শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

হাসি নেই ফুলবাড়ীর আলু চাষিদের মুখে

আপডেট : ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ২৩:৩৮

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে চলতি মৌসুমে আলুর বাম্পার ফলন দেখা গেলেও ন্যায্যমূল্য না পেয়ে বিপাকে পড়েছে কৃষকরা। প্রান্তিক কৃষকরা মাঠে অক্লান্ত পরিশ্রম করে লাভের আশায় ব্যাপক হারে আলুর চাষ করছে। কিন্তু ক্ষেতে ঘাম ছড়ানো পরিশ্রম করলেও ন্যায্য দাম থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এ অঞ্চলের কৃষকরা

উপজেলার অন্যান্য ইউনিয়নের চেয়ে নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের মানুষ রবি শস্যের উপর বেশি নির্ভরশীল। তাই গত বছরের চেয়ে এবছরও বিপুল পরিমাণ জমিতে আলুর চাষ করেছে কৃষকরা। শুক্রবার সকালে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বিস্তীর্ণ জমিতে কৃষকরা ক্ষেতের আলুর তুলতে ব্যস্ত সময় পাড় করছেন। এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় চলতি মৌসুমে আলুর বাম্পার ফলন হওয়ার পরও দাম না থাকায় অনেক কৃষক বিপাকে পড়েছে। 

উপজেলার পূর্বফুলমতি গ্রামের কৃষক মন্ডল আলী (৫০) জানান, ৫০ হাজার টাকা ঋণসহ ধার-দেনা নিয়ে উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শে এ বছর দুই বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছি। দুই বিঘা জমিতে আলুর বীজ ও ঔষধসহ মোট ৮০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। সেই সঙ্গে এ বছর আলুর বাম্পার ফলনও হয়েছে। কিন্তু আলুর দাম কম থাকায় বড় দুঃচিন্তায় আছি। বাধ্য হয়ে ৩৫০ টাকা মূল্যে আলু বিক্রি করে শ্রমিকের মজুরি ও কিছু ধার-দেনা পরিশোধ করছি। আলুর দাম না বাড়লে সব আলুই হিম ঘরে রাখবেন বলে জানিয়েছেন এই কৃষক। 

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাহাবুবুর রশিদ জানান,এ বছর উপজেলার ১০৮০ হেক্টর জমিতে কৃষকরা আলু চাষ করেছে। যা গত বছরের প্রায় দ্বিগুণ। কৃষি অফিস সব সময় কৃষকের মাঠ পর্যায়ে গিয়ে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হয়েছে। এ বছর আবহাওয়া অনুকূল থাকায় ফলনও গত বছরের চেয়ে ১৫ থেকে ২০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। করোনা মহামারির কারণে সারাবিশ্বের খাদ্যের সংকট দেখা দিয়েছে। যার কারণে আলুর দাম একটু কম। কৃষক যাতে লোকসানে না পড়ে সে কারণে কৃষি বিভাগ বিদেশে আলু রপ্তানির জন্য ব্যাপক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আশাকরি আগামী এক দেড় মাসের মধ্যে আলুর দাম বৃদ্ধি পাবে এবং কৃষক সুফল পাবে। 

উপজেলা কৃষি অফিস ও প্রান্তিক কৃষকরা জানিয়েছেন, প্রতি বিঘা জমিতে এস্টারিজ, রোসাগোল বীজ দিয়ে ভাল ফলন হলে ১০০ থেকে ১১০ মন পর্যন্ত বিঘা আলু উৎপাদন হয়। বিঘা প্রতি খরচ হয় ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা। তবে দাম না থাকায় অনেক কৃষক বাধ্য হয়ে অল্প দামেই আলু বিক্রি করে শ্রমিকের মজুরি-ধার-দেনাসহ বিভিন্ন খরচ মেটাচ্ছেন। আবার অনেক কৃষক লাভের আশায় হিমঘরে বীজের জন্য রেখে দিচ্ছেন। 

ইত্তেফাক/জেডএইচডি