মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

নারী চিকিৎসকের বাসা থেকে গৃহপরিচারিকার লাশ উদ্ধার, পরিবারের দাবি হত্যা

আপডেট : ০১ নভেম্বর ২০২০, ০৫:৩৩

সিলেট নগরীর এক নারী চিকিৎসকের বাসা থেকে গৃহপরিচারিকা লিনা নামের এক কিশোরীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। পরে ময়নাতদন্তের পর রাতে তাকে পারিবারিক গোরস্থানে দাফন করা হয়।

শনিবার দুপুরের দিকে আখালিয়া সুরমা আবাসিক এলাকার ৪ নম্বর গলির গাইনি চিকিৎসক জামিলা খাতুন চৌধুরীর বাসা থেকে ওই কিশোরীর লাশ উদ্ধার করা হয়। 

নিহতের পরিবারের দাবি, কিশোরীকে হত্যা করা হয়েছে। ডা. জামিলা সিলেটের একটি বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজের গাইনি বিভাগের প্রধান। নিহত কিশোরী জান্নাত আক্তার লিনা (১৪) সিলেট কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বতুমারা গ্রামের আবদুল মালিকের মেয়ে।

লিনার পিতা আবদুল মালিক জানান, জামিলা খাতুনের বাসায় লিনার এক খালা কাজ করেন। প্রায় ১০ বছর আগে স্ত্রীর অপারেশন করেন ডাক্তার জামিলা। এসময় শিশু লিনাকে দেখে পছন্দ করেন, বলেন তার কাছে দিয়ে দিতে তিনি নিজের মেয়ের মতো দেখবেন। পড়ালেখা করাবেন। এরপর লিনাকে তারা ডাক্তার জামিলার বাসায় দিয়ে দেন। ডাক্তার জামিলা লিনাকে দিয়ে বাসার কাজ করানোর পাশাপাশি একটি মাদ্রাসায় ভর্তি করে দেন। সে এবছর অষ্টম শ্রেণিতে পড়ছিলো। 

আবদুল মালিক জানান, ডাক্তার জামিলা লিনাকে কঠোরভাবে শাসন করতেন এবং মা-বাবাকে দেখতে বাসায় আসতে দিতেন না। শুক্রবার লিনার খালার বিয়ে ছিলো। বিয়েতে যাওয়ার জন্য সে অনেক আকুতি করেছে। কিন্তু ডাক্তার জামিলা তাকে খালার বিয়েতে আসতে দেননি। 

আরও পড়ুন:এবার ১০ বছর বয়সিদের স্মার্টকার্ড দিতে চায় ইসি

শনিবার সকাল ১১টার দিকে তারা আমাদেরকে ফোন করে জানায়, লিনা আত্মহত্যা করেছে। লিনার পিতার দাবি, লিনাকে তারা হত্যা করেছেন। আবদুল মালিক বলেন, ময়নাতদন্ত শেষে তিনি মেয়ের লাশ রাতে বাড়িতে নিয়ে দাফন করেছেন। তিনি কোতোয়ালী থানায় একটি জিডি করেছেন।

এ বিষয়ে ডাক্তার জামিলা খাতুন বলেন, শনিবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে তিনি বাসা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর সকাল সাড়ে ১০টার তার মেডিক্যাল পড়ুয়া মেয়ে তাকে ফোন করে বলেন, লিনা ঘরের সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস দিয়েছে। পরে ঘরের আরও কাজের লোক ও ডা. জামিলার মেয়ে মিলে লিনার দেহ নিচে নামান। ডাক্তার জামিলা খাতুন পুলিশকে খবর দেন এবং তিনিও বাসায় চলে আসেন। পরে সিলেট কোতোয়ালি মডেল থানার একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে দুপুর ১টার দিকে লাশ উদ্ধার করে।

ডাক্তার জামিলা জানান, আমি আমার সন্তানের মতোই লিনাকে স্নেহ করতাম। তার খালাও আমার বাসায় কাজ করে। সে বলতে পারবে আমার পরিবারের সবাই লিনাকে কত স্নেহ করতো। 

সিলেট কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সেলিম মিঞা বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে। মেয়েটির গলার নিচ দিকে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, এটি আত্মহত্যাই। ময়নাতদন্তের পর মৃতদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়। 

ইত্তেফাক/এএএম