দিনাজপুরের নবাবগঞ্জে পরচুলা বা ‘হেয়ার ক্যাপ’ তৈরি কারখানায় কাজ করে এক জন নারী মাসে আয় করছেন ৮-১০ হাজার টাকা। স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছেন অনেক অসহায় নারী। এ কারখানাগুলোর মাধ্যমে প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের অসহায় ও দরিদ্র নারীদের সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের অপার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
কয়েক দিন আগেও চম্পা নামের এক জন প্রতিবন্ধী নারী বেকার অবস্থায় তার পরিবারের বোঝা হয়ে ছিলেন। সেই চম্পা এখন হেয়ার ক্যাপ তৈরি করে স্বাবলম্বী। এখন আর তাকে তার পরিবারের লোকজন বোঝা মনে করছেন না। সরেজমিনে উপজেলা সদরের শ্রীকৃষ্ণপুর গ্রামে কয়েক মাস আগে চালু হওয়া মেসার্স সায়মা হেয়ার এন্টারপ্রাইজ উইকড কারখানায় গিয়ে দেখা মেলে চম্পার মতো প্রতিবন্ধী, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর নারী, দরিদ্র পরিবারের গৃহিণী, স্বামী পরিত্যক্তা, শিক্ষার্থীসহ ৮৫ জন নারী হেয়ার ক্যাপ বানানোর কাজ করছেন।
ঐ কারখানার তত্ত্বাবধায়ক মো. সামুসজ্জামান বলেন, মাত্র সাত দিন প্রশিক্ষণ নিয়েই একজন নারী নিয়মিত শ্রমিক হিসেবে কাজ শুরু করতে পারছেন। একজন নারী শ্রমিক সপ্তাহে দুই-তিনটি করে হেয়ার ক্যাপ তৈরি করছেন। প্রতিটি হেয়ার ক্যাপ তৈরিতে মজুরি মিলছে সাইজ অনুযায়ী ৫০০ থেকে ১ হাজার টাকা। এর মধ্যে উপজেলাতে ১০টি কারখানা গড়ে উঠেছে। এতে প্রায় ২ হাজার নারী শ্রমিকের কর্মসংস্থান হয়েছে। তিনি জানান, বিদেশে টাক মাথার জন্য ব্যবহার করা হয় এসব পরচুলা। কারখানায় উৎপাদিত হেয়ারক্যাপ চীনসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে উপজেলা পরিষদের নারী ভাইস চেয়ারম্যান মোছা. পারুল বেগম জানান, হেয়ার ক্যাপ কারখানাগুলোতে যেমন লাভবান হচ্ছেন উদ্যোক্তারা, তেমনি লাভবান হচ্ছে সমাজের অবহেলিত নারীরা। এ ধরনের কারখানা আরও বৃদ্ধি করা হলে এলাকার নারীদের সার্বিক উন্নয়ন হবে।
ইত্তেফাক/এমআর