শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

গাজীপুরে স্ত্রীকে হত্যা করে ১৫ টুকরা, স্বামী গ্রেফতার

আপডেট : ১৫ আগস্ট ২০১৯, ০১:৫৩

গাজীপুরে স্ত্রীকে হত্যা করে ১৫ টুকরা করেছে এক পাষণ্ড ব্যক্তি। এই পৈশাচিক ঘটনা ঘটানো পর পালিয়ে যায় ঘাতক স্বামী। তবে মঙ্গলবার গভীর রাতে ঢাকার আশুলিয়া থানার কবিরপুর এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।


সোমবার ঈদের দিন রাতে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার আসপাড়া মোড় এলাকায় নইম উদ্দিনের ভাড়া বাড়ির একটি কক্ষের ড্রেসিং টেবিলের ভেতর থেকে পলিথিনে মোড়ানো সুমা আক্তার ওরফে সুমির (২৩) খণ্ডবিখণ্ড লাশ উদ্ধার করা হয়। স্ত্রীকে হত্যার পর ১৫ টুকরা করার কথা পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে ঘাতক স্বামী মামুন মিয়া।

গাজীপুরের পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার বুধবার বিকালে তার কার্যালয়ে এক প্রেসব্রিফিং-এ জানান, প্রায় দেড় বছর আগে মামুন মিয়ার সঙ্গে সুমি আক্তারের বিয়ে হয়। এটি ছিল উভয়েরই দ্বিতীয় বিয়ে। বিয়ের কয়েক মাস পর থেকেই তাদের মধ্যে কলহ দেখা দেয়। পারিবারিক কলহের কারণে এবং সুমির কাছে থাকা ৪০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার জন্যই মামুন গার্মেন্ট ছুটির দিনে বৃহস্পতিবার সুমিকে হত্যার পরিকল্পনা করে।

 

পরিকল্পনা মোতাবেক ৫ কেজি ও ২৫০ গ্রাম ধারণ ক্ষমতার পলিথিন, একটি চাকু, তিনটি ট্রাভেল ব্যাগ ও ঘুমের ওষুধ কিনে ঘরে রাখে মামুন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মামুন হালিমের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে রুটি দিয়ে স্ত্রীকে খাওয়ায়। পরে সুমি অচেতন হয়ে পড়লে দিবাগত রাত ১টার দিকে গলা চেপে ধরে শ্বাসরোধ করে সুমিকে হত্যা করে মামুন। এরপর ধারালো অস্ত্র দিয়ে স্ত্রীর দেহ ১৫ খণ্ড করে সে। এরপর পলিথিনে ৫ খণ্ড ভরে বসত ঘরের ড্রেসিং টেবিলের ড্রয়ারে রেখে দেয়। দেহের অবশিষ্ট ১০টি টুকরা দুটি বড় ট্রাভেল ব্যাগের ভেতরে ভরে শুক্রবার পার্শ্ববর্তী কাপাসিয়া উপজেলার সিংহশ্রী এলাকায় ব্রিজের নিচে শীতলক্ষ্যার শাখা নদীতে ফেলে দেয়। এদিন সুমি তার বাবাকে মোবাইল ফোনে জানিয়েছিল শুক্রবার তারা বাড়ি ফিরবেন। শুক্রবার মামুন আবার তার শাশুড়িকে জানায়, সে সুমিকে বাড়ির উদ্দেশ্যে গাড়িতে তুলে দিয়েছে। সে বিকালের মধ্যে বাড়িতে পৌঁছে যাবে। সুমি বাড়িতে না পৌঁছায় সুমির ছোট বোন বৃষ্টি ও তার স্বামী নবী হোসেন শনিবার শ্রীপুর উপজেলার আসপাড়া মোড় এলাকার সুমির ভাড়া বাসায় যান। বাসায় গিয়ে ঘর তালাবদ্ধ দেখে বাড়ির মালিক নইম উদ্দিনকে সঙ্গে নিয়ে ঘরের তালা ভেঙে ভেতরে ঢোকেন তারা। ঘরে কাউকে না পেয়ে ঘরে নতুন তালা আটকে চলে আসার সময় মামুনের সঙ্গে তাদের দেখা হয়। এসময় সুমির কথা জানতে চাইলে মামুন জানায়, সুমিকে বাড়িতে যাওয়ার জন্য গাড়িতে তুলে দিয়েছে সে। কিন্তু শনিবার ও রবিবারও সুমি বাড়িতে না ফিরলে বৃষ্টি বান্ধবী সাথী আক্তারকে নিয়ে আবার আসপাড়ার বাসায় যান। পরে তারা ঘরের তালা খুলে ভেতরে ঢুকলে দুর্গন্ধ পান এবং রক্ত দেখে ড্রেসিং টেবিলের ড্রয়ার খুলে পলিথিনে ভরা মাংসের খণ্ড দেখে বিষয়টি পুলিশকে জানান। পরে পুলিশ গিয়ে রাতে ওই মাংসের খণ্ড উদ্ধার করে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যালে পাঠায়।

আরও পড়ুন: ‘গেইল ঝড়’ দেখবে না ক্রিকেট বিশ্ব!

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই রাজীব কুমার সাহা জানান, সুমি নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলার দেবকান্দা গ্রামের নিজাম উদ্দিনের মেয়ে। তিনি শ্রীপুর উপজেলার গিলারচালা এলাকার সাবলাইম গ্রিনটেক নামের পোশাক কারখানার সুয়িং অপারেটর ছিলেন।

ইত্তেফাক/অনি