শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

চলন্ত ট্রেনে পাথর নিক্ষেপের ঘটনা বেড়েই চলেছে

আপডেট : ২২ মে ২০১৯, ১২:৩৫

পশ্চিমাঞ্চল রেলের পাকশী বিভাগে চলন্ত ট্রেনে পাথর নিক্ষেপের ঘটনা বেড়েই চলেছে। পাথর নিক্ষেপের ঘটনায় গত এপ্রিল মাসে মাথায় আঘাত পেয়ে রেলওয়ের এক কর্মকর্তা প্রাণহানি ঘটেছে। সাম্প্রতিক সময়ে খুলনা হতে ঈশ্বরদী জংশন এবং বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম হতে টাঙ্গাইল স্টেশন পর্যন্ত ট্রেনে পাথর নিক্ষেপের ঘটনা বেড়েছে। চলন্ত ট্রেনে পাথর ছাড়াও আবর্জনা ও মলমূত্র নিক্ষেপের ঘটনা ঘটছে অহরহ।

বিপথগামী শিশু-কিশোরেরা এই ঘটনার সাথে জড়িত বলে পাকশী বিভাগীয় কর্মকর্তাদের ধারণা করছেন। রেল সূত্রে জানা যায় , বিগত বছরের জুলাই হতে চলতি বছরের এপ্রিল মাস পর্যন্ত  পাকশী বিভাগে মোট ৩২টি পাথর নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। তিন শিশুসহ ১১ জন পাথরের আঘাতে গুরুতর আহত হয়েছেন।

আরও পড়ুন: ভোমরা বন্দরে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম দ্বিতীয় দিনেও বন্ধ

পাথরের আঘাতে ট্রেনের জানালা, দরজা, কাচ এবং লাইট-ফ্যানসহ বিভিন্ন যন্ত্রাংশও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম হতে ঈশ্বরদী, টাঙ্গাইল হতে মির্জাপুর, পার্বতীপুর হতে নীলফামারী, খুলনা হতে নওয়াপাড়া হয়ে যশোর স্টেশন পর্যন্ত। পাকশী বিভাগে ১০ মাসে ৩২টি পাথর নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে।
গত ৭ এপ্রিল চিলাহাটীমুখী রূপসা ট্রেন বিরামপুর হতে ফুলবাড়ী স্টেশনে পৌঁছানোর সময় পাথর নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এঘটনায় ট্রেনের খাবার গাড়ির জানালার কাচ ভেঙে পাথর ভেতরে ঢুকে এক যাত্রীর পায়ে আঘাত লাগে। এই ঘটনায় ট্রেনের যাত্রী রংপুর মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের চিকিৎসক রাজিবুল ইসলাম  লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন বলে জানা গেছে। রাজশাহী-ঢাকা-রাজশাহী বিরতিহীন ‘বনলতা এক্সপ্রেস’ ট্রেন চালুর পর গত ২রা মে পর্যন্ত পরপর তিনবার পাথর নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এতেওই ট্রেনের জানালার কাচ ভেঙে যায়।

পাথর নিক্ষেপের ঘটনায় শিকদার বায়োজিদ নামের বেনাপোল কমিউটার ট্রেনের পরিবহন পরিদর্শক (ট্রান্সপোর্টেশন ইন্সপেক্টর বা টিআই) গত বছরের ৩০ এপ্রিল গুরুতর আহত হন। হেলিকপ্টারে করে তাকে চিকিৎসার জন্য প্রথমে ঢাকায় স্কয়ার হাসপাতালে ও পরে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় মাস খানেক পর তিনি মারা যান। এঘটনায় রেলওয়ে (জিআরপি) থানায় মামলা হয়।

পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ে পরিবহন কর্মকর্তা (ডিটিও) আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, সম্প্রতি চলন্ত ট্রেনে পাথর নিক্ষেপের সাথে সাথে মলমূত্র ও ময়লা-আবর্জনাও নিক্ষেপ করা হচ্ছে। বাবা-মায়ের সুশাসন বঞ্চিত ও সামাজিক শিক্ষার অভাবে বিপথগামী উঠতি বয়সী তরুণ ও শিশুরা এই অপকর্মের সাথে জড়িত বলে তিনি জানান। জনসচেতনতা তৈরীর জন্য প্রচারণা, লিফলেট বিতরণ, জনপ্রতিনিধি ও মসজিদের ইমামের মাধ্যমে প্রচারণা চালানো হচ্ছে।
এব্যাপারে রেলওয়ের পাকশী জেলার পুলিশ সুপার নজরুল ইসলাম বলেন, পাথর নিক্ষেপ ঠেকাতে রেলওয়ে পুলিশ জনসচেতনা তৈরীর জন্য প্রচারণা চালাচ্ছে। পাথর নিক্ষেপ করলে কি ধরণের শাস্তি হতে পারে এ বিষয়টি পুলিশের পক্ষ হতে সাধারণ মানুষের কাছে তুলে ধরা হচ্ছে।

ইত্তেফাক/এমআরএম