শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

স্ত্রীর স্বীকৃতি টাকায় মীমাংসা, সালিশি বৈঠকে তরুণীর বিষপান

আপডেট : ০৫ আগস্ট ২০২১, ০৮:১৩

টাঙ্গাইলের সখীপুরে স্ত্রীর মর্যাদা পেতে বিষের বোতল হাতে নিয়ে গত ৫দিন ধরে অনশনরত এক তরুণী সালিশি বৈঠকেই বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন। বুধবার (৪ আগস্ট) দুপুরে উপজেলার দাড়িয়াপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। 

গত শনিবার (৩১ জুলাই) থেকে সখীপুর উপজেলার দাড়িয়াপুর ফাইলার পাগলার (ফালু চাঁন) মাজারপাড় এলাকায় আবদুর রহিমের বাড়িতে স্ত্রীর অধিকার আদায়ের দাবিতে সে অনশন করছেন।

স্থানীয়রা জানান, সখীপুর উপজেলার দাড়িয়াপুর ফাইলা পাগলার মাজার এলাকার মৃত মোজাফর আলীর ছেলে আবদুর রহিম ও ভূঞাপুর উপজেলার এক তরুণী গাজীপুর চৌরাস্তায় একটি এনজিওতে চাকরি করতেন। এ সময় তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরে উভয়ের সম্মতিতে ২০১৭ সালের ৩ আগস্ট ৭ লাখ টাকা দেনমোহরে তারা বিয়ে করেন। গাজীপুর চৌরাস্তার ভাওয়াল কলেজ সংলগ্ন একটি বাসা ভাড়া নিয়ে স্বামী-স্ত্রী হিসেবে থাকতেন। কিছুদিন আগে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে আবদুর রহিম বাসা থেকে চলে আসেন। তার ব্যবহৃত মুঠোফোনের নম্বর পরিবর্তন করে গ্রামের বাড়ি দাড়িয়াপুরে অবস্থান করছিলেন। ওই তরুণী নানাভাবে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তাকে স্ত্রী হিসেবে মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানান আবদুর রহিম। ৩১ জুলাই শনিবার স্ত্রীর অধিকার আদায়ের দাবিতে কাবিননামা এবং বিষের বোতল হাতে নিয়ে স্বামীর বাড়িতে অবস্থান নেন। তার আসার খবর শুনে আবদুর রহিম ও তার পরিবারের লোকজন ঘরে তালা ঝুলিয়ে সটকে পড়েন। বিষয়টি মিমাংসার জন্যে বুধবার সখীপুরের দাড়িয়াপুর আবাদি বাজার এলাকায় দুইপক্ষের লোকজন নিয়ে সালিশি বৈঠক বসে। 

বৈঠকে দাড়িয়াপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনছার আলী আসিফ, সাবেক চেয়ারম্যান শাইফুল ইসলাম শামীম, শিক্ষক সানোয়ার হোসেন মাস্টার, ইউপি সদস্য শাহীন মিয়া এবং ভূয়াপুরের সন্দুলা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম, অনশনরত সুলতানার বড়ভাই শামীম ও তার পক্ষের লোকজন উপস্থিত ছিলেন। সালিশি  বৈঠকে মেয়েকে তিন লাখ ১০ হাজার টাকা দিয়ে উপস্থিত উভয়পক্ষের সম্মতিতে তাদের ছাড়াছাড়ির সিদ্ধান্ত হয়। উভয় পক্ষ সিদ্ধান্তটি মেনেও নেয়। কিন্তু অভিযুক্ত আব্দুর রহিম একলাখ টাকা নগদ পরিশোধ করে বাকি টাকা দিতে ১০ দিনের সময় চান। পরে ওই তরুণী হঠাৎ বিষের বোতল বের করে নিজের মুখে ঢেলে দেন। তাৎক্ষণিক তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ওই তরুণী সুস্থ হলে এ বিষয়ে পরবর্তীতে আবার বসা হবে বলেও জানান স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আনছার আলী আসিফ।

ইত্তেফাক/এসজেড