যশোর-বেনাপোল সড়কের শার্শা উপজেলার নাভারন বাজারের প্রধান সড়কের ফুটপাত ও অলিতে-গলিতে রোদ, বৃষ্টি ও ঝড় উপেক্ষা করে ক্ষুদ্র ব্যবসা করে যারা জীবন-জীবিকা নির্বাহ করতো তাদের সমস্যার শেষ ছিলো না। পুলিশের অত্যাচার উটকো সন্ত্রাসীদের চাঁদা বাজিতে অতিষ্ঠ ছিলো তারা। ফুটপাতের এসব ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জীবন জীবিকার কথা মাথায় নিয়ে নাভারন বাজারের মধ্যে একটি খাস জমিতে ময়লার স্তূপ পরিষ্কার করে ফুটপাতের ৩৫জন দোকানদারের কোন টাকা পয়সা ছাড়াই টিনের শেডের দোকান করে ব্যবসা করার সুযোগ করে দিলেন শার্শা সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন। প্রতিদিন মাত্র ১০টাকা করে খাজনা দিয়ে ব্যবসা করতে পারায় বেজায় খুশী তারা।
ত্রিমোহিনী শ্যামলাগাছি গ্রামের কামাল হোসেন (৩৮) বলেন, আমি আগে ফুটপাতে দোকানদারী করতাম। তখন অনেক ঝুটঝামেলা হতো। হাইওয়ে পুলিশ এসে আমাদের দোকান তুলে দিতো। এখন ভাল আছি। কেউ ঝামেলা করে না।
ঝিকরগাছার কৃষনো নগর গ্রামের নুর ইসলাম(৫৮) বলেন, তিন বছর ধরে ফুটপাতে দোকানদারি করেছি। চেয়ারম্যান ময়লার ভাগাড় পরিষ্কার করে আমাদের বসার জায়গা তৈরি করে দিয়েছে। ঘরভাড়া লাগে না। ১০টাকা খাজনা দেই মাত্র। বেচাবিক্রিও মোটামুটি ভাল।
নাভারন রেলবাজারের রুহুল আমীন (৫৫) বলেন, ফুটপাতে ছিলাম, এখন ঘর পাইছি। এই ব্যবসা থেকে ৮ জনের সংসার চলে। প্রতিদিন গড়ে ৩ হাজার টাকা বেচাকেনা হয়।
নাভারন বাজারের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী নেতা মুরাদ হোসেন বলেন, নাভারন বাজারটি শার্শা উপজেলার একটি ঐতিহ্যবাহী বাজার। মনোরম ভাবে সাজানোর জন্য আমরা সবসময় কাজ করে যাচ্ছি। স্থানীয় এমপি শেখ আফিল উদ্দিনের পরিকল্পনা ও উপজেলা চেয়ারম্যান সিরাজুল হক মঞ্জুর সার্বিক সহায়তায় পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছি। ফুটপাত হকার মুক্ত করে তাদের ব্যবসায়ীক ভাবে পুনর্বাসন করা হয়েছে।
নাভারন চেম্বার অব কমার্সের সাবেক সেক্রেটারি সালে আহম্মেদ মিন্টু বলেন, নাভারন বাজারের মাঝ দিয়ে যশোর-বেনাপোল মহাসড়ক চলে গেছে। এই সড়কের দুইধারের ফুটপাত সবসময় থাকতো হকারদের দখলে। তাদেরকে মহাসড়কের পাশ থেকে সরিয়ে নির্দিষ্ট স্থানে নেওয়ার কারণে আজ যানজট মুক্ত হয়েছে নাভারন বাজার।
নাভারন চেম্বার অব কমার্সের আহবায়ক শার্শা সদর ইউপির চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন বলেন, নাভারন বাজারের ইজারাদারসহ ফুটপাতের ব্যবসায়ীদের দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বাজারের ময়লার ভাগাড় পরিষ্কার করে সেখানে তাদের দোকান তৈরি করে দিয়েছি। স্থানীয় এমপি, উপজেলা পরিষদ ও আমার ব্যক্তিগত অনুদান থেকেই কাজটি করেছি। তাদের কাছ থেকে কোন ভাড়া পর্যন্ত আদায় করা হয় না। তারা দোকান পেয়ে খুব খুশি। আজ ৩৫জন ব্যবসায়ীর পরিবারের সকলের মুখে হাসি ফুটেছে।
ইত্তেফাক/এমআর