শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

ফুলবাড়ীতে ঝুঁকিপূর্ণ বিদ্যালয় ভবনের বারান্দায় পাঠদান

আপডেট : ১৯ এপ্রিল ২০১৯, ১৭:০১

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে বড়লই ২নং সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের বারান্দায় কোমলমতি শিক্ষার্থীদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলছে পাঠদান। ভবন ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ার কারণে প্রধান শিক্ষক ভাঙ্গা একটি টিনসেড ঘরে চালাচ্ছেন তার অফিস।

সরেজমিনে দেখা যায়, জরাজীর্ণ বিদ্যালয়টির গোটা ভবনের ভেতর ও বাইরের বিভিন্ন অংশের পলেস্তারা খসে পড়েছে। শ্রেণীকক্ষের ভেতরের মূল পিলার ও বিমের পলেস্তারা ধ্বসে পড়েছে। ফাঁটল ধরেছে ভবনের বিভিন্ন অংশে। তারপরেও ওই ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের বারান্দায় শিক্ষার্থীরা গাদাগাদি ভাবে বসে পাঠগ্রহণ করছে।

বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৩৮ সালে তৎকালীন রংপুর জেলার কুড়িগ্রাম মহকুমারের ফুলবাড়ী থানাধীন বড়লই ২নং সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৬৩ সালে স্থানীয়দের সহযোগিতায় নির্মিত হয় একটি টিনসেড বিল্ডিং। এরপর ওই বিল্ডিংঘর সংস্কার করা না হলেও ১৯৯৫ সালে স্থানীয় এক ঠিকাদারের মাধ্যমে নিম্ন মানের নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে একটি ৪ কক্ষ বিশিষ্ট একতলা ভবন নির্মাণ করা হয়। ভবনটি নির্মাণের ২২/২৪ বছর যেতে না যেতেই গোটা ভবনের ভেতর ও বাইরের বিভিন্ন অংশের পলেস্তারা খসে পড়েছে। শ্রেণিকক্ষের ভেতরের মূল পিলার ও বিমের পলেস্তারা ধ্বসে ধ্বসে পড়ছে। ফাঁটল ধরেছে ভবনের বিভিন্ন অংশে। ফলে বিদ্যালয়ের ভবন জরাজীর্ণ হয়ে গেছে। 

৫ম শ্রেণির ফুয়াদ মাহমুদ ও ৩য় শ্রেণির মুবতাসিন বলে, ‘বিদ্যালয়ের ছাঁদ ফেটেছে। ভেঙ্গে পড়তে পারে বলে ভয় লাগে। তাই ভবনে আর আমরা ক্লাস করি না। খোলা আকাশের নিচে ও কোন কোন সময় বারান্দায় ক্লাস করছি।’

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিপুল চন্দ্র রায় বলেন, ‘স্কুল চলাকালে সব সময় আতংকে থাকতে হয়। মনে হচ্ছে এই বুঝি দুর্ঘটনা ঘটলো। আমরা স্কুলের শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে পারছি না। আবার ক্লাসও বন্ধ রাখা যাচ্ছে না। স্কুল ভবন ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়টি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে অবহিত করেছি। ভবন নির্মাণ না হওয়ায় আমরা নিরূপায় হয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের বারান্দায় শিক্ষার্থীদের পাঠদান চালাচ্ছি। তাই কর্তৃপক্ষ যেন দ্রুত সময়ের মধ্যে পুরাতন ভবন ভেঙ্গে নতুন ভবন নির্মানের ব্যবস্থা করে।’

বিদ্যালয়ের সভাপতি আশরাফুল আলম জানান, ‘ভবনটির অবকাঠামো অত্যন্ত দূর্বল। যে কোন সময় বরিশালের মত দুঃখজনক ঘটনা ঘটতে পারে। জরুরী ভিত্তিতে এই ভবনটি ভেঙ্গে পুনঃনির্মানের জন্য কর্তৃপক্ষের সু-দৃষ্টি কামনা করছি।’

স্থানীয় অভিভাবক আব্দুর রাজ্জাক জানান, বিভিন্ন সময় স্কুল ভবন সংস্কারের জন্য কর্তৃপক্ষকে বলা হলেও কার্যকরী কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। এ কারণে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির হার কম।

সহকারী শিক্ষক সুরাইয়া খাতুন বললেন, ‘জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ক্লাস নিচ্ছি। জানি না কখন দুর্ঘটনার শিকার হই।’

আরও পড়ুনঃ দারিদ্র্যকে পুঁজি করে অনেকে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন: খালিদ

এ প্রসঙ্গে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আখতারুল ইসলাম বলেন, ‘ভবন ঝুঁকিপূর্ণের বিষয়টি ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক লিখিতভাবে জানিয়েছেন। সংশ্লিষ্ট দপ্তরে ভবনের বিষয়টি অনলাইনে আবেদন করা হয়েছে। পরবর্তীতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

ইত্তেফাক/নূহু