বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

বরগুনায় রিফাত হত্যা মামলার চার্জশিট হতে পারে আগামীকাল

আপডেট : ২১ আগস্ট ২০১৯, ২০:০৭

বরগুনার আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলার চার্জশিট হতে পারে আগামীকাল বৃহস্পতিবার। আদালতের পূর্ব নির্ধারিত তারিখ অনুযায়ী আগামীকাল এ মামলায় পুলিশের প্রতিবেদন দাখিলের কথা রয়েছে।

রিফাত হত্যা মামলার এজাহারভূক্ত ৪ আসামি গ্রেফতার না হলেও মামলার চার্জশিট দেওয়ার জন্য পুলিশের প্রস্তুতি চলছে। এ মামলায় এখন পর্যন্ত ১৫ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃত আসামিরা হচ্ছে, রিফাত ফরাজী, রিশান ফরাজী, চন্দন সরকার, রাব্বি আকন, হাসান, অলি, টিকটক হৃদয়, সাগর, কামরুল ইসলাম সাইমুন, আরিয়ান শ্রাবণ, রাফিউল ইসলাম রাব্বি, তানভীর, নাজমুল হাসান, রাতুল সিকদার ও আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি।

মামলার এজাহারভুক্ত ৫ নম্বর আসামি মুসা বন্ড, ৭ নম্বর আসামি মোহাইমিনুল ইসলাম সিফাত, ৮ নম্বর আসামি রায়হান ও ১০ নম্বর আসামি রিফাত হাওলাদারকে এখনও পুলিশ গ্রেফতার করতে পারেনি। প্রধান আসামি নয়ন বন্ড গত ২ জুলাই পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে।

গত ২৬ জুন সকালে প্রকাশ্যে বরগুনা সরকারি কলেজ গেটের সামনে রিফাতকে কুপিয়ে আহত করা হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় বরিশাল নেওয়ার পর তিনি মারা যায়। এ ঘটনায় রিফাতের বাবা আবদুল হালিম দুলাল শরীফ বাদী হয়ে ১২ জনকে আসামি করে বরগুনা থানায় হত্যা মামলা করেছে। আগামীকাল সকাল দশটায় বরগুনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম গাজীর আদালতে আসামিদের হাজির করা হবে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বরগুনার থানার পরিদর্শক মো. হুমায়ুন কবির জানান, তিনি প্রতিবেদন তৈরিতে দিনরাত কাজ করছেন। তবে আজই প্রতিবেদন দাখিল করবেন কি না, সুনির্দিষ্টভাবে তিনি সে বিষয়টি বলতে রাজী হননি।

গত ৩১ জুলাই তদন্তকারী কর্মকর্তার প্রতিবেদন দাখিলের কথা ছিলো। ওই তারিখে তিনি প্রতিবেদন দাখিল করতে পারেননি। পরের তারিখ ছিলো ১৪ আগস্ট। সেদিনও পুলিশ প্রতিবেদন দাখিল করতে পারেনি। তবে আজ বৃহস্পতিবার প্রতিবেদন দাখিল করা হতে পারে।

আয়শা সিদ্দিকা মিন্নির পক্ষের আইনজীবী এ্যাডভোকেট মাহাবুবুল বারী আসলাম জানান, রিফাত হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকা আসামিদের নাম উল্লেখ করে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা প্রতিবেদন করলে এবং বিচারক তা গ্রহণ করলে সেটিই চার্জশিট হিসেবে গণ্য হবে। 

মামলার প্রধান সাক্ষী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিকে গত ১৬ জুলাই সকালে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ লাইনে আনা হয়। দীর্ঘ ১১ ঘন্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর রাতে পুলিশ মিন্নিকে গ্রেফতার করে। পরেরদিন তাকে ৫ দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়। তার দুদিন পরে মিন্নিকে আদালতে হাজির করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়। 

গত ৩১ জুলাই ওই স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রত্যাহারের জন্য মিন্নি কারা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে বরগুনার জ্যেষ্ঠ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম গাজীর আদালতে আবেদন করেছেন। বিচারক তার আবেদন গ্রহণ করে নথিভূক্ত করেছেন।

মিন্নিকে গ্রেফতারের পরে বরগুনার পুলিশ সুপার মো. মারুফ হোসেন বলেছিলেন, রিফাত হত্যার পরিকল্পনার সঙ্গে মিন্নি জড়িত। পরবর্তীতে বলেছেন, হত্যাকারী অনেকের সঙ্গে মিন্নির আগে ও পরে কথা হয়েছে। হত্যার পরিকল্পনাকারী হিসেবে মিন্নির নাম চার্জশীটে যুক্ত হবে, এটা অনেকটা নিশ্চিত বলে ধারণা করছেন অভিজ্ঞমহল। 

এদিকে রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় তার স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিকে কেন জামিন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে এক সপ্তাহের রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে আগামী ২৮ আগস্ট মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে কেস ডকেট নিয়ে হাইকোর্টে হাজির হতে বলা হয়েছে। তাছাড়া মিন্নির সংশ্লিষ্টতার বিষয় জানিয়ে করা সংবাদ সম্মেলনের বিষয়ে পুলিশ সুপারকে লিখিত ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে। বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ মঙ্গলবার এ আদেশ দিয়েছেন। 

আরও পড়ুন: আইল্যান্ডে রাজশাহী ক্যাডেট কলেজের বাস

মিন্নিকে কখন গ্রেফতার করা হয়েছে, আদালতে নেওয়া হয়েছে, কোথায় কখন জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে এবং পুলিশ সুপার কবে তার সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন, তা সুস্পষ্টভাবে জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট।

ইত্তেফাক/নূহু