নিজ ছেলের হাতে খুন হলেন মমতাজ বেগম (৫০)। সম্পত্তির লোভে এক মাস আগে ছেলে মুন্নাবাবু ও তার সহযোগীরা মিলে মমতাজ বেগমকে শ্বাসরোধে হত্যা করে। পরে লাশ বস্তাবন্দী করে বাড়ির পাশের পুকুরে ডুবিয়ে রাখে। ঘটনার এক মাস পর গলিত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
মর্মান্তিক এ ঘটনাটি ঘটেছে কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার পোড়াদহ ইউনিয়নের কাটদহ গ্রামে। গতকাল বুধবার সকালে প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে এসব তথ্য জানান পুলিশ সুপার এস এম তানভীর আরাফাত।
পুলিশ জানায়, গত ২০ জানুয়ারি মমতাজ বেগমকে হত্যার পর মুন্নাবাবু নাটক সাজায়। বলতে থাকে তার মাকে কে বা কারা অপহরণ করেছে। এ ঘটনায় তিনি মিরপুর থানায় জিডি করেন। এছাড়া রাব্বী নামের এক যুবককে অপহরণকারী সাজিয়ে মুন্নাবাবু দুলাভাইয়ের কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন।
পরবর্তী সময়ে পুলিশ ঘটনাটি তদন্ত শুরু করে। তদন্তের এক পর্যায়ে অভিযান চালিয়ে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত মুন্নার বন্ধু রাব্বীকে গ্রেফতার করে। তার স্বীকারোক্তি মতে খুনের শিকার মমতাজ বেগমের বাড়ি সংলগ্ন পুকুরে গুম করে রাখা লাশ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় উদ্ধার করে পুলিশ।
পরে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত মুন্নাবাবু ও তার চাচা আব্দুল কাদেরকে পুলিশ গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃতরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে।
নিহত মমতাজ বেগমের চার মেয়ে ও এক ছেলে। মেয়েদের বিয়ের পর স্বামীহারা মমতাজ বেগম ছেলে মুন্নাবাবুর সঙ্গেই নিজ বাড়িতে বসবাস করতেন। বসতবাড়ি, চার-পাঁচটি দোকান ঘরসহ অন্যান্য সম্পত্তির ভাগ যাতে বোনেরা না পায় সে আক্রোশবশত মুন্না তার মাকে নির্মমভাবে হত্যা করে।
২০ জানুয়ারি সন্ধ্যার পর মুন্না, তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু রাব্বী ও চাচা আব্দুল কাদের মিলে নিজ বাড়ির ঘরের মধ্যে মমতাজ বেগমকে শ্বাসরোধে হত্যা করে। হত্যার পর প্রথমে লাশ খাটের নিচে লুকিয়ে রাখা হয়। পরে লাশটি চটের বস্তায় ভরে বাড়ির পাশের ডোবায় ফেলে দিয়ে লাশ গুম করার চেষ্টা করা হয়।
এদিকে এ ঘটনায় বাদী হয়ে নিহতের ভাই তোরাব আলী মিরপুর থানায় মামলা করেন। গ্রেফতারকৃতদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
ইত্তেফাক/এমআর