শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

মোরেলগঞ্জে নতুন প্রজাতির পোকার আক্রমণে ৮ গ্রামের মানুষ আতঙ্কিত

আপডেট : ১৭ জুলাই ২০১৯, ১৬:৫৪

বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে এক নতুন প্রজাতির পোকার আক্রমণে ৮ গ্রামের মানুষ অতিষ্ট হয়ে উঠেছে। ঘরবাড়ি ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিচ্ছেন অনেকে। শিক্ষার্থীরা স্কুলে যেতে ভয় পাচ্ছে। গবাদী পশু ও পাখিরাও এ পোকার হাত রক্ষা পাচ্ছে না।

সরেজমিনে জানা গেছে, জিউধরা ইউনিয়নের বরইতলা, পাশখালি, বাইনতলা, বটতলা, লক্ষিখালী, সোনাতলা, বারইখালী ও ডুমুরিয়া গ্রামে গত এক সপ্তাহ ধরে বিছা সদৃশ কালো রংয়ের পোকার আভির্ভাব হয়েছে। প্রতিটি পোকা লম্বায় আড়াই ইঞ্চি। দেথতে অবিকল বিছে পোকার মতো হলেও তার গায় কোন কাটার মত আল নেই।

পোকাগুলো সাধারণত গেওয়া গাছ থেকে পাতা খেয়ে ঝাজরা করে গাছগুলোকে বিনষ্ট করছে। গেওয়া গাছের পাতা খাওয়া শেষ হলে বাবলা কিংবা অন্য প্রজাতির গাছে আশ্রয় নিয়ে পাতা সাবাড় করছে। গাছের পাতা না পেয়ে কয়েক হাজার পোকা ঢুকে পড়েছে লোকালয়ে ও বসতবাড়িতে।  মানুষকেও আক্রমণ করছে। গায়ে উঠলে সারা শরীর চুলকানি দেখা দেয় এবং ফুলে যায়।

এদিকে নাম না জানা এ পোকায় আক্রান্ত হয়ে অনেকে চিকিৎসা নিয়েছেন। তারা হলেন, বরইতলা গ্রামের সুফিয়া বেগম(৫০), সেলিমা বেগম (৩০), রাহিলা বেগম (৫২), রহিমন বেগম (৪০), ডুমুরিয়া গ্রামের শিক্ষার্থী সাগর শেখ (১৯), ইমন শেখ (১৬)। বাইনতালা গ্রামের এনামুল হাওলাদার (১৮), ফারুক বিশ্বাস (৬০), বরইতলা গ্রামের মো. শাহাজাহানসহ (৬০) ৮ গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ এ পোকার আক্রমণে আক্রান্ত হয়ে পড়েছে। এদের মধ্যে থেকে অনেকে বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র গিয়ে আশ্রয় নিয়েছে।

জিউধরা ইউনিয়ন উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম জানান, পোকা প্রতিরোধে সভা করা হয়েছে। পোকামুক্ত করার পাউডার দিয়ে স্প্রে করার নির্দেশ দেওয়ার পাশাপাশি গেওয়া গাছের ডাল-পালা কেটে দেওয়া, করাত মিলের তুষ ও কেরাসিন মিশিয়ে গাছে ছিটিয়ে দেওয়া, গরম তাপ দিয়ে ছ্যাকা দেওয়ার জন্য স্থানীয়দের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে । 

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাসুদ হোসেন পলাশ বলেন, ‘এ পোকাটি এ অঞ্চলের জন্য নতুন প্রজন্মের হতে পারে। তবে এটি জীবনচক্রে ৪টি স্তরে প্রথমে ডিম, ক্রীড়া, পুত্তল্লি ও পূর্ণবয়স্ক প্রজাপ্রতি আকারে হয়ে থাকে। অপ্রাপ্ত বয়সের সময় এ পোকার খাবারের চাহিদা থাকে বেশী। ভয় কিংবা আতঙ্কিত হওয়ার কোন কারণ নেই। ইতিমধ্যে এ পোকার নমুনা কৃষি গবেষণ ইনষ্টিটিউটে পাঠানো হয়েছে। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট কীটতত্ত্ববিদ ড. জুলফিকার ও ড. দেবাষিশ-এর পরামর্শ নেওয়া হয়েছে। 

আরও পড়ুন: বাহাদুরাবাদ ঘাটে বন্যার পানি বিপদসীমার ১৬৫ সেন্টিমিটার ওপরে

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান জানান, পোকার আক্রমণের খবর শুনে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাকে মাঠ পর্যায়ে খোঁজ খবর নিয়ে প্রতিরোধে ব্যবস্থা গ্রহনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে ঢাকা গাজীপুর কৃষি ইনস্টিটিউটে প্রাণী বিজ্ঞান বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলেছেন কর্মকর্তারা। প্রয়োজনে ঢাকা থেকে একটি প্রতিনিধি দল সরেজমিনে আসবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

ইত্তেফাক/নূহু