নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলায় মিষ্টি কুমরা চাষ করে বিপাকে পড়েছে কুমড়া চাষিরা। ক্রেতা না থাকায় উৎপাদিত মিষ্টি কুমড়া ক্ষেতেই নষ্ট হতে বসেছে। স্থানীয় কুমড়া ব্যবসায়ীরা ৩ থেকে ৫ টাকা কেজি দরে কুমড়া ক্রয় করেছেন। বাধ্য হয়ে আসল টাকা উঠানোর জন্য ওই দামেই কুমড়া বিক্রি করছেন। ফলে দুই থেকে তিন মন মিষ্টি কুমরা বিক্রি করে এক কেজি গরুর মাংসও কিনতে পারছে না চাষিরা।
জানা গেছে, কিশোরগঞ্জ উপজেলার চাষিরা আগাম আলু চাষের পর পতিত জমিতে ভুট্টা চাষ করে থাকেন। কিন্তু এবার কৃষি বিভাগের উৎসাহে বিস্তর জমিতে মিষ্টি কুমড়ার চাষ করেছেন কৃষকরা। কৃষকরা জানিয়েছেন, করোনাকালিন সময়ে কৃষি প্রণোদনার আওতায় কৃষি অফিস থেকে বিনামূল্যে কুমড়ার বীজ, সার ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় উপকরণ বিতরণ করে কৃষি বিভাগ।
বাহাগিলি ইউনিয়নের কুমড়া চাষি, রবিউল ইসলাম বলেন, অতিরিক্ত লাভের আশায় এবং কৃষি অফিসের পরামর্শে এবার ৪ বিঘা জমিতে মিষ্টি কুমড়া চাষ করি। সঠিক পরিচর্যার কারণে কুমড়া ফলনও হয়েছে দ্বিগুণ। তিনি আরও জানান, চার বিঘা জমিতে কুমড়া চাষ করে রাসায়নিক সার, কীটনাশক, সেচ এবং শ্রমিক বাবদ ব্যয় হয়েছে ৫০ হাজার টাকা। কিন্তু কুমড়া বিক্রি করেছি তিন থেকে ৫ টাকা কেজি দরে। ফলে আমার আসল থেকে ৩০ হাজার টাকা লোকসান।
পুটিমারী ইউনিয়নের কুমড়া চাষি আজেদুল ইসলাম বলেন, আমি তিন বিঘা জমিতে কুমড়া চাষ করে সর্বস্বান্ত হয়েছি। তাই কুমড়া ক্ষেত নষ্ট করে জমিতে আবার ভুট্টা চাষ করেছি।
নিতাই ইউনিয়নের কাচারির হাট গ্রামের কুমড়া চাষি রিয়াজুল ইসলাম বলেন, আমি দুই বিঘা জমিতে মিষ্টি কুমড়া চাষ করেছি। গতকাল প্রতিমণ কুমড়া ১২০ টাকা মন দরে বিক্রি করেছি। সে অনুযায়ী তিনমণ মিষ্টি কুমড়া বিক্রি করে এক কেজি মাংস ক্রয় করতে পারছিনা।
কিশোরগঞ্জ উপজেলা উপ সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা আজিজার রহমান বলেন, নিরাপদ সবজী উৎপাদনের জন্য কৃষি বিভাগের সহযোগিতা ও পরামর্শের কারণে এবার মিষ্টি কুমড়ার ব্যাপক ফলন বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু দাম না থাকায় কৃষক ফসলের ন্যায্য মূল্য পাচ্ছেনা।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান বলেন, এবার কিশোরগঞ্জ উপজেলায় প্রায় ৩শ একর জমিতে কুমড়া চাষ হয়েছে। উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শে এবার মিষ্টি কুমড়ার ব্যাপক ফলন হয়েছে। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির কারণে বাহির থেকে ক্রেতা না আসায় কৃষক সঠিক দাম পাচ্ছেনা।
ইত্তেফাক/এমআর