শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

নব যৌবন পাবে করতোয়া, বাঙ্গালী, ফুলজোড় ও হুরাসাগর নদী

আপডেট : ৩০ এপ্রিল ২০১৯, ১৮:৩৫

উত্তরের তিনটি জেলার মৃতপ্রায় চারটি নদীর পানি প্রবাহ ফেরাতে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) আড়াই হাজার কোটি টাকার প্রকল্প গ্রহণ করেছে। ওই প্রকল্পের মাধ্যমে বগুড়া, গাইবান্ধা, সিরাজগঞ্জ জেলার মধ্যে প্রবাহিত ২১৭ কিলোমিটার নদী খনন করা হবে। নদী গুলো মধ্যে রয়েছে বাঙ্গালী, করতোয়া, ফুলজোড় ও হুরাসাগর নদী। 

একই সঙ্গে তীর সংরক্ষণ করে নদী ভাঙ্গন থেকে জনপদ রক্ষা করা হবে। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় নদীর দুই পাড়ে সবুজ বনায়ন সৃষ্টি করা হবে। প্রকল্পটিতে ব্যয় ধরা হয়েছে দুই হাজার ৩৩৫ কোটি টাকা।

পাউবো সূত্রে জানা যায়, ‘বাঙ্গালী-করতোয়া-ফুলজোড়-হুরাসাগর নদী সিস্টেম ড্রেজিং/পুনঃ খননসহ তীর সংরক্ষণ’ প্রকল্পটি গত বছর ৭ নভেম্বর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির বৈঠকে (একনেক) অনুমোদন পায়। চার বছর মেয়াদী প্রকল্প বাস্তবায়নে ইতিমধ্যে প্রকল্প পরিচালক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। খুব শিগগির টেন্ডার আহ্বান করে ঠিকাদার নিয়োগ করা হবে।

পাউবো সূত্রে জানা গেছে, গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার কাটাখালি ও এলাই নদীর মিলনস্থল থেকে বাঙ্গালী নদীর উৎপত্তি। এরপর এই নদী উত্তর থেকে দক্ষিণে বগুড়ার সোনাতলা, সারিয়াকান্দি ও ধুনট উপজেলার মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত হয়ে শেরপুর উপজেলার খনিপুরে করতোয়া নদীর সঙ্গে মিলিত হয়েছে। এখানে নদীটির নাম হয়েছে করতোয়া। এরপর করতোয়া সিরাজগঞ্জের নলকায় ফুলজোড় নাম ধারণ করে শাহজাতপুর উপজেলার বাঘাবাড়ির দক্ষিণে হুরাসাগরে পড়েছে। এরপর হুরাসাগর নাম ধারণ করে যমুনা নদীতে মিলেছে। উৎপত্তিস্থলে নদীটির গড় প্রশস্ততা ৯০ মিটার আর ভাটির প্রান্তে দুইশ মিটার। প্রকল্পের নকশা অনুযায়ী নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে তিন থেকে পাঁচ মিটার পর্যন্ত গভীর করে খনন করা হবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, কালের প্রভাবে নদী গুলোর তলদেশ ভরাট হয়ে পানি প্রবাহ ও ধারণ ক্ষমতা কমে যায়। পলি জমে ভরাট হওয়ায় অনেক জায়গায় নদীর বুকে চাষ হচ্ছে ফসল। ফলে বর্ষাকালে সহজেই দুকূল ছাপিয়ে বন্যা সৃষ্টি হয়ে ফসল ও জানমালের ক্ষতি হচ্ছে। অপর দিকে ত্বরান্বিত হচ্ছে নদী ভাঙ্গন। আবার শুষ্ক মৌসুমে নদী পানি শূন্য হয়ে পড়ে। সেচ সংকটসহ নানা সমস্যা সৃষ্টি হয়। 

এ ব্যাপারে পাউবো বগুড়ার নির্বাহী প্রকৌশলী হাসান মাহমুদ জানান, প্রকল্পের সমস্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। কয়টি প্যাকেজে প্রকল্পের দরপত্র আহ্বান করা হবে। সে ব্যাপারে পরিকল্পনা কমিশনের সিপিটিইউ (সেন্ট্রাল প্রোকিউরমেন্ট টেকনিক্যাল ইউনিট) এর কাছে মতামত চাওয়া হয়েছে। মতামত পাওয়া গেলে সর্বোচ্চ ১৫ দিনের মধ্যে দরপত্র আহ্বান করা সম্ভব হবে। 

আরও পড়ুন: মাদরাসা শিক্ষকের লালসার শিকার ছাত্রীর পড়াশোনা বন্ধ, শিক্ষক জেলে

তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী তারিক আব্দুল্লা আল ফায়াজ জানান, সরকারের শতভাগ অর্থায়নে পাউবোর গৃহীত কোনো বৃহৎ প্রকল্প এটাই প্রথম। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে বহুমুখী সুফল পাওয়া যাবে। 

সংসদ সদস্য আব্দুল মান্নান বলেন, গত কয়েক বছরে বাঙ্গালী নদীর ভাঙ্গনে সারিয়াকান্দি ও সোনাতলা উপজেলার কয়েকশ পরিবার গৃহহীন হয়ে পড়েছে। বাঙ্গালীর নদীর ভাঙ্গনে জনপদের যে ক্ষতি হয়, তা সরকারে উচ্চ পর্যায়ে জানা ছিল না।                     

ইত্তেফাক/অনি