শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

ফুলবাড়ীতে প্রতিবন্ধী শিশু ধর্ষণ; আপোসকারীদের দুইজন আটক

আপডেট : ১১ জুলাই ২০১৯, ১৭:৫৪

দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে বুদ্ধি প্রতিবন্ধী শিশুকে (১১) ধর্ষণ ঘটনা ১৪ হাজার টাকায় আপোস করা হয়। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার থানায় মামলা হয়েছে। ওই শিশুর মা বাদী হয়ে মামলাটি করেছেন।

দৈনিক ইত্তেফাকের অনলাইনে প্রকাশিত সংবাদের সূত্র ধরে বৃহস্পতিবার সকালে পুলিশ অভিযান চালিয়ে বুদ্ধি প্রতিবন্ধী শিশুর ধর্ষক মেহেদুল ইসলামসহ (৩৫) শালিস আয়োজকদের অন্যতম মো. সুজনকে আটক করেছে।

গত বুধবার দৈনিক ইত্তেফাকের অনলাইনে ‘ফুলাড়ীতে প্রতিবন্ধী শিশু ধর্ষণের মূল্য ৭ হাজার টাকা’ শীর্ষক একটি সংবাদ প্রকাশ হয়। এরপর পুলিশ প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসন নড়েচড়ে বসে।

ওই শিশুর পিতা বলেন, ‘আমার প্রতিবন্ধী শিশুটিকে ধর্ষণ করার পর শালিসের মাধ্যমে আপোস করে দেওয়া হয়। এরপর থেকে অশান্তির আগুনে জ্বলছিলাম। পুলিশ ধর্ষক মেহেদুল ও আবাসনের মাতব্বর সুজনকে আটক করেছে। এদের শাস্তি হলে অনেক শান্তি পাবো।’

থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘দৈনিক ইত্তেফাকের অনলাইনে প্রকাশিত সংবাদটি গত বুধবার রাতে দেখে বৃহস্পতিবার উপজেলার শিবনগর ইউনিয়নের রামভদ্রপুর আবাসন প্রকল্পে অভিযান চালানো হয়। এতে শিশুর ধর্ষক মেহেদুল ইসলাম ও ধর্ষণ ঘটনার শালিসের অন্যতম আয়োজক ওই আবাসন প্রকল্পের বাসিন্দা মো. সুজনকে (৩০) আটক করা হয়েছে। এ ব্যাপারে ওই শিশুর মা বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। তবে দুইজন আটক হলেও তদন্তের স্বার্থে মামলার অন্য আসামিদের সংখ্যা বলা যাচ্ছে না।’

ফুলবাড়ী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিয়া মোহাম্মদ আশিষ বিন হাছান বলেন, ‘প্রতিবন্ধী শিশু ধর্ষণ ঘটনায় অভিযুক্ত মেহেদুলকে আটকের পাশাপাশি ধর্ষণ ঘটনাটি আপোসের সঙ্গে জড়িত মো. সুজনকে আটক করা হয়েছে। তবে ধর্ষণ ঘটনাটি আপোসরফার সঙ্গে জড়িত অন্যদেরও আইনের আওতায় আনা হচ্ছে। এ কারণে মামলার আসামির সংখ্যা অন্তত ৫ থেকে ৬ জন হতে পারে।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আব্দুস সালাম চৌধুরী বলেন, ‘সংবাদটি নজরে আসার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশি অভিযান শুরু হয়েছে। ধর্ষণ ঘটনার অভিযুক্তসহ ধর্ষণ ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য আপোসের জন্য শালিস আয়োজনকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’

উল্লেখ্য, গত বুধবার দুপুর ১টায় উপজেলার ৭নং শিবনগর ইউনিয়নের রামভদ্রপুর আবাসন প্রকল্পের বাসিন্দা রিকশাভ্যান চালকের বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ১১ বছরের শিশু কন্যাকে একই আবাসনের বাসিন্দা দুই স্ত্রীর স্বামী মেহেদুল ইসলাম (৩৫) ধর্ষণ করে। ঘটনাটি জানাজানি হলে ধর্ষণ ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে ওই শিশুর পিতা-মাতাকে গ্রামের ঘটনা গ্রামেই মিটিয়ে ফেলার কথাসহ এক প্রকার চাপ দিয়ে ওইদিন বেলা ২টায় শালিস বসানো হয়। শালিসে উপস্থিত থেকে ১৪ হাজার টাকায় ধর্ষণ ঘটনাটি আপোসরফা করে ওই শিশুর পিতাকে ৭ হাজার টাকা দিয়ে বাকি ৭ হাজার টাকা দুইজন সাংবাদিক নামধারীসহ আয়োজকরা ভাগবাটোয়ারা করে নেয়।

আরও পড়ুন: চট্টগ্রাম-বান্দরবান রাঙ্গামাটি-খাগড়াছড়ি সড়ক যোগাযোগ দুদিন ধরে বন্ধ

শালিস বৈঠকের আয়োজকরা ছিলো, সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলাম বাবলু, গ্রাম পুলিশ আব্বাস উদ্দিন, শিবনগর গ্রামের শফিকুল ইসলামসহ আবাসনের বাসিন্দা মো. সুজনসহ আরও কয়েকজন। শালিসে দুই সাংবাদিক নামধারীও উপস্থিত ছিল। 

ইত্তেফাক/নূহু