শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

এক শুক্রবারে বিয়ে আরেক শুক্রবারে নববধূর লাশ 

আপডেট : ২৪ অক্টোবর ২০২০, ০৫:৩০

মাঝখানে সাতদিন সুখের সংসার। এক শুক্রবারে বিয়ে পরের শুক্রবারে মৃত্যু ! হাতে মেহেদীর টকটকে লাল রং। মুখে নীল বিঁষ। সারা শরীরে ছড়িয়েছে সেই বিঁষ। সকলকে কাঁদিয়ে মৃত্যুকেই যেন বেছে নিল অষ্টাদশি মুক্তা আক্তার। আড়াইহাজার উপজেলা হাসপাতাল থেকে ঢাকা নেয়ার পথেই মুক্তা শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে। বিয়ে হয়েছে গত শুক্রবার (১৬ অক্টোবর)। বৃহস্পতিবার তিনি স্বামীকে নিয়ে পিত্রালয়ে এসে রাতে বিঁষ পান করেন। একজন নববধূর রহস্যময় এই মৃত্যুর ঘটনা আড়াইহাজার উপজেলার ফতেহপুর ইউনিয়নের কায়েমপুর ও মাহমুদপুর ইউনিয়নের কলান্দী বিলপাড় এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। বিভ্রান্তির বেড়াজালে পড়েছে থানা পুলিশ। 

আড়াইহাজার থানার উপপরিদর্শক(এসআই) রিয়াজউদ্দিন জানান, শুক্রবার সকালে স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে ঢাকায় নেয়ার পথে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন নববধূ মুক্তা আক্তার। মুক্তার মা রহিমা বেগম কারো বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ করেনি। তাছাড়া কী কারণে মুক্তা বিঁষ পান করেছেন, কারো সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিল কিনা সে সম্পর্কে কিছুই বলতে পারেননি। ঘটনা সম্পর্কে মুক্তার মা বলেন, মুক্তা তার স্বামী আল আমিনকে (২৪) নিয়ে বৃহস্পতিবার শ্বশুর বাড়ি থেকে পিত্রালয়ে বেড়াতে আসেন। সারাদিন তারা ছিলেন হাসি-খুশি। স্বামীর সাথে মুক্তা নানা খুনশুটিও করেছেন। মামাতো ভাই-বোন হলেও ওরা একে অপরকে পছন্দ করতেন। দিন শেষে রাত ৮ টা নাগাদ মুক্তা বিঁষপান করে শুয়ে থাকেন। স্বামী আলআমিন ঘরে ঢুকে এই অবস্থা দেখেন। তিনি সকলকে ডেকে আনেন। মুক্তাকে হাসপাতালে নেয়া হয়। কিন্তু অবস্থার কোন উন্নতি হচ্ছিল না। ঢাকায় রেফার্ড করে। সকালে ঢাকায় নেয়ার পথেই মুক্তার মৃত্যু হয়। 

জানা গেছে, গত ১৬ অক্টোবর শুক্রবার পারিবারিক ভাবেই মাহমুদপুর ইউনিয়নের কল্যান্দী বিলপাড় এলাকার প্রবাসী মো: সেলিম মিয়ার ছেলে আলআমিন এর সাথে ফতেহপুর ইউনিয়নের কায়েমপুর এলাকার প্রবাসী মোক্তার হোসেনের মেয়ে মুক্তা আক্তারের বিবাহ হয়। কিন্তু এক সপ্তাহের দাম্পত্য সম্পর্ক সৃষ্টি হতে না হতেই নববধূর বিঁষ পানের ঘটনাটিকে রহস্যময় বলে দাবি করেছেন গ্রামবাসী। অথচ মেয়ের পরিবারের পক্ষ থেকে কোন অভিযোগ নেই। 

আড়াইহাজার থানার ওসি নজরুল ইসলাম জানান, পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে আপাতত অপমৃত্যু মামলা করা হয়েছে। পুরো ঘটনা খতিয়ে দেখতে অধিকতর তদন্ত চলছে। 

ইত্তেফাক/কেকে