কক্সবাজার ও টেকনাফে পৃথক অভিযান চালিয়ে প্রায় চার লাখ ইয়াবাসহ ৫ মাদক কারবারিকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। শুক্রবার দিবাগত রাত থেকে শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত র্যাব-৭ এবং র্যাব-১৫ পৃথক অভিযানে চালিয়ে এসব ইয়াবাসহ তাদেরকে গ্রেফতার করে।
পৃথক অভিযানে গ্রেফতারকৃতরা হলেন-টেকনাফ সাবরাং ইউনিয়নের হারিয়াখালী পশ্চিম পাড়া এলাকার মৃত বদিউর রহমানের ছেলে গুরা মিয়া (৬৫), উত্তর লম্বরী এলাকার শামসুল আলম (৩০) ও একই এলাকার জামাল হোসেন (৩৬)।
এছাড়াও গ্রেফতার হয়েছেন উখিয়ার হলদিয়াপালং পশ্চিম হলদিয়াপালং ডাকুয়াপাড়ার গুরা মিয়ার ছেলে মোহাম্মদ হোসেন (২৮) এবং একই এলাকার শাহাব মিয়ার ছেলে আফসার মিয়া (২০)।
এদেরমধ্যে মোহাম্মদ হোসেন ও আফসার মিয়াকে কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কের চেইন্দা বসুন্ধরা এ্যামিউজম্যান্ট পার্ক এলাকায় মাইক্রোবাসে তল্লাশি চালিয়ে ৮ হাজার ইয়াবাসহ আটক করা হয়।
র্যাব-১৫ এর মিডিয়া কর্মকর্তা এএসপি আবদুল্লাহ মোহাম্মদ শেখ শাদী বলেন, ‘গোপন সংবাদে খবর আসে শনিবার সন্ধ্যায় বাসে করে টেকনাফ থেকে ইয়াবার চালান কক্সবাজারের দিকে আসছে। এরপর চেইন্দা এলাকায় র্যাব-১৫ এর তল্লাশি চেকপোস্ট বসানো হয়। বাস তল্লাশিকালে হোসেন ও আফসারের চালানো মাইক্রোবাসটি ঘটনাস্থলে এলে তল্লাশি দেখে গাড়িটি পার্কিং করে তারা কৌশলে পালানের চেষ্টা করে। তখন ধাওয়া দিয়ে তাদের ধরে তাদের স্বীকারোক্তিমতে গাড়িতে বিশেষ কায়দায় লুকানো ৮ হাজার ইয়াবা জব্দ করা হয়।
অপরদিকে, শুক্রবার ভোরে সাড়ে ৩ লাখ ইয়াবাসহ গুরা মিয়াকে গ্রেফতার করে চট্টগ্রাম র্যাব-৭ এর একটি দল।
র্যাব-৭ চট্টগ্রাম এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মশিউর রহমান জুয়েল জানান, গোপন সংবাদে টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়নের হারিয়াখালী এলাকার রওজাতুল উলুম মসজিদের পশ্চিম পাশে হাফেজ উল্লাহ ভুট্টোর বসতবাড়িতে বিক্রির জন্য ইয়াবার একটি বড় চালান মজুদ করেছে বলে খবর আসে। সেই সূত্রে শুক্রবার ভোরে র্যাব-৭ এর একটি দল সেখানে অভিযান চালায়। র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে মাদক ব্যবসায়ীরা। এ সময় মো. গুরা মিয়াকে (৬৫) গ্রেফতার করা হয়।
তিনি আরও জানান, গুরা মিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি জানায়-পলাতক আসামি ফয়েজ উল্লাহর টিনশেড বসতঘরের ভেতরে সিলিং এর ওপর বিশেষ কায়দায় ইয়াবা লুকানো রয়েছে। পরে সেখানে বিশেষ কায়দায় লুকানো অবস্থায় একটি প্লাস্টিকের বস্তার ভেতর থেকে দুই লাখ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। একই আসামির তথ্য অনুযায়ী সাবরাং হারিয়াখালী এলাকার পলাতক আসামি মো. ইসমাইল এর বসতঘরের পেছনের বারান্দার চালের সঙ্গে বিশেষ কায়দায় ঝোলানো অবস্থায় একটি বস্তা থেকে আরও এক লাখ ৫০ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়।
একইদিন দিবাগত রাতে টেকনাফে পৃথক অভিযানে সাড়ে ৪৯ হাজার ইয়াবাসহ টেকনাফ সদরের উত্তর লম্বরী এলাকার শামসুল আলম (৩০) ও একই এলাকার জামাল হোসেনকে (৩৬) গ্রেফতার করে র্যাব-১৫ এর সদস্যরা।
বিষয়টি নিশ্চিত করে র্যাব-১৫ এর সহকারী পুলিশ সুপার আবদুল্লাহ মোহাম্মদ শেখ সাদী বলেন, ‘ইয়াবা বেচাকেনার খবর পেয়ে শুক্রবার রাত ২টার দিকে বরইতলী এলাকায় অভিযানে যায় র্যাবের একটি দল। এসময় সড়কে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় দুই যুবককে আটক করা হয়। তাদের কাছ থেকে পাওয়া প্লাস্টিকের বস্তা ও শপিং ব্যাগ থেকে ৪৯ হাজার ৫০০ ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। তারা দুইজনই ইয়াবা ব্যবসায়ী।’
পৃথক অভিযানে গ্রেফতারকৃত তিনজনসহ জড়িতদের বিরুদ্ধে টেকনাফ মডেল থানায় মাদকদ্রব্য আইনে মামলা এবং আসামিদের টেকনাফ থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান।
ইত্তেফাক/এএএম