বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

ঈশ্বরদীতে শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগ

আপডেট : ১৪ জুলাই ২০১৯, ২৩:০৭

ঈশ্বরদীর ভাষা শহীদ বিদ্যানিকেতনের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে নবম শ্রেণীর ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগী  ছাত্রী, অভিভাবক ও অন্য শিক্ষকরা শ্লীলতাহানির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

জানা যায়, গত ১১ জুলাই সকালে ভাষা শহীদ বিদ্যানিকেতনের সহকারী শিক্ষক সিরাজুল ইসলাম সিরাজের জয়নগর ওয়াবদা গেট সংলগ্ন বাড়িতে প্রাইভেট পড়তে যায় ওই ছাত্রী। সে সময় অন্য কেউ প্রাইভেট পড়তে না আসায় ওই শিক্ষক তাকে একা পেয়ে শ্লীলতাহানীর চেষ্টা করে। এ সময় সিরাজের স্ত্রী এসে পড়লে সিরাজ দ্রুত সটকে পড়ে। এরপর সিরাজের স্ত্রী উল্টো ওই ছাত্রীকেই বকাঝকা করেন। ওই ছাত্রী সেখান থেকে স্কুলে এসে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে এবং সহপাঠীদের কাছে বিষয়টি  খুলে বলে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষক বলেন, ‘১৩ জুলাই এ ঘটনাটি স্কুলে ছড়িয়ে পড়লে শিক্ষার্থীরা বিক্ষুদ্ধ হয়ে উঠে বিক্ষোভ করে। তারা মানববন্ধন করার চেষ্টা করলে প্রধান শিক্ষক তাদের ক্লাস থেকে বের হতে দেননি। প্রধান শিক্ষক বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।’

শ্লীলতাহানীর শিকার  ছাত্রী  বলে, ‘সিরাজ স্যার আমাকে একা পেয়ে শ্লীলতাহানির চেষ্টা করে। স্যারের এমন আচরণে আমি হতভম্ব। বিষয়টি স্কুলে জানাজানির হওয়ার পর প্রধান শিক্ষক আমার কাছ থেকে একটি লিখিত নিয়েছেন।’

ছাত্রীর বাবার সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘অভিযোগ নিয়ে প্রধান শিক্ষকের নিকট গিয়েছিলাম। তিনি বলেন, সামাজিক কিছু বিষয় রয়েছে। মেয়ের বিয়ে দিতে হবে। তাই বেশী হইচই করার দরকার নাই। আমি দেখবো বিষয়টি।’

প্রধান শিক্ষক মোক্তার হোসেন প্রথমে বলেন, ‘তেমন  কিছুই হয়নি।সামান্য কথা কাটাকাটি হয়েছে। আমরা বিষয়টা ঠিক করে নেবো।’ পরে তিনি বলেন, ‘সিরাজ এই স্কুলের খণ্ডকালীন শিক্ষক। অভিযোগ সত্য হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সেলিম আক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘প্রধান শিক্ষক আমাকে কিছুই জানাননি। আমি ওই বিদ্যালয় পরিদর্শন করে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলেছি।’

এ ব্যাপারে ওই স্কুলের সাবেক প্রধান শিক্ষক ও বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক এমদাদ হোসেন এই ঘটনাকে প্রধান শিক্ষকের  ধামাচাপা দেওয়ার প্রচেষ্টার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, ‘দ্রুত ওই শিক্ষককে বরখাস্ত এবং আইনে সোপর্দ করা উচিত।’

আরও পড়ুন: তিস্তার পানি বিপদসীমার ২৫ সে.মি. ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে

বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি ঈশ্বরদী উপজেলা শাখার সভাপতি জোমসেদ আলী ন্যাক্কারজনক এই ঘটনার জন্য সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

ইত্তেফাক/নূহু