শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

শরীরে মৃত্যুর কারণ লিখে গৃহবধূর আত্মহত্যা, স্বামী গ্রেফতার

আপডেট : ১০ জুন ২০২১, ১৮:৪৩

বরিশালের আগৈলঝাড়ায় শরীরে মৃত্যুর কারণ জানিয়ে গৃহবধূর আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। আত্মহত্যার আগে নিজের শরীরে কলম দিয়ে অভিযুক্ত স্বামী, ভাই ও ভাইয়ের স্ত্রীর নাম লিখে রেখে গেছে গৃহবধূ টুম্পা। এঘটনায় আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে টুম্পার বড় বোন বাদি হয়ে থানায় মামলা দায়ের করলে পুলিশ অভিযুক্ত স্বামী স্বপন মণ্ডলকে গ্রেফতার করেছে।

থানার ওসি মো. গোলাম ছরোয়ার এজাহারের বরাত দিয়ে জানান, মাদারীপুর জেলার ডাসার থানার নবগ্রাম এলাকার বাসিন্দা মৃত বঙ্কিম মণ্ডলের ছেলে স্বপন মণ্ডলের (৪২) সাথে ১১ বছর পূর্বে টুম্পার (৪০) বিয়ে হয়। বিয়ের পরে স্বামী, স্বামীর ভাই ও ভাইয়ের স্ত্রী শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের কারণে ৭/৮বছর আগে স্বপন তার বাবার বাড়ি ছেড়ে স্ত্রী টুম্পাকে নিয়ে আগৈলঝাড়া উপজেলার রাজিহার ইউনিয়নের রামান্দেরআক গ্রামে শ্বশুর বাড়িতে বসবাস শুরু করে। তাদের ৮/৯ বছরের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। 

জমিজমা ও পারিবারিক সমস্যা সমাধানের জন্য মঙ্গলবার (৮ জুন) সকালে টুম্পা তার শ্বশুরবাড়ি নবগ্রাম গেলে সেখানে তার স্বামীর ভাই বিবেক মণ্ডল ও ভাইয়ের স্ত্রী রীতা রানী মণ্ডল তাকে খারাপ ভাষায় গালমন্দ ও মানসিক নির্যাতন করে বাড়ি থেকে টুম্পাকে বের করে দেয়।  
স্বামী, স্বামীর ভাই ও ভাইয়ের স্ত্রীর নির্যাতন সইতে না পেরে মঙ্গলবার রাতেই টুম্পা নিজের ঘরে বিষ পান করে আত্মহত্যা করে। বুধবার সকালে খবর পেয়ে পুলিশ টুম্পার লাশ খাটের উপর থেকে উদ্ধার করে বরিশাল মর্গে প্রেরণ করে। 

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মিশু জানান, তিনি টুম্পার সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করার সময় টুম্পার মৃতদেহের হাঁটুর উপর অংশে কলম দিয়ে তার মৃত্যুর কারণ ও মৃত্যুর জন্য তার নিজের পায়ের হাঁটুর উপর অংশে স্বামী স্বপন মণ্ডল, ভাসুর বিবেক মণ্ডল ও বিবেকের স্ত্রী রীতা মণ্ডলের নাম লিখে রেখে যায়। এছাড়াও টুম্পাকে তার মায়ের শ্মশানের কাছে সৎকার করার আকুতি রেখে যায়। 

নিজের শরীরে মৃত্যুর কারণ ও দায়ী ব্যক্তিদের নাম দেখে টুম্পার বড় বোন কল্পনা অধিকারী বুধবার (৯ জুন) বাদি হয়ে টুম্পার আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে উল্লেখিত তিন জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন, নং-৬(৯.৬.২১)। 

ওই মামলায় প্রধান অভিযুক্ত টুম্পার স্বামী স্বপন মণ্ডলকে বুধবার গ্রেফতার করেছে পুলিশ। টুম্পার পোস্টমর্টেম শেষে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।  

ইত্তেফাক/এমএএম