শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

চট্টগ্রামে গো-খাদ্যের সংকট কম দামে পশু বিক্রি

আপডেট : ২৪ জুলাই ২০১৯, ০৩:০৭

পশুখাদ্য নিয়ে চরম সংকটে পড়েছে চট্টগ্রামের বন্যাকবলিত এলাকার পশুপালনকারী কৃষক ও খামারিরা। বন্যার কারণে চারণভূমি, অনাবাদি জমি ও চাষের ঘাস নষ্ট হয়ে যাওয়ায় শুকনো খাদ্যের ওপর নির্ভরশীল হতে হচ্ছে। এ সময়ে পশুখাদ্যের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় কোরবানির পশু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন গ্রামের কৃষক ও খামারিরা। কোরবানির বাজারে বিক্রির আশায় সারা বছর ধরে গরু পালন করলেও খাদ্য সংকটের কারণে অনেক আগেই কম দামে গরু বিক্রি করে দিচ্ছেন তারা।


জেলা প্রশাসন ও জেলা প্রাণিসম্পদের তথ্যমতে, গত দুই সপ্তাহে চট্টগ্রামের বেশিরভাগ উপজেলা বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। তবে দীর্ঘদিন পানি জমে থাকায় বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সাঙ্গু নদী তীরবর্তী এলাকা সাতকানিয়া, চন্দনাইশ, লোহাগাড়া, আনোয়ারা, রাউজান, রাঙ্গুনিয়া ও বোয়ালখালী উপজেলা। এসব এলাকায় এবারের বন্যা গত তিন দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ রূপ ধারণ করে। এই বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কৃষকরা। সাঙ্গু নদী ও ডলু খালের পানি বিপত্সীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় এসব এলাকার ৮০ ভাগ মত্স্য খামার পানিতে ডুবে গেছে। কয়েকশ মুরগির খামারে পানি ঢুকে প্রায় ১৬ হাজার মুরগি মারা গেছে। তবে বন্যা পরবর্তী পশুখাদ্যের চরম সংকটের কারণে বেশি বিপাকে পড়েছে কোরবানি পশুপালনকারী কৃষক ও খামারিরা।

পুরো এলাকা প্লাবিত হওয়ায় গরু-ছাগল নিয়ে পানিতেই রাত কাটাতে হয়েছে এলাকার কৃষক ও খামারিদের।

দক্ষিণ চরতি এলাকার কৃষক মোহাম্মদ জোবায়ের ইত্তেফাককে বলেন, বড়ো-ছোটো মিলে আটটি গরু রয়েছে। গত দুই সপ্তাহ ধরে এই গরু নিয়ে বিপদের মধ্যে আছি। চর-বিল সব পানিতে ডুবে আছে। মাঠের সব ঘাস পচে-গলে নষ্ট হয়ে গেছে। চড়া দামে কুড়া-ভুসি কিনে গরুগুলোকে বাঁচিয়ে রেখেছি।

আরও পড়ুন: এখনো বন্যার্তরা বাড়ি ফিরতে পারছে না

চন্দনাইশের একজন কৃষক জানান, খাদ্য সংকটের কারণে গরুগুলোর শারীরিক অবস্থা দিন দিন খারাপ হচ্ছে। ফলে যে দুটি গরু কোরবানির বাজারে কমপক্ষে ২ লাখ টাকায় বিক্রির টার্গেট ছিল তা বিক্রি করতে হয়েছে ১ লাখ ৪০ হাজার টাকায়।

চট্টগ্রাম জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. রেয়াজুল হক জানান, দক্ষিণ চট্টগ্রামে বন্যায় পশু সম্পদে মারাত্মক নেতিবচাক প্রভাব পড়েছে। বন্যার পানিতে ১৬ হাজার মুরগি মারা গেছে। গরু-ছাগল মারা যাওয়ার ঘটনা না ঘটলেও তীব্র খাদ্য সংকটে রয়েছে। বিশেষ করে গোচারণভূমি এবং অনাবাদি জমির ঘাস নষ্ট হয়ে যাওয়ায় গো-খাদ্য নিয়ে বিপাকে পড়েছে কৃষক।

ইত্তেফাক/অনি