শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

মির্জাপুরে ডিসি-ইউএনও-এসিল্যান্ডের নামে মামলা  

আপডেট : ২৮ নভেম্বর ২০২০, ২৩:৫৯

টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক মো. আতাউল গনি, মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. আবদুল মালেক এবং সহকারী কমিশনার (ভূমি) মীর্জা মো. জুবায়ের হোসেনের নামে মামলা হয়েছে। মো. ফিরোজ হায়দার খান বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেছেন। হাইকোর্টের নির্দেশ উপেক্ষা করে পুকুর ভরাটের কাজে বাধা দিয়ে প্রশাসন তার বিপুল অংকের টাকা ক্ষতি করেছেন এই অভিযোগ এনে তিনি হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেছেন বলে ফিরোজ হায়দার জানিয়েছেন। 

ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক সংলগ্ন গোড়াই শিল্পাঞ্চলের টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার গোড়াই মমিন নগর এলাকায় ঘটনা ঘটেছে। উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মীর্জা মো. জুবায়ের হোসেন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেছেন, আমরা সরকারি স্বার্থ রক্ষা করেছি। ফিরোজ হায়দার খান অন্যায়ভাবে মিথ্যা মামলা করেছেন। আমরা আইনিভাবে এ মামলা মোকাবিলা করবো।

আজ শনিবার উপজেলা ভূমি অফিস সূত্র জানায়, ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক সংলগ্ন গোড়াই শিল্পাঞ্চলের গোড়াই মমিন নগর মৌঁজায় খতিয়ান নং (ইজা-১)-৩০৯, দাগ নং-২৮৬১ কাতে ৮৪ শতাংশ (শ্রেণি পুকুর) সরকারি সম্পত্তি। ৮৪ শতাংশ খাস পুকুরটির বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় শত কোটি টাকা। গোড়াই নাজিরপাড়া এলাকার বাসিন্দা মৃত হাবিবুর রহমান খানের ছেলে ও বিএনপি নেতা মো. ফিরোজ হায়দার খান পুকুরটি ক্রয় সূত্রে মালিক দাবি করে ভোগ দখল করে আসছেন। এই সম্পত্তি নিয়ে সরকার ও ফিরোজ হায়দার খানের সঙ্গে হাইকোর্টে মামলা হয়। মামলার বাদী ফিরোজ হায়দার খান। হাইকোর্টে মামলার পর এই সম্পত্তি নিয়ে বিচারক নিষেধাজ্ঞা জারি করেন ২০১০ সালে। এলাকাবাসীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক মহোদয়ের নির্দেশনায় উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. যুবায়ের হোসেন এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আবদুল মালেক (১৭ মে) গোড়াই মমিন নগর এলাকায় পরিদর্শন করে পুকুরে মাটি ভরাট বন্ধ করে দেন এবং নিষেধাজ্ঞা দিয়ে সাইন বোর্ড দিয়েছেন বলে সার্ভেয়ার মো. ওমর ফারুক জানিয়েছেন।

আরো পড়ুন: রামপাল উপজেলায় চার শিক্ষকের নিবন্ধন সনদই ভুয়া

এ ব্যাপারে মো. ফিরোজ হায়দার খানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, গোড়াই মমিন নগর মৌঁজায় খতিয়ান নং (ইজা-১)-৩০৯, দাগ নং-২৮৬১ কাতে ৮৪ শতাংশ সম্পত্তি আমি সাবেক বিগ্রেডিয়ার মো. মোশারফ হোসেন সানুর বোন মিসেস জেবুন নেছা বেগমের নিকট থেকে সাব কবলা দলিল নং-২৮১১/০৭ এবং ২৪১২/০৭ মুলে ক্রয় করে ভোগ দখল করে আসছি। আমার নামে দলিল, খাজনা, খারিজ ও ডিসিআর রয়েছে। আমার বাড়ির আশপাশ পুকুরে ভেঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় পুকুর সংস্কার করতে গেলে প্রশাসন হাইকোর্টের নির্দেশ উপেক্ষা করে অন্যায়ভাবে মাটি ভরাট বন্ধ করে দিয়েছেন। ন্যায় বিচার চেয়ে ইতিপূর্বে জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করেছি। ন্যায় বিচার না পাওয়ায় মহামান্য হাইকোর্টেও আশ্রয় নিয়েছি। মামলায় টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক মো. আতাউল গনি, মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আবদুল মালেক এবং সহকারী কমিশনার (ভূমি) মীর্জা মো. জুবায়ের হোসেনকে আসামি করা হয়েছে। কোর্ট মামলাটি আমলে নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে রুল জারি করেছেন।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবদুল মালেক এবং সহকারী কমিশনার (ভূমি) মীর্জা মো. জুবায়ের হোসেন বলেন বলেন, গোড়াই মমিন নগর মৌঁজায় খতিয়ান নং (ইজা-১)-৩০৯, দাগ নং-২৮৬১ কাতে ৮৪ শতাংশ সম্পত্তি (খাস পুকুর ) নিয়ে হাইকোর্টে মামলা চলমান রয়েছে। মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত কেউ সরকারি খাস পুকুরে প্রবেশ করতে ও রক্ষণাবেক্ষণ করতে পারবে না। ফিরোজ হায়দার খান মামলা শেষ না হলেও অন্যায়ভাবে পুকুর ভরাট করে দখলের চেষ্টা করেছেন। ফলে পুকুর ভরাটের কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। উদ্ধার হয়েছে শত কোটি টাকার সরকারি সম্পত্তি।

ইত্তেফাক/এএএম