রংপুরে গত কয়েয়কদিন ধরে হাঁড় কাঁপানো শীতে জনজীবন অচল হয়ে পড়েছে। শীতজনিত রোগে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে গত এক সপ্তাহে ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের বেশির ভাগই শিশু ও বয়স্ক।
রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে শীতজনিত রোগে মৃত্যু এবং বর্তমান পরিস্থিতি বিষয়ে হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডাক্তার রোস্তম আলী জানান, গেল এক সাপ্তাহে শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এবং এক সপ্তাহেই এক হাজার ৩২২ জন রোগী শীতজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে রংপুর হাসাপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এদের বেশির ভাগই শিশু।
রংপুরে গত কয়েয়কদিন ধরে হাঁড় কাঁপানো শীতে জনজীবন অচল হয়ে পড়েছে। সেই সাথে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে নিউমোনিয়া, কোল্ড ডায়রিয়া, শ্বাসকষ্টসহ নানান রোগ ব্যাধি। রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে দেখা গেছে, নিউমোনিয়া, কোল্ড ডায়রিয়া ও শ্বাসকষ্টজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে অসুস্থ শিশুরা হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। এই ওর্য়াডে রোগীদের তিল ধারণের জায়গা নেই। একই অবস্থা হাসপাতালের আউটডোরে , সেখানে সকাল থেকে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে আছে মায়েরা।
রংপুরসহ আশে পাশের অঞ্চলের বিভিন্ন জেলা থেকে অসুস্থ্য শিশুদের নিয়ে মায়েরা হাসপাতেলে আসছেন। তেমনই দিনাজপুর থেকে আসা আকলিমা বেগম জানান, তার এক বছরের মেয়ে ৭ দিন ধরে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হলে তাকে রমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এখন কিছুটা সুস্থ, তবে চিকিৎসকরা আরও কয়েকদিন হাসপাতালে অবস্থান করে চিকিৎসা নিতে বলেছেন।
নিউমোনিয়া, কোল্ড ডায়রিয়া ও শ্বাসকষ্টজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে এতো শিশু ভর্তি হচ্ছে কেন তা জানতে চাইলে শিশু ওর্য়াডের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাক্তার সালাম জানান, রংপুর অঞ্চলে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ চলছে। এ সময় শিশুদের ঘরের বাইরে বের না হওয়ার জন্য মায়েদের বলা হলেও তারা মানছেন না। ফলে শীতজনিত নানান রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা।
রংপুরের আবহাওয়ার খবর জানতে চাইলে রংপুর আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ মোস্তাফিজার রহমান জানান, শৈত্যপ্রবাহের কারণে দিনে কুয়াশা পড়ছে। তাই দিনেও সূর্যে আলো মিলছে না। এছাড়া আকাশ পরিষ্কার থাকলে বাতাস সরাসরি প্রবাহিত হয়। এ কারণে তাপমাত্রা কমে যায় এবং শীতের দাপট বেড়ে যায়।
তিনি আরও জানান, মঙ্গলবার (১৯ জানুয়ারি) রংপুরে ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। তবে আগামী এক সপ্তাহে কোন শৈত্যপ্রবাহের আভাস নেই।
ইত্তেফাক/এনএ