ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলওয়ে সড়কের গাজীপুরের কালীগঞ্জে ৮টি রেল ক্রসিং সম্পূর্ণ অরক্ষিত অবস্থায় রয়েছে। রেল ক্রসিংগুলোতে গেটম্যান ও গেটবার না থাকায় পরিস্থিতি খুবই বিপজ্জনক হয়ে পড়েছে। কয়েকদিন পর পরই রেলওয়ে সড়কের ঐ অরক্ষিত রেল ক্রসিংগুলোতে ঘটছে দুর্ঘটনা।
এছাড়া জনস্বার্থে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের লাগানো সতর্কতামূলক নোটিশ বোর্ডের কোথাও কোথাও রঙ উঠে গিয়ে লেখা পড়া যায় না। কোথাও আবার নোটিশ বোর্ডের সামনে আগাছায় ভরে গিয়ে লেখা ঢাকা পড়ে গেছে। স্থানীয়দের দাবি- অনতিবিলম্বে রেল ক্রসিংগুলোতে গেটম্যান ও গেটবারের ব্যবস্থা করা হোক এবং সতর্কতামূলক নোটিশ বোর্ডগুলো ঠিকমতো লাগানো হোক।
জানা গেছে, প্রতিদিন এই রেলওয়ে সড়কের উপর দিয়ে প্রায় ৫০টি ট্রেন আসা-যাওয়া করে থাকে। কিন্তু কালীগঞ্জ উপজেলার সেই ৮টি অরক্ষিত রেল ক্রসিং-এর কারণে পথচারীরা এবং যানবাহনের যাত্রীরা প্রতিদিন মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে এসব রেল ক্রসিং পার হচ্ছেন। কালীগঞ্জের অরক্ষিত রেল ক্রসিংগুলো নলছাটা, বান্দাখোলা (কামারবাড়ী), তুমলিয়া (সাদ্দাম বাজার), খঞ্জনা (বড়নগর রোড), বালীগাঁও (চৌধূরীবাড়ী), বালীগাঁও (মোড়লবাড়ী), বাঘারপাড়া ও দেওপাড়ায় অবস্থিত। ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলওয়ে সড়কে কেবল কালীগঞ্জ উপজেলার শিমুলিয়া ও দড়িপাড়া এলাকার দুটি রেল ক্রসিং-এ রেলওয়ে অনুমোদিত গেটম্যান ও গেটবার রয়েছে।
তুমলিয়া (সাদ্দাম বাজার) রেল ক্রসিং এলাকার ষাটোর্ধ্ব মুদি দোকান ব্যবসায়ী ইদ্রিস মোল্লা জানান, রেল লাইন পার হতে গিয়ে এখানে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। এখানে একটি গেটবার থাকা খুবই জরুরি। একই কথা বললেন ঐ এলাকার কাপাসিয়া সিএনজি স্ট্যান্ডের সুপারভাইজার মো. আরিফ হোসেন। তিনি জানান, অতি সম্প্রতি তুমলিয়া রেল ক্রসিং ও বান্দাখোলা (কামারবাড়ী) রেল ক্রসিং-এ ট্রেনে কাটা পড়ে দুই পথচারীর প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। তাছাড়া গেটবার না থাকায় মাঝে-মধ্যেই ইজিবাইক, অটোরিকশা, সিএনজি দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে।
খঞ্জনা (বড়নগর রোড) রেল ক্রসিং এলাকার স্কুলছাত্র আনিসুর রহমান (৯) জানায়, প্রতিদিন এই রেল ক্রসিং পার হয়ে তাকে কোচিং করতে যেতে হয়। এখানে কোনো গেটবার ও গেটম্যান না থাকায় সে সবসময় ভয়ে ভয়ে থাকে। বাঘারপাড়া রেল ক্রসিং এলাকায় কথা হয় পথচারী রাসেল মিয়ার সঙ্গে। তিনি মনে করেন, রেল ক্রসিং-এর দুপাশের সতর্কতামূলক নোটিশ বোর্ডগুলো নতুন করে লাগানো দরকার। সেইসঙ্গে ঝুঁকিপূর্ণ রেল ক্রসিংগুলোতে গেটম্যান নিয়োগ এবং গেটবার লাগানোর ব্যবস্থা করা দরকার।
আড়িখোলা রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার মো. আলমগীর হোসেন বলেন, গেটম্যান নিয়োগ ও গেটবার লাগানোর বিষয়টি ইতিমধ্যে রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তারা এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন।
ইত্তেফাক/নূহু