শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

যে কারণে অনিশ্চয়তায় নাগশ্বেরীর ২৮৫ শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ 

আপডেট : ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৯:০১

দেড় বছর ধরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার পর গত ১২ সেপ্টেম্বর খুলেছে সারাদেশের স্কুল-কলেজ। নিয়ম মেনে শুরু হয়েছে শিক্ষার্থীদের পাঠদান কার্যক্রমও। কিন্তু পাঠদানের উপযোগী কক্ষ না থাকায় এখনো খোলা সম্ভব হয়নি নাগেশ্বরী উপজেলার কন্যামতি আকবর হোসেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। তাই শুরুও হয়নি পাঠদান কার্যক্রম। এরফলে চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছে ২৮৫ শিক্ষার্থীর পড়ালেখা।

বিদ্যালয়-সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে,  ‘১ হাজার ৫০০ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ১৭ লাখ ৪৩ হাজার টাকা ব্যয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগ ২০১১-১২ অর্থবছরে নাগেশ্বরী উপজেলার নারায়ণপুরে ‘কন্যামতি আকবর হোসেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়’-এর আধাপাকা একটি ভবন নির্মাণ করা হয়ে। বর্তমানে এই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সংখ্যা ২৮৫ জন শিক্ষার্থী। গত ৩ মাস আগে বিদ্যালয় ভবনটি গঙ্গাধর নদের ভাঙনের মুখে পড়লে এর টিন, ইট খুলে রাখা হয় জনৈক লালচান মিয়ার বাড়িতে। বিদ্যালয়ের কার্যক্রম চালাতে তার বাড়ির পাশে নিচু জমিতে তোলা হয় একটি টিনসেড ঘর। পরে সে ঘরেও রাখা হয় পুরনো ভবনের জানালা, দরজা, কাঠ, টিন, ইটসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম। প্রতিষ্ঠানের  চেয়ার, বেঞ্চ , সাইনবোডসহ অন্য জিনিসপত্র রাখা হয় গ্রামের বিভিন্ন বাড়িতে। ফলে এখন সেখানে শিক্ষার্থীদের পাঠদানের জন্য নেই কোনো উপযোগী স্থান বা কক্ষ। তাই এখনো চালু হয়নি পাঠদান কার্যক্রম। 

বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থী জানায়, বিদ্যালয় খোলার সংবাদে গত রবিবার তারা স্কুলে যায়। সেখানে  দাঁড়ানোর মতো কোনো পরিবেশ না থাকায় বাড়ি ফিরে যায় তারা।   

অভিভাবক লালচান মিয়া বলেন, ‘স্কুলের জায়গা নদী ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে। নতুন করে স্কুল ঘর তোলার জন্য আমি জায়গা দিয়েছি। তবে স্থানটি নিচু হওয়ায় সামান্য বৃষ্টির পানিতে কাদা জমে যায়। তখন লেখাপড়ার কোনো পরিবেশ থাকে না।’
 
বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ ইউছুফ আলী বলেন, ‘ভেঙে যাওয়া বিদ্যালয়ের টিন দিয়ে সেখানে একটি ছাপড়া ঘর তোলা হচ্ছে। মাঠে কাদা পানি আছে। তবে আকাশ ভালো থাকলে তা এক-দুই দিনের মধ্যে শুকিয়ে যাবে। তখন সেখানেই পাঠদান কার্যক্রম শুরু করা হবে। এছাড়া, শিক্ষার্থীদের ক্লাসে আসার জন্য মাইকিং করা হচ্ছে।’

সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার (এটিইও) নওশাদ আলী বলেন, ‘বিদ্যালয়টি নদীগর্ভে চলে যাওয়ার পর অন্য জায়গায় একটি ঘর তোলা হয়েছে। বন্যা ও বৃষ্টির পানিতে মাঠসহ ঘরের মেঝে ডুবে থাকায় ১২ তারিখে পাঠদান শুরু করা সম্ভব হয়নি।’

উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তফা জামান বলেন, ‘বিদ্যালয়টি সচল রাখতে পুরনো টিন দিয়ে একটি ছাপড়া ঘর তৈরি করতে প্রধান শিক্ষককে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এজন্য উপজেলা পরিষদ থেকেও ২০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।’ আগামী সপ্তাহ নাগাদ পাঠদানের জন্য বিদ্যালয়টি পুরোপুরি প্রস্তুত হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। 

 

ইত্তেফাক/এনই/ইউবি