শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

ট্রেন গেলে ব্রিজ কাঁপতো, ছিল না নাট-বল্টু

আপডেট : ২৫ জুন ২০১৯, ০১:২৪

মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার বরমচাল রেলওয়ে স্টেশনের কাছে যে সেতুটি ভেঙে আন্তঃনগর উপবন এক্সপ্রেস ট্রেনটি দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে, সেই সেতুতে অ্যাঙ্গেল ক্লিপ ও স্লিপারে ছিল না নাট-বল্ট। ট্রেন গেলে ব্রিজটি কাঁপত থরথর করে। ব্রিটিশ আমলে নির্মিত জরাজীর্ণ এই সেতুর ওপর দিয়ে ভয়াবহ ঝুঁকি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ট্রেন চললেও সংস্কার করেনি কর্তৃপক্ষ।

স্থানীয় বাসিন্দারা গতকাল অভিযোগ করেছেন, তারা নাট-বল্ট খোলা এবং শিথিল হয়ে থাকা এই সেতুটির ভয়াবহ ঝুঁকিপূর্ণ দুরবস্থা নিয়ে অনেক আগে থেকেই রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে আসছিলেন, কিন্তু তারা ভ্রুক্ষেপ করেননি। 

রবিবার গভীর রাতে আন্তঃনগর উপবন এক্সপ্রেস ট্রেনের ছয়টি বগি বড়ছড়া রেল সেতু ভেঙে পাহাড়ি ছড়ার মধ্যে পড়ে যাওয়ার পর উদ্ধারের জন্য ছুটে আসেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তারাই পুলিশ, রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সকে খবর দেন।

১৮৬২ সালে নির্মিত এই সেতুটি বছরের পর বছর পর্যপ্ত সংস্কার হয়নি। নাট-বল্টসহ চুরি যাওয়া যন্ত্রাংশ দ্রুত লাগানোর নিয়ম থাকলেও বছরের পর বছর তা লাগানো হয়নি। রেলসেতুর ৩০-৪০ বছরের পুরনো কাঠের স্লিপারের অধিকাংশ নষ্ট হয়ে গেছে।

আরও পড়ুন: রংপুর মেডিক্যাল কলেজে যন্ত্রপাতি কেনায় ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ

আমাদের মৌলভীবাজার সংবাদদাতা নজরুল ইসলাম মুহিব জানান, উদ্ধারকাজে আসা রেললাইনের পাশের গ্রাম নন্দনগরের বাসিন্দা ফারুক মিয়া (৪৫) বলেন, ‘ব্রিজের সাইডে পাত দুইডা লাগানো থাকে, জোড়ার মধ্যে। এর এদিকে একটি নাট, ওদিকে আরেকটি নাট। আর কোনো নাট নাই। নাট-বল্টু খোলা ছিল। ট্রেন যখন যেত তখন ব্রীজ থরথর করে কাঁপত, ঝিলকা মারত। অনেকদিন ধরে এই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থা চলে আসছে। শেষ পর্যন্ত এই দুর্ঘটনা ঘটল। প্রায় সময়ই আমরা রেলের অফিসারদের বলে আসছি। এই ব্রিজটা সংস্কার না করলে বিপদ হবে। বড় বিপদ। তারা আমাদের কথা কানে নেয় নাই। পাত্তাই দিতো না। আজ দেখেন কত লোক মারা গেল— এই দায়িত্ব কে নিবে? ’

ইত্তেফাক/নূহু