বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

কুমিল্লার সেই পূজামণ্ডপে ছিল না সিসি ক্যামেরা ও পাহারাদার

আপডেট : ১৫ অক্টোবর ২০২১, ০২:৪১

কুমিল্লার সেই পূজামণ্ডপে ছিল না সিসি ক্যামেরা। এছাড়া পাহারাদার ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও না থাকার সুযোগটি গ্রহণ করে দুর্বৃত্তরা। অথচ শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বৈঠকে দেশের সব পূজামণ্ডপে সিসি ক্যামেরা, পাহারাদার ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের রেখে নিরাপত্তা নিশ্চিতের নির্দেশনা ছিলো। ওই বৈঠকে পুলিশের আইজি, র‍্যাবের ডিজি, সব গোয়েন্দা সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। নির্দেশনা ছিলো, পুরো পূজামণ্ডপ সিসি ক্যামেরার আওতায় থাকতে হবে। ২৪ ঘণ্টা পাহারাদার থাকবে। এছাড়া বাইরে থাকবে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।

কিন্তু তিনটি নির্দেশনাই কুমিল্লার সেই পূজামণ্ডপে ছিলো অনুপস্থিত। একজন পাহারাদার থাকলেও তিনি ছিলেন ঘুমিয়ে। সার্বিকভাবে নিরাপত্তার বিষয়টিতে ত্রুটি ছিল। এখন প্রশ্ন, এই অবহেলার দায় কে নেবে? ইতিমধ্যে ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন স্থানে পূজামণ্ডপে হামলার চেষ্টা হয়েছে। এসব ঘটনায় ইতিমধ্যে ৪ জন নিহত হয়েছেন। এ বিষয়ে পুলিশ তদন্ত করছে। এছাড়া র‍্যাবসহ সকল গোয়েন্দা সংস্থাও মাঠে কাজ করছে।

প্রসঙ্গত, পূজামণ্ডপে যে কোরআন শরিফ ছিল, সেটি সরিয়ে দেন কোতয়ালী থানার ওসি আনোয়ারুল আজিম। সাধারণত নিয়ম অনুযায়ী সেখানে সিআইডি ক্রাইম সিন ইউনিট গিয়ে আলামত সংগ্রহ করবে এবং কোরআন শরিফটি ফিঙ্গার প্রিন্টের জন্য জব্দ করবে। কিন্তু ওসি ওই কোরআন শরিফ সরিয়ে ফেলার কারণে এখন কার ফিঙ্গার প্রিন্ট সেটা শনাক্ত করা অসম্ভব হবে। কোরআর শরিফে এখন দুইজনের ফিঙ্গার প্রিন্ট আছে। এদিকে কুমিল্লা নগরীর একটি পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন শরিফ পাওয়ার অভিযোগ তুলে ফেসবুকে লাইভ করা ফয়েজ আহমেদকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। এছাড়া শহরজুড়ে বিভিন্ন মণ্ডপে ভাঙচুরের ঘটনায় আটক হয়েছে অর্ধশতাধিক।

র‍্যাবের মহাপরিচালক চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ওই ঘটনার তদন্ত চলছে। কিছু সংখ্যক লোককে আটক করা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত শনাক্তের কাজ চলছে।

পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আনোয়ার হোসেন বলেন, ওই পূজা মণ্ডপে সিসি ক্যামেরা ও পাহারাদার ছিল না। একজন পাহারাদার ছিলেন, তাও তিনি ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। তবে যেই ঘটনা ঘটাক না কেন দ্রুত তাকে শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে।

কুমিল্লার পুলিশ সুপার (এসপি) ফারুক আহমেদ বলেন, দিন-রাত পাহারাদার থাকার কথা। কিন্তু কুমিল্লার ওই পূজা মণ্ডপে রাতের পাহারাদার ঘুমিয়েছিল। এই পাহারাদার পূজামণ্ডপ পরিচালনাকারীদের টাকায় নিয়োজিত। তিনি বলেন, সিসি ক্যামেরাও ছিল না ওই পূজা মণ্ডপে। অর্থাৎ পরিকল্পিতভাবে এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে। এই ঘটনায় কয়েকজনকে শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের গ্রেফতারে পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর তল্লাশি চলছে।

ইত্তেফাক/জেডএইচডি