শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

মির্জাপুরে ডেঙ্গু আক্রান্ত ৬৩, প্রতি ঘণ্টায় বাড়ছে রোগী

আপডেট : ০২ আগস্ট ২০১৯, ১৬:১২

টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে কাটছে না ডেঙ্গু আতংক। দিন দিন রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। বিভিন্ন এরাকায় এ পর্যন্ত ৬৩ জন রোগী ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।

কুমুদিনী হাসপাতাল, বিভিন্ন বেসরকারী ক্লিনিক-হাসপাতাল রোগীদের পরীক্ষার পর ডেঙ্গু শনাক্ত করেছে। মির্জাপুর সরকারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডেঙ্গু রোগের পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য কোন ব্যবস্থা না থাকায় রোগীরা বিড়ম্বনা ও হয়রানীর শিকার হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন। রোগীদের মধ্যে কুমুদিনী উইমেন্স মেডিকেল কলেজের এক ছাত্রী এবং এক স্কুল শিক্ষক রয়েছেন।

কুমুদিনী হাসপাতাল ছাড়াও বিভিন্ন বেসরকারী ক্লিনিক-হাসপাতালে রোগী ও স্বজনদের উপচেপড়া ভিড় বেড়েছে। শুক্রবার বিভিন্ন এলাকা ও হাসপাতালে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা চলছে।

শুক্রবার উপজেলার মহেড়া, জামুর্কি, ফতেপুর, বানাইল, আনাইতারা, ওয়ার্শি, ভাদগ্রাম, ভাওড়া, বহুরিয়া, লতিফপুর, গোড়াই, আজগানা, তরফপুর ও আজগানা ইউনিয়ন এবং পৌরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে সবার মধ্যে ডেঙ্গু আতংক বিরাজ করছে। খুব জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ হাসপাতাল ও রাস্তায় বের হচ্ছে না।

কুমুদিনী হাসপাতালের চিকিৎসকগণ জানিয়েছেন, মশাবাহিত ডেঙ্গু জ্বর প্রথমে রাজধানী ঢাকায় দেখা দিলেও এখন মির্জাপুর এলাকার গ্রামে গ্রামে ছড়িয়ে পড়েছে। শুক্রবার পর্যন্ত ৬৩ জন রোগী ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে কুমুদিনী হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। কুমুদিনী হাসপাতালসহ বিভিন্ন ক্লিনিকে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর এসব রোগী শনাক্ত হয়েছে বলে চিকিৎসকগণ জানিয়েছেন।

কুমুদিনী হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্তদের বিভিন্ন ওয়ার্ডে মশারির ভিতরে রেখে নিবিড় পর্যবেক্ষণে চিকিৎসা চলছে। হাসপাতালের বহির্বিভাগ ও ভিতরে রোগী ও স্বজনদের উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে। আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসকদের। 

তবে চিকিৎসকগণ জানিয়েছেন ভর্তি রোগীদের বেশীরভাগ রোগী রাজধানী ঢাকা থেকে আসা। কুমুদিনী হাসপাতালে ৬৩ জন রোগীর মধ্যে অনেকে অন্যত্র চলে গেছে।

কুমুদিনী হাসপাতালের পরিচালক ডা. প্রদীপ কুমার রায় বলেন, কুমুদিনী হাসপাতালের পক্ষ থেকে রোগীদের সেবা দেওয়ার জন্য জরুরিভাবে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে হেলথ ইমাজেন্সি অপারেশন কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। এখানে রোগী ও তাদের স্বজনরা জরুরিভাবে তাৎক্ষণিক সেবা পাচ্ছেন। 

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা ডা. মো. শামীম হোসেন বলেন, ‘ডেঙ্গু প্রতিরোধের জন্য জনসচেতনা বাড়ানো হয়েছে। হাসপাতালের চিকিৎসক-নার্সগণ নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছেন। এখানে ডেঙ্গু রোগ শনাক্ত করার জন্য পরীক্ষার ব্যবস্থা নেই। তবে টাঙ্গাইল সদর হাসপাতালে বিনামূল্যে পরীক্ষা-নিরীক্ষার ব্যবস্থা রয়েছে। যারা মির্জাপুর সরকারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসছেন তাদের টাঙ্গাইল সদর হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে।’

আরও পড়ুন: চৌহালীতে ১১ জন ডেঙ্গু রোগী

মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আবদুল মালেক বলেন, ‘ডেঙ্গু রোগ প্রতিরোধের জন্য এবং মানুষ যাতে সুচিকিৎসা পান সেজন্য প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পাশাপাশি সরকারী হাসপাতালের চিকিৎসকদের সার্বক্ষণিক তদারকির ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে।’

ইত্তেফাক/নূহু