শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

বরাদ্দের ১০ গুণ জমি দখলে চট্টগ্রাম আইনজীবী সমিতির!

আপডেট : ২২ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০২:৩৪

চট্টগ্রামে আদালত এলাকায় জেলা আইনজীবী সমিতির অনুকূলে ১২ দশমিক ৯০ শতক জমি বরাদ্দ দেওয়া হলেও তারা নির্ধারিত বরাদ্দের চেয়ে ১০ গুণের বেশি জমি অবৈধভাবে দখলে রেখেছে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

অবৈধভাবে জমি দখলসহ লিজের শর্ত ভঙ্গের অভিযোগে বরাদ্দ বাতিলের চিন্তাভাবনা চলছে বলে সূত্রটি জানিয়েছে। তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করে আইনজীবী সমিতি নেতারা বলেছেন, তাদের দখলে অবৈধ জমি নেই। লিজের জমির বাইরে যে পরিমাণ জমি তাদের দখলে রয়েছে তা আদালতের ডিক্রিমূলে প্রাপ্ত। 

আদালতের আদেশের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসন অতীতে কখনো আপিল করেনি। আপিলের সময়সীমাও পার হয়ে গেছে। এ কারণে আদালতের ডিক্রি বলবৎ রয়েছে ধরে নিয়ে আইনজীবী সমিতিকেই এসব জমির বৈধ স্বত্ববান বলে গণ্য করতে হবে।

উল্লেখ্য, আদালত এলাকায় আইনজীবীদের জন্য দুটি নতুন ভবন নির্মাণকে কেন্দ্র করে বিরোধে জড়িয়েছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন ও জেলা আইনজীবী সমিতি। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ১৯৭৭ সালে তত্কালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের নির্দেশে চট্টগ্রামের পরীর পাহাড়ে আদালত এলাকায় জেলা আইনজীবী সমিতিকে ১২ দশমিক ৯০ শতক জমি বরাদ্দ দেওয়া হয়। 

জানা গেছে, লিজ প্রাপ্তির ৪৪ বছর পরেও সেই দলিল দেখিয়ে আইনজীবী সমিতি আজ পর্যন্ত তাদের নামে কোনো রেকর্ড বা খতিয়ান সৃষ্টি করেনি এবং ভূমির খাজনাও পরিশোধ করেনি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা প্রশাসনের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, আইনজীবী সমিতি ১২ দশমিক ৯০ শতক জায়গা প্রাপ্তির বিষয়টি ইচ্ছাকৃতভাবেই গোপন রেখেছে। কারণ খতিয়ান সৃজনের উদ্যোগ নিলে ১২ দশমিক ৯০ শতক জমির পরিমাণটি নির্ধারিত হয়ে যাবে। 

আইনজীবী সমিতি লিজ দলিলের বেশ কয়েকটি শর্ত লঙ্ঘন করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, লিজের জমি ও লিজ বহির্ভূত ১ একরের বেশি জমির ওপর তারা একে একে পাঁচটি ভবন নির্মাণ করলেও শর্ত অনুযায়ী ভবন নির্মাণের আগে জেলা প্রশাসনের অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন মনে করেনি। আইনজীবী ভবনে নির্মাণ ত্রুটি আছে এবং তা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভবনের পেছনের অংশে ফাটল দেখা দিয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট এনামুল হক ইত্তেফাককে বলেন, লিজের জমির বাইরে আইনজীবী সমিতির দখলে যে পরিমাণ জমি রয়েছে তা আদালতের ডিক্রিমূলে প্রাপ্ত। 

উপরন্তু জেলা প্রশাসন আমাদেরকে ডিক্রি অনুযায়ী জমির সীমানা পরিমাপ করে দিয়েছে বলেই ধরে নিতে হবে। চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মো. মমিনুর রহমান বলেন, এ বিষয়ে সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে কাজ শুরু হয়েছে।

ইত্তেফাক/এএএম