শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

শরীরে করোনা উপসর্গ, সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন না আবু ত্ব-হা

আপডেট : ১৯ জুন ২০২১, ১৯:৪১

আদালতের মাধ্যমে আবু ত্ব-হা ও তার সঙ্গীদের নিজ নিজ পরিবারের জিম্মায় হস্তান্তরের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন না আবু ত্ব-হা। এর আগে শুক্রবার (১৮ জুন) রাত সাড়ে ১১টার দিকে আদালতের মাধ্যমে তাদের পরিবারের জিম্মায় হস্তান্তর করে আবু ত্ব-হা ও তার সঙ্গীদের।

জানা গেছে, শনিবার (১৯ জুন) থেকে আবু ত্ব-হা পারিবারিক আইসোলেশনে আছেন। তবে কোথায় আছেন সেটিও বলতে নারাজ তার পরিবার। এছাড়া তার মা-বোন কেউই কথা বলতে রাজি নন। সুস্থ হয়ে তিনি মিডিয়ার সাথে কথা বলবেন বলে জানানো হয়েছে পরিবারের পক্ষ থেকে।

আবু ত্ব-হার ভাগ্নে সিরাজুল ইসলাম জানিয়েছেন, ত্ব-হার মধ্যে করোনার উপসর্গ রয়েছে। তিনি আইসোলেশনে থাকতে চাইছেন। এ জন্য তিনি সুস্থ হয়ে মিডিয়ার সামনে কথা বলবেন বলে আমাদের জানিয়েছেন তবে এখন নয়। করোনা পরীক্ষার স্যাম্পল দেয়া হয়েছে কি-না জানতে চাইলে তার ভাগ্নে সিরাজুল ইসলাম জানান, আপাতত স্যাম্পল দেয়ার চিন্তাভাবনা নেই। তিনি পারিবারিক আইসোলোশনে থাকবেন ১৪ দিন। এরপর পরিস্থিতি বুঝে স্যাম্পল দেয়ার সিদ্ধান্ত নেবে পরিবার।ত্ব-হার ভাগ্নে সিরাজ আরো জানান, তার (ত্ব-হার) শরীরে জ্বর, গলা-গায়ে ব্যথা ও কাশি আছে।

এদিকে নিখোঁজের ৮দিন পর আবু ত্ব-হা মোহাম্মদ আদনানকে সুস্থ ও স্বাভাবিক অবস্থায় নিরাপদে পরিবারের হাতে তুলে দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও পুলিশ প্রশাসনের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন তার মামা আমিনুল ইসলাম। আর আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া আদায় করেছেন মা আজেদা বেগম।

আবু ত্ব-হার মা আজেদা বেগম বলেন, সন্তান বাড়ি ফেরায় সরকারের কাছে কৃতজ্ঞ, আলহামদুলিল্লাহ। ছেলেকে ফিরে পেয়েছি। আটদিন ঠিক মতো ঘুমাতে পারিনি। আল্লাহর রহমতে আমার ছেলে জীবিত ফিরে এসেছে, এজন্য শুকরিয়া আদায় করছি। আর যেন কোনো বিপদ-আপদ না হয়। 

No description available.
সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন ত্ব-হার মামা আমিনুল ইসলাম। ছবি: ইত্তেফাক

শুক্রবার (১৮ জুন) রাত পৌনে ১২টার দিকে রংপুর আদালত চত্বরে সাংবাদিকদের ত্ব-হার মামা আমিনুল ইসলাম বলেন, তিনজনের জবানবন্দি নেওয়ার পর তাদের ‘নিজ জিম্মায়’ ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। আলহামদুলিল্লাহ আমরা তাকে ফিরে পেয়েছি। এজন্য মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে শুকরিয়া জানাই। আমি প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আবু ত্ব-হার নিখোঁজের ঘটনায় ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তার খোঁজ নেওয়ার কথা তিনি জানিয়েছিলেন। এই সময়ের মধ্যেই তাকে আমরা পেয়েছি। 

তিনি বলেন, আমি দেশবাসীর নিকট চির কৃতজ্ঞ যে সবাই এত ভালবাসা দেখিয়েছেন। তার জন্য সবাই দোয়া করেছেন। খোঁজ-খবর নিয়ে এবং আমাদের পাশে থেকেছেন। আপনাদের সবার মঙ্গল হোক। 

শুক্রবার রাত সোয়া ৯টার দিকে রংপুর মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) কার্যালয় থেকে তাদের আদালতে নেওয়া হয়। সেখানে স্বেচ্ছায় জবানবন্দি দেন আবু ত্ব-হা মোহাম্মদ, তার সঙ্গী আব্দুল মুকিত ও গাড়িচালক আমির উদ্দিন ফয়েজ।

রংপুরের কোর্ট ইন্সপেক্টর নাজমুল ইসলাম জানান, ইসলামি বক্তা আবু ত্ব-হা মোহাম্মদ আদনানসহ তিনজনকে রাত সোয়া ৯টার দিকে ডিবি কার্যালয় থেকে আদালতে আনা হয়। সেখানে মেট্রোপলিটন জুডিশিয়াল আদালতের বিচারক কে এম হাফিজুর রহমানের কাছে তারা স্বেচ্ছায় জবানবন্দি দেন। পরে আদালত ‘স্বেচ্ছায় আত্মগোপনে’ যাবার বিষয়টি বিবেচনা করে তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তরের নির্দেশ দেন। আবু ত্ব-হা নিখোঁজের ঘটনায় রংপুরে দুটি জিডি হয়েছিল। তার মা একটি জিডি করেন এবং তার সঙ্গে নিখোঁজ থাকা আমিরুদ্দিনের ভাই ফয়সাল।

স্বেচ্ছায় সঙ্গীসহ আত্মগোপনে ছিলেন ত্ব-হা: ডিবি

আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী আবু ত্ব-হা মোহাম্মদ আদনানসহ বাকিদেরকে স্ব-স্ব পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে জানান কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুর রশিদ। আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে তারা স্বেচ্ছায় আত্মগোপনে থাকার বিষয়টি স্বীকার করেন। তাদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ না থাকায় পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

রংপুরে ওয়াজ মাহফিল শেষে ঢাকার বাসায় ফেরার পথে আবু ত্ব-হাসহ চারজন নিখোঁজ হন বলে অভিযোগ ওঠে। আবু ত্ব-হার পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়, ঢাকার গাবতলী থেকে তারা নিখোঁজ হন। এ সময় ত্ব-হার সঙ্গে ছিলেন আরও তিনজন। এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে তাদের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না।

ইত্তেফাক/এসজেড