বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

দিনমজুরি করে জীবন চলছে ভাতা বঞ্চিত মুক্তিযোদ্ধা চাঁন্দ প্রামাণিকের

আপডেট : ২১ নভেম্বর ২০২০, ১৭:৪৯

কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার ফিলিপনগর ইউপির বাহিরমাদী গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা চাঁন্দ প্রামাণিক দেশ স্বাধীনের ৪৯ বছর পরও মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানী ভাতা পাচ্ছেন না। ফলে জীবন সায়াহ্নে এখনও দিনমজুরি করেই চলছে তার সংসার। চাঁন্দ প্রামাণিকের বাবার নাম বীশু প্রামাণিক। তার আইডি (ভারতীয়) এফ-৬৬। 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চাঁন্দ প্রামাণিক দেশ স্বাধীন হবার বছর খানেক পরে নিজ গ্রাম দৌলতপুর উপজেলার বাহিরমাদী ছেড়ে চলে যান পাবনা জেলার ঈশ্বরদী উপজেলার সাহাপুর গ্রামে। সেখানে সংসার পেতে জীবন যাপন শুরু করেন। চাঁন্দ প্রামাণিক এক ছেলে ও ও তিন মেয়ের জনক। 

২০১৭ সাল থেকে সারাদেশে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই শুরু হলে খোঁজ শুরু হয় ভারতীয় তালিকাভুক্ত দৌলতপুরের মুক্তিযোদ্ধা এফ-৬৬ নং ধারী ব্যক্তির। আর সেখান থেকেই উঠে আসে চাঁন্দ প্রামাণিকের নাম। কিন্তু নাম পাওয়া গেলেও বাধ সাধে নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা প্রমাণ করার যুদ্ধ। দীর্ঘ তিন বছর যাবত বার বার দৌলতপুর উপজেলার ফিলিপনগর ইউনিয়ন পরিষদের প্রত্যয়নপত্রসহ জন্ম নিবন্ধন কার্ড জমা দিয়েও নতুন করে নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা প্রমাণ করার যুদ্ধে যান তিনি। 

আরও পড়ুন: গ্রামের সহজ সরল ছেলে থেকে যেভাবে জঙ্গি হলেন নাঈমুল ও কিরণ

এদিকে বাংলাদেশ সরকারের স্বীকৃতি স্বরূপ মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে ভারতীয় তালিকা (সেক্টর-৮)-এ কুষ্টিয়ার যে তালিকা দেওয়া হয়েছে সেখানে তার নাম ৫১২ নং ক্রমিকে লিপিবদ্ধ করা আছে। কিন্তু ওই তালিকা প্রকাশ হওয়ার পরেও আজ পর্যন্ত সম্মানী ভাতা পাননি এই বীর মুক্তিযোদ্ধা।
 
কান্না জড়িত কণ্ঠে চাঁন্দ প্রামাণিক বলেন, আমি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে দেশ স্বাধীন করার জন্য যুদ্ধে গিয়েছিলাম। সম্মানী ভাতা চালু করার জন্যে দৌলতপুর উপজেলা সমাজ সেবা অফিসে ৩-৪ বার মুক্তিযোদ্ধার কাগজপত্রসহ আবেদন করার পরেও ভাতা চালু হয়নি। 

এ ব্যাপারে উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা ছানোয়ার হোসেন বলেন, হয়তো নাম ঠিকানার বানানে কোনো সমস্যা আছে। সে কারণেই বার বার আবেদন করা হলেও আবেদনটি মঞ্জুর করা হচ্ছেনা। নাম ঠিকানার বানানে কোনো সমস্যা না থাকার পরেও সম্মানী ভাতার আওতায় না আসার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি শুধু আবেদন গ্রহণ করি এর বেশি কিছু করার ক্ষমতা আমার নেই। 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন আক্তার জানান, কোনো সমস্যার কারণে হয়তো তার সম্মানী ভাতার আবেদন মঞ্জুর হয়নি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। 

ইত্তেফাক/এসি