শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

নিউজিল্যান্ডে মসজিদে হামলায় নিহত ড. সামাদের বাড়ি নাগেশ্বরী

আপডেট : ১৫ মার্চ ২০১৯, ২২:০১

নিউজিল্যান্ডে ক্রাইস্টচার্চে দুটি মসজিদে অজ্ঞাত বন্ধুকধারীদের হামলায় নিহত বাংলাদেশিদের একজন কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার ড. আব্দুস সামাদ। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি তত্ব বিভাগের সাবেক এই শিক্ষক ক্রাইস্টচার্চ শহরের হ্যাগলি পার্ক মুখী সড়ক দীন এভিনিউতে ‘মসজিদে নুর’ মসজিদের মোয়াজ্জেম ছিলেন। এ ঘটনায় গভীর শোক ও উৎকন্ঠায় দেশে বসবাসকারী তার পরিবার-স্বজনরা।

আব্দুস সামাদের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, আব্দুস সামাদ নাগেশ্বরী মধুরহাইল্যা গ্রামের জামাল উদ্দিন সরকারের বড় ছেলে। তিনি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা শেষে সেখানেই কৃষি তত্ব বিভাগের শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। পিএইচডি করেন নিউজিল্যান্ডে। পরবর্তীতে তিনি ওই বিভাগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৩ সালে চাকরি ছেড়ে দিয়ে নাগরিকত্ব নিয়ে স্ত্রী ও তিন ছেলেসহ স্থায়ীভাবে নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চ শহরে বসবাস শুরু করেন। এ সময় তিনি ‘মসজিদে নুর’-এ মোয়াজ্জিন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সেখানে কিছুদিন বসবাস করার পর তার বড় ছেলে তোহান মোহাম্মদ বাংলাদেশে ফিরে আসেন। এরপর থেকে অপর দুই ভাই তারেক, তানভির ও মা কেশোয়ারা সুলতানাকে নিয়ে বাবা ড. আব্দুস সামাদ সেখানেই থাকতেন।

আরো পড়ুন: মসজিদে থাকা স্বামীকে বাঁচাতে গিয়ে নিহত সিলেটের পারভীন

শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে ড. সামাদের ছেলে তোহান মোহাম্মদ জানান, ‘‘সর্বশেষ গত দুইদিন আগে বাবার সাথে পারিবারিক বিভিন্ন বিষয়ে কথা হয়েছিল। শুক্রবার বিভিন্ন প্রচার মাধ্যমের খবরে জানতে পারি নিউজিল্যান্ডের স্থানীয় সময় শুক্রবার বেলা দেড়টায় ক্রাইস্টচার্চ শহরের হ্যাগলি পার্ক মুখী সড়ক দীন এভিনিউতে ‘মসজিদে নুর’ ও ‘লিংউড’ মসজিদ দুইটিতে হামলা চালিয়েছে অজ্ঞাত বন্ধুকধারীরা। এতে ২ বাংলাদেশিসহ বেশ কয়েকজন মুসল্লি নিহত হয়েছেন। এ খবর জেনেই আমি মা’র সাথে যোগাযোগ করি। তখন মা জানান, ‘ঘটনার পরপরেই তিনি ছুটে গেছেন হাসপাতালে। কিন্তু পুলিশ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের হাসপাতালে ঢুকতে দেয়নি। তারা বলেছেন, গুরুতর আহতদের চিকিৎসা চলছে। এ মহুর্তে কোন কিছুই জানানো সম্ভব নয়। এছাড়া পরিস্থিতি শান্ত না হওয়া পর্যন্ত তারা কোন কিছুই প্রকাশ করবে না বলে জানিয়েছে।’’

এদিকে ড. আব্দুস সামাদ নিহতের সংবাদ পৌরসভার মধুরহাইল্যা গ্রামে তার নিজ বাড়িতে পৌঁছালে শোকে কাতর হয়ে পড়ে স্বজনরা।

সেখানে গিয়ে দেখা যায়, ভাইয়ের শোকে বারবার জ্ঞান হারিয়ে ফেলছেন ছোটভাই মতিয়ার রহমান। তারা কোনভাবে মেনে নিতে পারছেন না এ ঘটনা। 

এ ঘটনার প্রতিবাদে এদিন সন্ধ্যায় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ নাগেশ্বরী উপজেলা শাখা একটি বিক্ষোভ মিছিল করে।

ইত্তেফাক/বিএএফ