বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

পুকুরের পানিই খেতে হচ্ছে তাদের! 

আপডেট : ২৩ এপ্রিল ২০২১, ১৭:১৭

বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ পৌর সদর সহ ১৬ ইউনিয়নে খাবার পানির তীব্র সংকট চলছে। সুপেয় পানির লাগাতার এ সংকটের কারনে ডায়রিয়া সহ নানা পেটের পিড়ায় ভূগছে শত শত পরিবার। এ সংকট নিরসনে কোন উদ্যোগ না থাকায় সমস্যা আরো প্রকট হচ্ছে।
 
উপজেলা পৌর সদরের অর্ধ লক্ষাধিক লোকের একমাত্র খাবার পানির উৎস থানার পুকুর। থানার পুকুরের খনন কার্য কয়েক মাস ধরে চলছে। এজন্য সেচ দিয়ে পুকুরের পানি সরিয়ে ফেলা হয়েছে। আর এ কারনেই পৌরবাসী খাবার পানির চরম সংকটে ভুগছে। পার্শ্ববর্তী প্রশাসন চত্বরে আরো দুটি পুকুর থাকলেও একটির পানি তলানিতে। অপর পুকুরের পানি নষ্ট হয়ে নীলবর্ণ ধারণ করেছে। পানি থেকে গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। এ পুকুরের পানিই এখন পৌরবাসীর একমাত্র ভরসা। পুকুরের পাশের ফিল্টারের মাধ্যমে এলাকার লোকজন খাবার পানি সংগ্রহ করলেও তা থেকে গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। আর এ পানি পান করে ডায়রিয়া সহ নানা পেটের পিড়ায় ভুগছে এলাকার মানুষ।

থানা পুকুরের পার্শ্ববর্তী বাসিন্দা আবুবকর হাওলাদার জানান, প্রশাসন চত্বরের পুকুরের পানি পান করে তার পরিবারের সবাই ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়েছে। যার কারনে তিনি বিকল্প হিসেবে জারের পানি কিনতে বাধ্য হচ্ছেন। এলাকার শত শত পরিবারে পানির হাহাকার চলছে। গৃহবধূ পিয়ারা বেগম বলেন, উপজেলার পুকুরের পানি নষ্ট হয়ে গেছে। পানি থেকে গন্ধ বেরুচ্ছে। পৌর বাসিন্দা লোকমান হোসেন বলেন, খাবার পানিই পাচ্ছিনা। সুপেয় পানির কথা ভাবাই যাচ্ছে না। 

উপজেলার ১৬ ইউনিয়নের একই চিত্র। পানির জন্য এলাকাবাসীকে নৌকা ভ্যানে পায় হেঁটে ছুটতে হয় মাইলের পর মাইল। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল দপ্তরের উদ্যোগে সুপেয় পানির সংকট নিরসনে ২২ লক্ষ টাকা ব্যায়ে উপজেলার ১৬ ইউনিয়নে ২৫ টি পানির ফিল্টার স্থাপিত হলেও শুরু থেকে এর মাধ্যমে জনসাধারণ কোন সুবিধা পাচ্ছে না। তাছাড়া উপজেলার ১৬ ইউনিয়নে অর্ধসহস্রাধিক পিএসএফ (পন্ডস স্যান্ড ফিল্টার) তা প্রায়ই অকেজো হয়ে পড়ে আছে।
 
উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী মনিরুল ইসলাম জানান, তার অফিস সংলগ্নসহ ২/৩টি ছাড়া ২২ লক্ষ টাকা ব্যায়ে নির্মিত ফিল্টার সচল রয়েছে। অনেকটায় রিপিয়ারিং কাজ চলছে। কিন্তু তার বক্তব্যে বাস্তব চিত্র সম্পূর্ণ বিপরীত বলে এলাকার লোকজন জানায়। 

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. দেলোয়ার হোসেন জানান, মূলতঃ অনাবৃষ্টির জন্য পানির সংকট দেখা দিয়েছে। উপজেলা চত্বরের পুকুরের পানির নানামুখী ব্যবহারের জন্য সংকট আরো চরম হয়েছে। 

ইত্তেফাক/এসজেড