মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

শ্রীবরদীতে নির্যাতনের শিকার শিশু গৃহকর্মী সাদিয়ার মৃত্যু

আপডেট : ২৫ অক্টোবর ২০২০, ০২:২৬

শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলা সদরে নির্যাতনের শিকার শিশু গৃহকর্মী সাদিয়া ওরফে ফেলির (১০) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে। ২৭ দিন গুরুতর অসুস্থ থেকে শুক্রবার সন্ধ্যায় ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে সে মারা যায়। এ ব্যাপারে শ্রীবরদী থানার ওসি (তদন্ত) বন্দে আলী মোবাইল ফোনে বলেন, ‘আমরা এখনো মৃত্যুসংক্রান্ত কোনো কাগজ পাইনি। তবে শুনেছি সে মারা গেছে।’

শ্রীবরদী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আশরাফ হোসেন খোকার ছেলে উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব শাকিলের বাসার গৃহকর্মী ছিল সাদিয়া। সে মুন্সীপাড়া মহল্লার কৃষক সাইফুল ইসলামের মেয়ে।

জানা গেছে, সাদিয়াকে শাকিলের স্ত্রী রাবেয়া আক্তার ঝুমুরসহ বাসার অন্যরা নির্মম নির্যাতন করত। তার শরীরের এমন কোনো জায়গা নেই, যেখানে ক্ষতচিহ্ন ছিল না। মেয়েটি ধীরে ধীরে অসুস্থ হয়ে পড়লেও প্রভাবশালী ঐ পরিবারের বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস কারো ছিল না। কিন্তু এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে গোপনে ২৫ সেপ্টেম্বর রাতে ৯৯৯ নম্বরে পুলিশকে ফোন করা হয়। পুলিশ শ্রীবরদী শহরের খামারিয়াপাড়া এলাকার ভাড়া বাসা থেকে ঐ দিন রাতেই অসুস্থ মেয়েটিকে উদ্ধার করে। পরে তাকে প্রথমে শ্রীবরদী হাসপাতালে নেওয়া হয়। এরপর তাকে শেরপুর জেলা হাসপাতাল এবং সেখান থেকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। গ্রেফতার করা হয় শাকিলের স্ত্রী রাবেয়া আক্তার ঝুমুরকে। বর্তমানে তিনি শেরপুর জেলা কারাগারে আছেন।

আরও পড়ুন: অষ্টমীতে ছেলের নাম জানালেন কোয়েল মল্লিক

ঐ সময়ই শেরপুর জেলা হাসপাতালের আরএমও ডা. খায়রুল কবীর সুমন মেয়েটিকে নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, মেয়েটির যৌনাঙ্গসহ সব স্থানেই আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তার পেট ফুলে গেছে। তাই তাকে ২৬ সেপ্টেম্বর ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিত্সাধীন অবস্থায় ২৭ দিন পর সাদিয়ার মৃত্যু হয়।

এ ঘটনায় পুলিশ গৃহবধূ ঝুমুরকে গ্রেফতার করলেও গৃহকর্তা আহসান হাবিব শাকিল রয়েছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। ইতিমধ্যে তাকে গ্রেফতারের জন্য বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন দাবি জানিয়েছে।

শ্রীবরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রহুল আমীন তালুকদার জানান, সাদিয়ার মৃত্যু হয়েছে। ময়মনসিংহের কোতোয়ালি থানার পুলিশ সুরতহাল রিপোর্ট দেবে। ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্ত করা হবে। রিপোর্ট পাওয়ার পর শিশু নির্যাতন মামলার সঙ্গে হত্যা মামলার ধারা যোগ হবে।

ইত্তেফাক/এএএম