জেলার বেগমগঞ্জ উপজেলার একলাশপুরে এক নারীকে (৩৫) বিবস্ত্র করে নির্যাতন করে ভিডিওচিত্র ধারণ ও তা ছড়িয়ে দেয়ার ঘটনার মূলহোতা দেলোয়ার বাহিনীর প্রধান দেলোয়ার হোসেনের তিনটি মামলায় ৭ দিনের রিমান্ড আদেশ প্রদান করেন আদালত।
রবিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে দেলোয়ারকে জেলা কারাগার থেকে জেলার ৩ নং আমলী আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় আদালতে দেলোয়ারের বিরুদ্ধে ধর্ষণ, অস্ত্র এবং বিস্ফোরক আইনে বেগমগঞ্জ থানায় দায়েরকৃত এ তিন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তারা তাকে পুলিশী হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। পরে শুনানি শেষে আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাসফিকুল হক ধর্ষণ মামলায় ৫ দিন এবং অস্ত্র এবং বিস্ফোরক আইনের মামলায় ১ দিন করে দুইদিনসহ ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
৬ অক্টোবর ধর্ষণ মামলাটি দায়ের করেন ওই নির্যাতিতা নারী । এ মামলায় দেলোয়ারকে প্রধান আসামি ও তার প্রধান সহযোগী কালামকে আসামি করা হয়। অস্ত্র এবং বিস্ফোরক আইনে মামলা দুইটি পূর্বে দায়েরকৃত। এ দুই মামলায় দেলোয়ার প্রধান আসামি।
একই আদালতে দেলোয়ারকে একটি হত্যা ও অন্য একটি মারামারির মামলায় তাৎক্ষণিক গ্রেফতার (শ্যোন এরেস্ট) দেখানোর জন্য আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। আদালত তা মঞ্জুর করেন। গত ফেব্রুয়ারি মাসে একলাশপুরের পার্শ্ববর্তী শরিফপুরে কিশোর গাংয়ের হাতে খুন হয় হাসান নামের এক যুবক। এ হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় দেলোয়ার এজাহারভুক্ত ৭ নম্বর আসামি। এর পর আগস্ট মাসে একলাশপুরে অন্য একটি মারামারির মামলায় সে প্রধান আসামি। এই দুই মামলায় সে পলাতক ছিল বলে জানিয়েছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মো. মোস্তাক আহমেদ।
আরো পড়ুন : ২৫ টাকা কেজিতে আলু বিক্রয় করবে টিসিবি
জানা গেছে, ৪ অক্টোবর একলাশপুরে নারীকে (৩৫) বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে পুলিশ জড়িতদের ধরতে অভিযান শুরু করলে ঘটনার মূল হোতা দেলোয়ার বাহিনী প্রধান দেলোয়ার এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যান। পরদিন ৫ অক্টোবর ভোরে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থেকে আগ্নেয়াস্ত্রসহ তাকে গ্রেফতার করে র্যাব। ওইদিন রাতে র্যাব অভিযান চালিয়ে দেলোয়ারের বাড়ি এলাকায় মাছের ঘের থেকে কয়েকটি হাতবোমা উদ্ধার করে। তার বিরুদ্ধে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় অস্ত্র ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা দায়ের করে র্যাব। পরে আদালতের মাধ্যমে তাকে নারায়ণগঞ্জের কারাগারে পাঠানো হয়। ১৩ অক্টোবর দেলোয়ারকে নোয়াখালীর ৩নং আমলী আদালতে হাজির করা হয়। ওই দিন সকালে পিবিআই নোয়াখালী কার্যালয়ের পরিদর্শক মামুনুর রশিদ পাটোয়ারী তাকে তাৎক্ষণিক গ্রেফতার (শ্যোন এরেস্ট) জন্য আদালতে আবেদন করলে তা মঞ্জুর করেন। আদালত ওই নির্যাতিতা নারীর দায়ের করা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন এবং পর্ণোগ্রাফি আইনে দেলোয়ারকে গ্রেফতার দেখিয়ে জেলা কারাগারে প্রেরণ করেন। এ মামলা দুইটি পিবিআই তদন্ত করছে। এ পর্যন্ত পিবিআইয়ের দুটি ও থানা পুলিশের তিনটিসহ পাঁচটি মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। মামলা গুলোতে এ পর্যন্ত ১১জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। দেলোয়ার ছাড়া এর আগে ১০ জনকে রিমান্ডে নেয়া হয়। তাদের মধ্যে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন এবং পর্ণোগ্রাফি আইনে দায়ের করা মামলার ৬ নম্বর আসামি শামছুদ্দিন সুমন এবং মামলার ৯ নম্বর আসামি রহমত উল্যাহ ছাড়া অন্য ৮ আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন।
ইত্তেফাক/ইউবি