পাশের গাড়ির চাপায় বাসযাত্রী রাজশাহী কলেজের ছাত্র ফিরোজের (২৫) ডান হাতটি বিচ্ছিন্ন হওয়ার ঘটনায় মোহাম্মদ পরিবহনের তাকে বহনকারী বাসটি আটক করেছে পুলিশ। শনিবার দিবাগত রাতে রাজশাহীর শিরোইল বাস টার্মিনাল থেকে বাসটি আটক করা হয়। রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) মুখপাত্র গোলাম রুহুল কুদ্দুস এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, 'ফিরোজ ওই বাসেরই যাত্রী ছিলেন। রাজশাহী-রংপুর রুটে চলাচলকারী ওই বাসটি রাজশাহীর নওদাপাড়া বাস টার্মিনালে থাকার কথা। কিন্তু সেটিকে লুকিয়ে শিরোইল বাস টার্মিনালে রাখা হয়েছিল।'
ফিরোজ পুলিশকে বলেছেন, তিনি যে বাসের যাত্রী ছিলেন, ইংরেজি নামের প্রথম দুই অক্ষর 'এম' এবং 'ও'। তার ওই ক্লু কাজে লাগিয়ে পুলিশ তদন্ত শুরু করে। ফিরোজ মোহাম্মদ পরিবহনেরই যাত্রী ছিলেন, এটি নিশ্চিত হওয়ার পর বাসটি আটক করে পুলিশের হেফাজতে নেওয়া হয়। তবে বাসটির চালক ও সহকারী এমনকি মালিকও পলাতক। বাসটির চালককে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
এদিকে শনিবার সন্ধ্যায় ফিরোজ যে গাড়ির যাত্রী ছিলেন ওই গাড়ির চালক এবং যে গাড়ির চাপায় তার হাত বিচ্ছিন্ন হয়েছে সেই গাড়ির চালককে আসামি করে নগরীর কাটাখালি থানায় মামলা হয়েছে বলেও জানান আরএমপির মুখপাত্র। তিনি বলেন, 'হাত হারানো ফিরোজের বাবা মাহফুজ আর রহমান বাদী হয়ে মামলাটি করেন। তখন পর্যন্ত সনাক্ত না হওয়ায় মামলায় আসামিদের অজ্ঞাত হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এরপরই পুলিশ একটি গাড়ি আটক করে।'
আরও পড়ুন: বাগেরহাটে ভ্যান চালককে কুপিয়ে হত্যা
নগরীর কাটাখালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নিবারণ চন্দ্র বর্মণ জানিয়েছেন, ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরার একটি ফুটেজ দেখে মোহাম্মদ পরিবহনের চালককেও সনাক্ত করা হয়েছে। তার নাম মো. ফারুক। তার বাড়ি রাজশাহীর পুঠিয়ায়। এই চালককে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। তাকে গ্রেফতার করতে পারলেই জানা যাবে, কোন গাড়ির সঙ্গে তার বাসের চাপা দিয়েছিল। ফারুক তা নিশ্চয়ই জানেন।
উল্লেখ্য, ফিরোজ সরদার রাজশাহী কলেজের সমাজকর্ম বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী। তার বাড়ি বগুড়ার নন্দীগ্রাম পৌরসভার নামোইটগ্রাম মহল্লায়। গত শুক্রবার তিনি আটক বাসে রাজশাহী ফিরছিলেন। তার ভাষ্যমতে, তিনি বাসের একেবারে শেষের সিটে বসে ছিলেন। আর ডান হাতে জানালার ভেতর দিয়েই সামনের সিট ধরে ছিলেন। ওই সময় বাসটি চলছিল খুব বেপরোয়া গতিতে। হঠাৎ ঝাঁকুনিতে তার হাত সিট থেকে আলাদা হয়ে জানালার বাইরে চলে যায়। তখনই বিকট শব্দে পাশের গাড়ির সঙ্গে বাসটি ধাক্কা খায়। এতে চাপা পড়ে তার ডান হাত কনুইয়ের ওপর থেকে কেটে রাস্তায় পড়ে যায়। তবে সেই সময় ফিরোজসহ কেউই পাশের গাড়িটিকে চিনতে পারেননি। সেটি ট্রাক নাকি বাস তাও জানেন না কেউ। তবে এখন সেটি সনাক্ত করা সম্ভব বলে মনে করছে পুলিশ।
ইত্তেফাক/জেডএইচডি