্যামেরার ফুটেজ অনুযায়ী, ১০ অক্টোবর রাত ৩ টা ৯ মিনিট ৩৩ সেকেন্ডে স্বাভাবিক অবস্থায় রায়হানকে সিলেটের বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে ধরে আনা হয়। পরে সকাল ৬টা ২৪ মিনিট ২৪ সেকেন্ডে ফাঁড়ি থেকে বের করা হয়। ৬টা ৪০ মিনিটে ভর্তি করা হয় সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে সকাল ৭টা ৫০ মিনিটে তিনি মারা যান। রায়হানের মৃত্যুর ২ থেকে ৪ ঘণ্টা আগে তার ওপর নির্মম নির্যাতন চালানো হয়।
আরও পড়ুন: হু’র তালিকায় গ্লোব বায়োটেকের ‘ব্যানকোভিড’
গত রবিবার ভোর রাতে নগরীর আখালিয়ার নেহারিপাড়ার যুবক রায়হান আহমদকে পুলিশ ফাঁড়িতে ধরে এনে নির্যাতন করা হয়। এরপর ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর তার মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী বাদী হয়ে ১২ অক্টোবর কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। এরপর এসআই আকবরসহ ৪ পুলিশকে বরখাস্ত ও ৩ জনকে প্রত্যাহার করা হয়। ১৩ অক্টোবর বিকেল থেকে আকবর পলাতক।
গত বৃহস্পতিবার রায়হানের মরদেহ কবর থেকে তুলে দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্ত করে পিবিআই। পরে বিকালে আবার আখালিয়া নবাবী মসজিদ সংলগ্ন কবরস্থানে রায়হানের মরদেহ ফের দাফন করা হয়।
ইত্তেফাক/এএএম