শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

রূপগঞ্জে প্রাণ আরএফএল কোম্পানির কর্মচারীদের সঙ্গে গ্রামবাসীর সংঘর্ষ

আপডেট : ০৯ মার্চ ২০২১, ০৭:১৯

রূপগঞ্জ উপজেলার দাউদপুর ইউনিয়নের কলিঙ্গা এলাকায় শীতলক্ষ্যা নদী তীরের জমি প্রাণ আরএফএল কোম্পানি কর্তৃক বালু দিয়ে ভরাটকে কেন্দ্র করে ঐ কোম্পানির কর্মচারীদের সঙ্গে গ্রামবাসীর রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ৩৭ জন আহত হয়। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শটগানের দুই রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।

জানা যায়, নরসিংদীর পলাশ থানার ডাঙ্গা কাজিরচর এলাকায় শীতলক্ষ্যা নদীর পূর্ব পাশে প্রাণ আর এফ এল কোম্পানি অবস্থিত। আর নদীর পশ্চিম পাশেই রয়েছে কলিঙ্গা গ্রামটি। প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ জানায়, ঐ কোম্পানি তাদের সুবিধার্থে শীতলক্ষ্যা নদীর পশ্চিম পাশে কলিঙ্গা গ্রামে গাড়ি পার্কিংয়ের স্থান ও জেটি নির্মাণের উদ্দেশ্যে বালু ভরাট শুরু করে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, অনেকের জমি না কিনেই বালু ভরাট করছিল প্রতিষ্ঠানটি। সেখানে পুরো জমি না কিনে বালু ভরাট করতে গেলে গ্রামবাসী বাধা দেয়। কিন্তু গ্রামবাসীর বাধা অগ্রাহ্য করে প্রাণ আরএফএল কোম্পানি কর্তৃপক্ষ তাদের কর্মচারী ও বহিরাগত সন্ত্রাসীদের নিয়ে বালু ভরাটের কাজ চালিয়ে যেতে থাকে। এরপর গ্রামবাসী ও কোম্পানির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা শুরু হয়।

একপর্যায়ে কোম্পানির কর্মকর্তা কর্মচারী ও পলাশ থানা থেকে দল বেঁধে লোকজন এসে গ্রামবাসীর ওপর হামলা চালায়। তখন গ্রামবাসীও চালায় পালটা হামলা। উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পালটা ধাওয়া, ইটপাটকেল নিক্ষেপ চলতে থাকে ও এক পর্যায়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ বেঁধে যায়। সংঘর্ষে পথচারী কামাল হোসেন, কলিঙ্গা গ্রামের কাইয়ুম, ফোরকান, ফয়সাল মিয়া, সানি, বিপ্লব, বেলায়েত, ফয়সাল আহাম্মেদ, আল-আমিন, তপু, রাসেল এবং প্রাণ আরএফএল কোম্পানির আজিম, রাসেল, মাহমুদ, শিশিরসহ উভয় পক্ষের অন্তত ৩৭ জন আহত হয়। খবর পেয়ে রূপগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে দুই রাউন্ড শটগানের ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়।

কলিঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা ও প্রাণ আরএফএল কোম্পানির দখলে নেওয়া জমির মালিক নজরুল ইসলাম বলেন, কলিঙ্গা গ্রামের হারেছুল, জুলহাস, কাইয়ূম, খালেক এবং আমার জমি না কিনেই জোরপূর্বক বালু ভরাট করতে যায় প্রাণ আরএফএল কোম্পানির কর্মকর্তা কর্মচারীরা। বাধা দিতে গেলেই কোম্পানির প্রশাসনিক কর্মকর্তা ফয়সাল আহাম্মেদের নেতৃত্বে গ্রামবাসীর ওপর হামলা চালানো হয়। হামলায় অস্ত্রধারী বহিরাগতরা সন্ত্রাসীরা অংশ নেয়।

এ ব্যাপারে প্রাণ আরএফএল প্রশাসনিক কর্মকর্তা ফয়সাল আহাম্মেদ বলেন, আমাদের নিজের জমিতে বালু ভরাট করছিলাম। স্থানীয়রা অন্যায়ভাবে কাজে বাধা দেওয়ায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে রূপগঞ্জ থানার ওসি মহসিনুল কাদির বলেন, এই ঘটনায় গ্রামবাসীর পক্ষ থেকে তৌহিদ নামে একজন বাদী হয়ে অভিযোগ দায়ের করেছেন। তবে এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি।

ইত্তেফাক/এমআর