নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে একটি দ্বিতীয় তলা বিল্ডিং বাড়িতে বিকট শব্দে তিতাস গ্যাস বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গ্যাস বিস্ফোরণে ওই বিল্ডিংয়ে বসবাসরত দুই শ্রমিক নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন আরো সাতজন। তিতাস গ্যাসের হাই-প্রেসার পাইপ লাইন থেকে নেয়া অবৈধ গ্যাস সংযোগের কারণেই এ ঘটনা ঘটতে পারে বলে ধারনা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
আজ সোমবার ভোরে উপজেলার সাওঘাট এলাকায় ঘটে এ দুর্ঘটনা।
নিহতরা হলেন, মেহেরপুর জেলার মজিবনগর থানার কোমরপুর এলাকার দুদু মিয়ার ছেলে শামিম (৩০) ও ঝালকাঠি জেলার নলছিটি থানার কয়া এলাকার রহিম বিশ্বাসের ছেলে হেলাল বিশ্বাস ওরফে রাকিব (২৫)। নিহত দুইজনই স্থানীয় নেক্সট এক্সোসরিস লিমিটেড নামের পোশাক কারখানার শ্রমিক ছিলেন।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশে উপজেলার সাওঘাট এলাকায় রাবেয়া আক্তার মিলি নামের এক আইনজীবির দুই তলা বিল্ডিং রয়েছে। মহাসড়কের পাশ দিয়ে স্থাপিত তিতাস গ্যাসের হাই-প্রেসারের পাইপ লাইন থেকে অবৈধভাবে ওই বিল্ডিংটিতে গ্যাসের সংযোগ নেন রাবেয়া আক্তার মিলি। হাই-প্রেসারের পাইপ লাইন থেকে আবাসিক গ্যাস সংযোগ নেয়াটা পুরোটাই ঝুকিপুর্ণ। ওই বিল্ডিংটি স্থানীয় নেক্সট এক্সোসরিস লিমিটেড নামের পোশাক কারখানার শ্রমিকদের কাছে ভাড়া দেয়া হয়। শবেবরাতের কারণে সমস্ত মিল-কারখানা বন্ধ থাকায় গ্যাসের প্রেসার ছিলো অধিক। ভোর সোয়া তিনটার দিকে হঠাত্ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। বিস্ফোরণে বিল্ডিংয়ের পুরো দেয়াল ভেঙে প্রায় ৫০ থেকে ৩০০ ফুট দূরে গিয়ে পড়ে। এ সময় পুরো এলাকা কেঁপে ওঠে। পরে স্থানীয়রা ঘটনাস্থলে এসে গুরুতর দগ্ধ অবস্থায় ছয়জনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করেন এবং তিনজনকে স্থানীয় ক্লিনিকে প্রাথমিক চিকিত্সা দেয়া হয়। এদের মধ্যে শামিম ও হেলাল বিশ্বাস ওরফে রাকিবকে মৃত ঘোষণা করেন কর্তব্যরত চিকিত্সকরা।
আহতরা হলেন, নেক্সট এক্সোসরিস লিমিটেড নামের পোশাক কারখানার শ্রমিক তরিকুল ইসলাম, লিয়াকত আলী, হযরত আলী, আরিফ, আনোয়ার হোসেন, ফারুক মিয়া, আরিফুর রহমান। আহতদের মধ্যে লিয়াকত ও আরিফের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।
এ ব্যপারে বাড়ির মালিক রাবেয়া আক্তার মিলি বলেন, অন্যরা যেভাবে অবৈধ গ্যাস সংযোগ নিয়েছে আমিও সেভাবেই নিয়েছি। তবে, আমার বাড়িতে পরিকল্পিতভাবে এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে।
তিতাস গ্যাসের সোনারগাঁও জোনের সুপার ভাইজার ইসমাইল হোসেন বলেন, আগেও এ ধরনের আরো বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে। এক হলো হাই-প্রেসার লাইন থেকে অবৈধভাবে গ্যাস সংযোগ নেয়া। আবার শবেবরাত উপলক্ষে সকল প্রকার মিল-কারখানা বন্ধ ছিলো। সব মিলিয়ে গ্যাসের প্রেসার ছিলো অধিক হাড়ে। হয়তো বিল্ডিংয়ের ভেতরে গ্যাস ছড়িয়ে ছিলো। আগুনের সংস্পর্শে গ্যাস বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটতে পারে। খবর পেয়ে ভুলতা ফাঁড়ি পুলিশ ও কাঞ্চন ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
এ বিষয়ে ভুলতা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ইন্সপেক্টর রফিকুল হক বলেন, দুই জন মারা গেছেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেই তাদের ময়নাতদন্ত করা হচ্ছে। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ইত্তেফাক/এএম